ভারত অর্থ না দেওয়ায় কুমিল্লায় সড়কের কাজ বন্ধ
Published: 5th, September 2025 GMT
কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া আঞ্চলিক মহাসড়ক দুই জেলার মানুষের প্রধান যাতায়াতের পথ। কিন্তু প্রায় দুই বছর ধরে সড়কের উন্নয়ন কাজ বন্ধ থাকায় সড়কটি এই অঞ্চলের মানুষের জন্য দুর্ভোগের কারণ হয়ে উঠেছে। সড়কের খানাখন্দ আর দীর্ঘ যানজট সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে।
আগে যেখানে কুমিল্লা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যেতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগত, এখন সময় লাগছে ৫ ঘণ্টারও বেশি। ফলে ছাত্রছাত্রী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী সবার সময়ের অপচয় হচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থাকতে হচ্ছে তাদের।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) জানায়, সড়কটি চার লেন ও দুই পাশে সার্ভিস লেন করার প্রকল্প ২০২২ সালে একনেকে অনুমোদন হয়। ৫৪ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ৪০ কিলোমিটার পড়েছে কুমিল্লা জেলায়। প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ৭ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা। বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ অর্থায়নে ২০২২ সালে কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল এবং ২০২৬ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ভারতের অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কাজ শুরু শেষ করা যায়নি। প্রকল্প ব্যবস্থাপক আশীষ মুখার্জি বলেন, ‘‘অধিগ্রহণের কাজ চলছে। তবে ভারত বিনিয়োগ করবে না বলে জানিয়েছে।’’
কুমিল্লা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘‘তহবিল সংকটে প্রকল্প থেমে আছে। তবে সরকার বিকল্প বিনিয়োগকারী খুঁজছে। এর মধ্যে মাঝারি মেয়াদে সংস্কার কাজ শুরু হবে।’’
দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনায় সড়কটি দুর্ঘটনার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। গত দুই বছরে শুধু কুমিল্লা অংশে ১০৭টি দুর্ঘটনায় ৯২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ অবস্থায় বাণিজ্যিক কার্যক্রমও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সময়মতো পণ্য সরবরাহ না হওয়ায় ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন। কৃষকরাও পণ্য বাজারে নিতে দেরি করছেন। শিক্ষার্থী ও রোগীদের জন্যও এই সড়ক এখন ভোগান্তির প্রতীক।
এদিকে দুরবস্থার প্রতিবাদে গত ২৭ আগস্ট স্থানীয়রা ময়নামতি থেকে কোম্পানীগঞ্জ পর্যন্ত ৯টি স্থানে অবরোধ করেন। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন তারা।
ঢাকা/রুবেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প সড়ক র ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর
শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক ফেনী শহরের ব্যস্ততম রাস্তা। এই সড়কের পাশেই শহরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা। একটু ভারী বৃষ্টিতেই ডুবে যায় সড়কটি। গত বছরের আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় সড়কের দুই কিলোমিটার অংশ কোমরপানিতে তলিয়ে ছিল পাঁচ দিন। এতে সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে খানাখন্দ তৈরি হয়। পানি নেমে যাওয়ার পর পাথর ও ইটের সুরকি দিয়ে অস্থায়ী মেরামত করা হলেও স্থায়ী সংস্কার হয়নি। এ বছর বর্ষায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় আরও বেহাল হয়েছে সড়কটির দশা। ছোট ছোট গর্তে ভরা এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলে ধীরগতিতে। ফলে সড়কে যানজট লেগেই থাকে।
পৌর শহরের এই প্রধান সড়কে তা–ও যানবাহন চলে কোনোরকমে। শহরের অলিগলি আর অভ্যন্তরীণ সড়কের দশা এর চেয়ে অনেক বেহাল। শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক থেকে একটু এগোলে হাসপাতাল মোড় থেকে সালাহ উদ্দিন মোড় পর্যন্ত যে সড়কটি রয়েছে, তাতে আগাগোড়াই বড় বড় খানাখন্দ। সড়কটির সাহেববাড়ি অংশে বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় ইট দিয়ে সাময়িক মেরামত করলেও ছোট-বড় গাড়ির চাকা সেসবকে স্থায়ী হতে দেয়নি। এটিসহ পৌরসভার ছোট-বড় প্রায় ৩০টির বেশি সড়ক এখনো বন্যার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে। ২০২৪ সালের বন্যার এক বছর পার হলেও ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর দৃশ্যমান কোনো সংস্কার হয়নি। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুত মেরামতের কাজ অচিরেই শুরু হবে।
একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।
সরেজমিন ঘুরে শহরের পাঠানবাড়ি সড়ক, মাস্টারপাড়া মুন্সিবাড়ি সড়ক, কদল গাজী সড়ক, বিরিঞ্চি প্রাইমারি স্কুল সড়ক, বিরিঞ্চি রতন সড়ক, সুলতানপুর আমির উদ্দিন সড়ক, গাজী ক্রস রোড, সুফি সদর উদ্দিন সড়ক, আবু বক্কর সড়ক, শহীদ ওবায়দুল হক সড়ক, মহিপাল চৌধুরী বাড়ি সড়ক, চাড়িপুর মৌলভী আব্দুস সালাম সড়ক, উত্তর চারিপুর বাইতুশ শরিফ সড়ক, পূর্ব বিজয় সিং ছোট হুদা দিঘি সড়ক, মধুপুর মালেক মিয়া বাজার সড়কের বেহাল দশা দেখা গেছে। সব মিলিয়ে ৩০টি সড়কের সব কটিই এখন বেহাল।
একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।ফেনী পৌরসভায় ইজিবাইক চালান সুজাউদ্দিন। ভাঙাচোরা সড়কের কারণে অন্য অনেকের চেয়ে তাঁকে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে জানিয়েছেন। ফেনীর শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে সম্প্রতি সুজাউদ্দিনের সঙ্গে দেখা হয়। কথায় কথায় তিনি বলেন, ছোট-বড় গর্ত থাকায় অতিরিক্ত ঝাঁকুনিতে প্রতিনিয়ত গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। অনেক সময় যাত্রীরা গাড়ি থেকে পড়ে যাওয়ার দশা হয়। রাস্তা খারাপ হওয়ায় ভাড়াও কমেছে তাঁর।
শাহিন একাডেমি এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহিম শহরের সড়কগুলোর ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সড়কের পাশে পর্যাপ্ত নালা নেই। এ কারণে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে। বাড়ির সামনের সড়কের এই হাল হলে আর কাজকর্ম করতে ইচ্ছা হয় না।
ফেনী পৌরসভার বিসিক–মুক্তার বাড়ি সড়কের মাঝে এমন বড় বড় খানাখন্দ