আওয়ামী লীগের এক নেতার পক্ষে নির্বাচনী প্রচার চালানোর অভিযোগে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার স্কুল শিক্ষক এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।

তিনি বারহাট্টা উপজেলার সাহতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত রয়েছেন। তিনি উপজেলার সাহতা ইউনিয়নের সফরবাংলা গ্রামের বাসিন্দা। 

আরো পড়ুন:

প্রধান শিক্ষকের ২১৬৯ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিলের দাবি

‘বাকৃবির আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করবেন জেলা প্রশাসক’

রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদ আজম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত আগস্টের শেষ দিকে এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এর আগে, ২০২৪ সালের মে মাসে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এক আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষে প্রচার চালানোর অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সরকারি চাকরিবিধি ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২১ মে বারহাট্টা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের আগে ১০ মে চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল কবির খোকনের পক্ষে প্রচার চালান শিক্ষক এরশাদ মিয়া। নির্বাচনী সভায় এরশাদ মিয়াকে দেখা যায়। প্রচার সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।

এ ঘটনায় সরকারি চাকরিবিধি ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ১৪ মে স্থানীয় শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।

তৎকালীন জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাফিকুজ্জামান অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। ওই সময় তদন্তকাজ আওয়ামী লীগ নেতাদের দিয়ে ধামাচাপা দেন অভিযুক্ত শিক্ষক।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই ঘটনায় চলতি বছরের ২২ এপ্রিল শিক্ষক এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন আশিফ উর রহমান নামে আরেক ব্যক্তি।

অভিযোগে বলা হয়, এরশাদ মিয়া শুধু একজন শিক্ষক নন, তিনি এলাকায় একটি প্রভাবশালী চক্র গড়ে তুলেছেন। তার বিরুদ্ধে সরকারি চাকরিবিধি ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাশাপাশি গ্রাম্য কলহ উসকে দেওয়া, গ্রামে সুদে টাকা লাগানো, অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা, লাঠিয়াল বাহিনী ব্যবহার করে সরকারি খাস জমি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি দখল করে ভোগদখল করা এবং নিয়মিত জুয়ার আসর বসান।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত ২২ মে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অভিযোগটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে জুলাই মাসে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। পরে আগস্টের শেষ সপ্তাহে শিক্ষক এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে কর্তৃপক্ষ।

তবে অভিযুক্ত শিক্ষক এরশাদ মিয়া তার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদ আজম বলেন, “অভিযোগ তদন্ত শেষে শিক্ষক এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) শুনানি রয়েছে। এগুলো বিভাগীয় মামলার প্রাক্রিয়া। সব প্রক্রিয়া শেষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/ইবাদ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক এরশ দ ম য় র ব র দ ধ কর মকর ত তদন ত উপজ ল আওয় ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুর তফসিল সোমবার 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রথম কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে।

রবিবার (২ নভেম্বর) চূড়ান্ত করা হবে নির্বাচনি আচরণবিধি এবং আগামীকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) ঘোষণা করা হবে নির্বাচনের তফসিল।

জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, “২৭ নভেম্বর নয়, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে জকসু নির্বাচন হবে। সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে ডিসেম্বরের ৮, ৯ বা ১০ তারিখ যাচাই করে দেখা হচ্ছে। যেহেতু ১৩ ডিসেম্বর ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে এবং ১১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ কর্মদিবস—সেক্ষেত্রে ১০ ডিসেম্বর বুধবার নির্বাচনের সম্ভাবনা বেশি।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এবারই প্রথম জকসু নির্বাচন। তাই প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগছে। অনেক ছাত্র সংগঠনও ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়, যাতে তারা প্রচারণা চালাতে পারে। তবে আমরা চাই, যত দ্রুত সম্ভব একটি উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজন করতে।”

অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, “ভোটার তালিকা, প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা, ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া—এসব খসড়া তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচনি  আচরণবিধিও প্রস্তুত করা হয়েছে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল অনুসরণ করে।” 

আজ সব কার্যকর ছাত্র সংগঠন, সাংবাদিক প্রতিনিধি ও নির্বাচনের অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করে আচরণবিধি চূড়ান্ত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “কেউ যেন দ্বিমত না করে, সেটিই আমাদের লক্ষ্য। আচরণবিধি চূড়ান্ত হলেই সোমবার বা মঙ্গলবার তফসিল ঘোষণা করব।” 

ছাত্রদলের সম্পাদকীয় ও সদস্য পদ বৃদ্ধির দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “জকসুর সংবিধি পাস হয়ে গেছে। এখন এটি সংশোধন করতে হলে একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট, ইউজিসি, মন্ত্রণালয় এবং রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লাগবে—এটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। তাই নতুন করে সংযোজনের সুযোগ নেই।”

তিনি আরো বলেন, “আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, সেটা স্বীকার করছি। তবে আমরা চাই, সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে। অন্যান্য ক্যাম্পাসের তুলনায় জবির ছাত্র সংগঠনগুলো অনেক ঐক্যবদ্ধ। তাদের সহযোগিতা পেলে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই হবে জকসু নির্বাচন।”

অধ্যাপক মোস্তফা হাসান আশা প্রকাশ করে বলেন,  “২০ বছর পর প্রথম জকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে। আমরা চাই, জবির এই নির্বাচন সারা দেশে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকুক।”

ঢাকা/লিমন ইসলাম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসুতে এআই ব্যবহারে থাকবে শিথিলতা, তবে অপব্যবহার করা যাবে না: নির্বাচন কমিশন
  • জকসুর তফসিল সোমবার