আ.লীগ নেতার নির্বাচনী প্রচার: স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা
Published: 7th, September 2025 GMT
আওয়ামী লীগের এক নেতার পক্ষে নির্বাচনী প্রচার চালানোর অভিযোগে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার স্কুল শিক্ষক এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।
তিনি বারহাট্টা উপজেলার সাহতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত রয়েছেন। তিনি উপজেলার সাহতা ইউনিয়নের সফরবাংলা গ্রামের বাসিন্দা।
আরো পড়ুন:
প্রধান শিক্ষকের ২১৬৯ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিলের দাবি
‘বাকৃবির আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করবেন জেলা প্রশাসক’
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদ আজম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত আগস্টের শেষ দিকে এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এর আগে, ২০২৪ সালের মে মাসে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এক আওয়ামী লীগ নেতার পক্ষে প্রচার চালানোর অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সরকারি চাকরিবিধি ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করে কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ২১ মে বারহাট্টা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের আগে ১০ মে চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল কবির খোকনের পক্ষে প্রচার চালান শিক্ষক এরশাদ মিয়া। নির্বাচনী সভায় এরশাদ মিয়াকে দেখা যায়। প্রচার সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
এ ঘটনায় সরকারি চাকরিবিধি ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ১৪ মে স্থানীয় শফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেন।
তৎকালীন জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাফিকুজ্জামান অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। ওই সময় তদন্তকাজ আওয়ামী লীগ নেতাদের দিয়ে ধামাচাপা দেন অভিযুক্ত শিক্ষক।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ওই ঘটনায় চলতি বছরের ২২ এপ্রিল শিক্ষক এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন আশিফ উর রহমান নামে আরেক ব্যক্তি।
অভিযোগে বলা হয়, এরশাদ মিয়া শুধু একজন শিক্ষক নন, তিনি এলাকায় একটি প্রভাবশালী চক্র গড়ে তুলেছেন। তার বিরুদ্ধে সরকারি চাকরিবিধি ও নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাশাপাশি গ্রাম্য কলহ উসকে দেওয়া, গ্রামে সুদে টাকা লাগানো, অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা, লাঠিয়াল বাহিনী ব্যবহার করে সরকারি খাস জমি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি দখল করে ভোগদখল করা এবং নিয়মিত জুয়ার আসর বসান।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গত ২২ মে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অভিযোগটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে জুলাই মাসে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। পরে আগস্টের শেষ সপ্তাহে শিক্ষক এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করে কর্তৃপক্ষ।
তবে অভিযুক্ত শিক্ষক এরশাদ মিয়া তার বিরুদ্ধে করা সব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদ আজম বলেন, “অভিযোগ তদন্ত শেষে শিক্ষক এরশাদ মিয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) শুনানি রয়েছে। এগুলো বিভাগীয় মামলার প্রাক্রিয়া। সব প্রক্রিয়া শেষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/ইবাদ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক এরশ দ ম য় র ব র দ ধ কর মকর ত তদন ত উপজ ল আওয় ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মনোনয়নপত্র নিতে এসে স্লোগান, আচরণবিধি ভাঙলেন এক শিক্ষার্থী
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) মনোনয়নপত্র নিতে এসে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। তাঁর নাম সালমান রহমান। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে চাকসুর কার্যনির্বাহী সদস্যপদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তিনি।
নির্বাচনী আচরণবিধি–২ এর ক অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না।
সরেজমিনে দেখা যায়, সালমান রহমান ৮ থেকে ১০ জন সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে আসেন। মনোনয়নপত্র নেওয়ার পর চাকসু ভবনের ভেতরেই সালমানের নাম ধরে স্লোগান দেন সমর্থকেরা। স্লোগান দিতে দিতে চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে নিচে নামেন তাঁরা। এ সময় সালমান রহমান সবার মাঝখানেই ছিলেন। তাঁকে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা যায়।
আচরণবিধি ভাঙার বিষয়টি স্বীকার করে সালমান রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে লড়বেন। তাঁর সমর্থকেরা না বুঝে স্লোগান দিয়েছেন। এ ধরনের ভুল আর হবে না।
জানতে চাইলে চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এসব বিষয় দেখভালের জন্য চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আগামী ১২ অক্টোবর চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবার মোট ভোটার ২৭ হাজার ৬৩৭ জন। গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়নপত্র বিতরণ। আজ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার শেষ দিন।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মনোনয়নপত্র বুধবার পর্যন্ত জমা দেওয়া যাবে। যাচাই-বাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশিত হবে ২১ সেপ্টেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।