ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের উদ্দেশ্যে ‘লাস্ট ওয়ার্নিং’ বা ‘শেষ সতর্কতা’ জারি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সতর্কবার্তায় তিনি হামাসকে গাজা থেকে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার চুক্তিতে রাজি হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

আরো পড়ুন:

টিএসএমসির চীনে প্রযুক্তি রপ্তানির লাইসেন্স বাতিল করল যুক্তরাষ্ট্র

রাশিয়া-ইউক্রেনের বাফার জোনে বাংলাদেশি ও সৌদি সেনা মোতায়েনের চিন্তা

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, “ইসরায়েল আমার শর্ত মেনে নিয়েছে। এবার হামাসকেও মানতে হবে। আমি হামাসকে সতর্ক করেছি, শর্ত না মানলে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।”

মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, “এটি আমার শেষ সতর্কীকরণ, আর কোনো সতর্কীকরণ থাকবে না!”

এর আগে গত মার্চ মাসের শুরুর দিকে একই ধরনের সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ওই সময় তিনি হামাসের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, “সব জিম্মিদের এখনই মুক্তি দিতে হবে, পরে নয়। যাদের হত্যা করেছেন তাদের সবার মরদেহ অবলিম্বে ফিরিয়ে দিতে হবে, অন্যথায় সবকিছু শেষ। এটি আপনাদের জন্য শেষ সতর্কতা! (হামাসের) নেতৃত্বের জন্য এখন সময় এসেছে গাজা ত্যাগ করার। আপনাদের জন্য এখনও এই সুযোগটি রয়েছে।”

ট্রাম্পের সর্বশেষ সতর্কবার্তার পর হামাস এক বিবৃতিতে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, “যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু প্রস্তাব অনুসরণ করে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে আলোচনার টেবিলে বসতে প্রস্তুত।” 

গতকাল রবিবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, “গাজা নিয়ে খুব শিগগির একটি চুক্তি হবে।”

গাজায় এখনও বন্দী থাকা ৪৮ জন জিম্মির মধ্যে ২০ জন জীবিত আছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

ইসরায়েলের নাগরিক সংগঠন ‘হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম’ ট্রাম্পের সর্বশেষ হস্তক্ষেপকে ‘একটি সত্যিকারের অগ্রগতি’ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে।

এদিকে ইসরায়েলের তীব্র আগ্রাসনে গাজার মানবিক পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হয়ে উঠছে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। শনিবার শত শত মানুষ ইসরায়েলের রাস্তায় নেমে সরকারকে গাজা সিটি দখলের অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের আশঙ্কা, ওই শহরেই জিম্মিদের রাখা হতে পারে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ২১৯ জন নিহত হন। এর জবাবে ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৬৪ হাজার ৩৬৮ জন নিহত হয়েছেন বলে হামাসনিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র ইসর য় ল শ ষ সতর ক ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত