নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে পৃথক দুটি অভিযানে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও নৌ-ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিদেশি পিস্তল, গুলি, মাদক, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিশেষ নৌকা ও বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

সোমাবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আদমজীস্থ র‌্যাব-১১'র সদর দপ্তরের অধিনায়ক লে. কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

এর আগে রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে সোনারগাঁওয়ের পেরাব এলাকা থেকে শীর্ষ সন্ত্রাসী শুটার মাসুদকে (২৮) গ্রেপ্তার করা হয়। অন্যদিকে একই রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লার তিতাস এলাকা থেকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় পুলিশ ক্যাম্পে হামলার ঘটনায় জড়িত মেঘনার শীর্ষ নৌ-ডাকাত আক্তার সরকারকে আটক করা হয়।

র‌্যাব জানায়, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও সোনারগাঁও এলাকায় শুটার মাসুদ নামে এক সন্ত্রাসী দীর্ঘদিন ধরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছিল। তিনি অস্ত্রের শোডাউন দেখিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করতেন এবং সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, লুটপাট ও মাদক ব্যবসা পরিচালনা করতেন।

গত ২৭ জুলাই সোনারগাঁও থানার নোয়াদ্দা বাবুবাজার এলাকায় রাকিব (২৫) নামের এক কাপড় ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। ফুটেজে দেখা যায়, শুটার মাসুদ গুলি করে রাকিবকে হত্যার পর ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র হাতে চলে যাচ্ছেন।

র‌্যাব-১১ এর সদর দপ্তরের অধিনায়ক লে.

কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে অভিযান চালিয়ে শুটার মাসুদকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, ছয় রাউন্ড গুলি, দুই বোতল বিদেশি মদ এবং ৫৮ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

শুটার মাসুদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় মোট সাতটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, নাশকতা, ডাকাতি ও মাদক মামলা। সম্প্রতি গত ৩ সেপ্টেম্বর একই গ্রুপের আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী শুটার রিয়াজকে সিলেটের গোয়াইনঘাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

অন্যদিকে রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লার তিতাস থানা এলাকা থেকে মেঘনার শীর্ষ নৌ-ডাকাত আক্তার সরকারকে (৫০) গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২৫ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানার পুলিশ ও গুয়াগাছিয়া অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা মেঘনা নদীতে অভিযান চালাতে গেলে ৪০ থেকে ৫০ জনের একটি ডাকাতদল চার থেকে পাঁচটি হাইস্পিড ট্রলারে করে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।

স্থানীয়দের বরাতে জানা যায়, নয়ন, পিয়াস ও আক্তার সরকারের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় নদীপথে চাঁদাবাজি, অবৈধ বালু উত্তোলন এবং ডাকাতি করে আসছিল। তাদের ভয়ে শতাধিক পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে ছিল।

পরে আক্তার সরকারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত আড়াইটার দিকে কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার মোল্লাকান্দি এলাকায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ ক্যাম্পে হামলায় ব্যবহৃত বিশেষ ইঞ্জিনচালিত নৌকা, পাঁচটি পিতলের নৌকার পাখা, দুটি চুম্বক, একটি বাইনোকুলার, একটি ছোরা এবং অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করে র‌্যাব।

র‌্যাব জানায়, আক্তার সরকারের বিরুদ্ধে মোট ২৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চারটি হত্যা, ১৪টি হত্যাচেষ্টা, দুটি ডাকাতি, একটি অপহরণ, একটি চাঁদাবাজি, চারটি বিস্ফোরক এবং একটি মাদক মামলা।

এর আগে গত ২৮ আগস্ট ও ৩ সেপ্টেম্বর পৃথক দুটি অভিযানে র‌্যাব-১১ এই হামলার সঙ্গে জড়িত আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার হওয়া দুই আসামিকে আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

অভিযানে অংশ নেওয়া র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, শুটার মাসুদ ও আক্তার সরকারের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসবে। পাশাপাশি মেঘনায় ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমনেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ গ র প ত র কর ন র য়ণগঞ জ স প ট ম বর সন ত র স য ব ১১ এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

সুজন নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যকরী কমিটির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত 

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যকরী কমিটির   ২০২৪ -২০২৬  প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার বিকালে সংগঠনের সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েলে’র  সভাপতিত্বে এবং  সাধারণ সম্পাদক আশু আশরাফুলের সঞ্চালনায় আলী আহমদ চুনকা নগর পাঠাগারে প্রানবন্ত এবং আনন্দমুখর পরিবেশে  এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত আলোচনা সভায় উক্ত কমিটির ভবিষ্যৎ কার্যক্রমের বিভিন্ন বিষয়ে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। আলোচ্য বিষয়সমূহের মধ্যে যে সকল সিন্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো জেলা কমিটির সদস্য সংগ্রহ,উপজেলা কমিটি গঠন,আঞ্চলিক সমস্যার মধ্যে যানজট নিরসন, জলাবদ্ধতা নিরসন,শব্দ দূষণ,  বায়ু দূষণ ও নদী দূষণ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধিতে  বিশেষ ভূমিকা পালন করা সহ আরো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। 

সুজন এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সভাপতির নেতৃত্বে ১২ নভেম্বর সুজনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী যথাযথভাবে ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে  পালন করা হবে।  সকাল ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হতে শোভাযাত্রা এবং  র‌্যালী অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তীতে কেক কাটার মধ্যে দিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান শুরু হবে। এই সময় সুজনের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শাহিদুল ইসলাম টিটু, সহ-সভাপতি এম আর হায়দার রানা, অর্থ সম্পাদক রাজলক্ষ্মী, সদস্য এস এম জহিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, সহ কমিটির আরো নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। ‘

আলোচনা শেষে সভাপতি, সকলের সু স্বাস্থ্য কামনা করে অনুষ্ঠান সমাপ্তি  ঘোষনা করেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সোনারগাঁয়ের কাইকারটেক হাটে নির্বাচনী প্রচারণায় মামুন মাহমুদ 
  • রূপগঞ্জে ইসলামী আন্দোলনের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
  • তারুণ্যের চোখে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার
  • বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন না’গঞ্জ জেলা আঞ্চলিক কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত
  • নির্বাচন আসলেই ধর্মকে ব্যবহারের চেষ্টা দেখা যায় : সালাহউদ্দিন আহমেদ
  • ফতুল্লায় গভীর রাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মশাল মিছিল, আটক ৫
  • নারীর মর্যাদা সুরক্ষা ও ক্ষমতায়নে সিদ্ধিরগঞ্জে মহিলাদলের উঠান বৈঠক
  • সাংবাদিক শাওনের মায়ের মৃত্যুতে বন্দর পেশাদার সাংবাদিক ফোরামের শোক
  • আজাদের নির্দেশে বিশনন্দী ইউনিয়নে ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ
  • সুজন নারায়ণগঞ্জ জেলা কার্যকরী কমিটির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত