মেয়েকে উত্তরসূরি করার সিদ্ধান্ত দৃঢ় করেছেন কিম জং উন
Published: 11th, September 2025 GMT
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন তার মেয়ে কিম জু এই-কে উত্তরসূরি করার সিদ্ধান্ত দৃঢ় করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। চীন সফরে মেয়েকে সঙ্গে রাখার পর বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার আইনপ্রণেতারা দেশটির গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে জানিয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদীয় গোয়েন্দা কমিটির আইনপ্রণেতা লি সিওং-কুয়েন বলেছেন, জু এই-কে উত্তর কোরিয়ার দূতাবাসে থাকতে হয়েছিল এবং বেইজিং সফরের সময় জনসাধারণের নজর এড়িয়ে যেতে হয়েছিল। তবে তার বাবার সাথে বিদেশ ভ্রমণে থাকাই শাসকগোষ্ঠীর সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে ‘আখ্যান তৈরির জন্য যথেষ্ট।’
কমিটির আরেক আইনপ্রণেতা পার্ক সান-ওন বলেন, “কমিটির সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে কিম জু এই-কে মাঝে মাঝে দেখানোর মাধ্যমে তার মর্যাদা দৃঢ় করার ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে। তাকে বিদেশে অভিজ্ঞতা তৈরি করতে সক্ষম করা হচ্ছে কিন্তু জনসাধারণের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে দেওয়া হয় না।”
চীন সফরের সময় কিম এবং তার মেয়ের জৈবিক তথ্য প্রকাশ না করার জন্য উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তাদের চিহ্ন মুছে ফেলতে দেখা গেছে। এর মধ্যে আবর্জনা পরিবহনের জন্য একটি বিশেষ বিমান ব্যবহার করা এবং তাদের উত্তর কোরিয়ার দূতাবাসে অবস্থান করা অন্তর্ভুক্ত ছিল।
চলতি মাসের শুরুতে কিম জং উন বহুপাক্ষিক সমাবেশের জন্য বেইজিংয়ে বিরল সফর করেন। সেখানে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একটি সামরিক কুচকাওয়াজ দেখেন।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার প্রধান উপদেষ্টার
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অবাধ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। আজ বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য (এমইপি) মুনির সাতোরির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
প্রতিনিধিদলকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যেই নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণা করেছি। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ফেব্রুয়ারির শুরুতে, রমজানের ঠিক আগে।’ তিনি উল্লেখ করেন, জনসাধারণ, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে নির্বাচনী উৎসাহ বাড়ছে। কারণ, দীর্ঘদিন পর কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দশকের বেশি সময় পর ছাত্র সংসদ নির্বাচন আবার শুরু হয়েছে।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর।’ তিনি বলেন, কিছু শক্তি এখনো নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে, তবে অন্তর্বর্তী সরকার নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
প্রধান উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করেন, তরুণ ভোটাররা এবার রেকর্ড সংখ্যায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। কারণ, ১৫ বছরের বেশি সময় পর অনেকেই প্রথমবারের মতো ভোট দেবেন। তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য এক নতুন সূচনা বয়ে আনবে। এটি আমাদের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে—জাতির জন্য এক নতুন যাত্রা।’
ঘণ্টাব্যাপী আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টা ও ইউরোপীয় আইনপ্রণেতারা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক রূপান্তরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অব্যাহত সমর্থন ও চলমান রোহিঙ্গা মানবিক সংকট নিয়ে মতবিনিময় করেন।
আগামী নির্বাচন বাংলাদেশে এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন ইউরোপীয় আইনপ্রণেতারা। এক আইনপ্রণেতা প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সরকারের গত ১৪ মাসের ‘অসাধারণ’ প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।
এক ডাচ আইনপ্রণেতা মন্তব্য করেন, বাংলাদেশ কতিপয় দেশের মধ্যে অন্যতম, যেখানে ‘ঘটনাগুলো সঠিক পথে এগোচ্ছে।’
প্রধান উপদেষ্টা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত এক মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য বাড়তি তহবিল প্রদানের আহ্বান জানান।
বিশেষ করে সম্প্রতি অর্থাভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের স্কুলগুলো আবার চালু করতে সহায়তা প্রদানের অনুরোধ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত গুরুত্বপূর্ণ শ্রম সংস্কারগুলো তুলে ধরে বলেন, এসব পদক্ষেপ বাংলাদেশ–ইইউ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।