পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে শুরু হয়েছে চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক টেক্সটাইল প্রদর্শনী। টেক্সটাইল সিরিজ অব এক্সিবিশনের বাংলাদেশ সংস্করণ হিসেবে একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হচ্ছে তিনটি বড় মেলা।

সেগুলো হলো ২৪তম টেক্সটেক বাংলাদেশ ২০২৫ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো, ২৪তম ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইয়ার্ন অ্যান্ড ফেব্রিক শো (সামার এডিশন), ৪৮তম ডাই-কেম বাংলাদেশ ২০২৫ ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো। 

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) থেকে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) চার দিনব্যাপী প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে এ আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীগুলো অনুষ্ঠিত হবে। 

শুক্রবার বিকেলে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড.

মোখলেস উর রহমান। 

অনুষ্ঠানের আয়োজক প্রতিষ্ঠান সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিকের প্রেসিডেন্ট ও গ্রুপ ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেহেরুন এন. ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালযয়ের মহাপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম, বিসিক চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক-১ (যুগ্ম সচিব) বেবী রানি কর্মকার, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. মুজিব-উল-ফেরদৌস, বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম ও বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান প্রমুখ।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান বলেন, এই আয়োজন শুধু প্রদর্শনী নয়, বরং বাংলাদেশের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন। এটি আমাদের গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পকে বিশ্বদরবারে আরও শক্তিশালীভাবে উপস্থাপন করবে।

একদিকে যেমন দেশের বিভিন্ন খাতে অগ্রযাত্রা তুলে ধরা হবে, অন্যদিকে নতুন প্রজন্মের মাঝে উৎসাহ, আত্মবিশ্বাস ও উদ্ভাবনী চিন্তার জন্ম দেবে। উন্নত বাংলাদেশ গঠনের অভিযাত্রায় এই এক্সপো একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। অর্থপাচার ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কড়া নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। 

এসময় আয়োজক প্রতিষ্ঠান সেমস- গ্লোবাল ইউএসএ অ্যান্ড এশিয়া প্যাসিফিকের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মেহেরুন এন.ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে প্রদর্শনীগুলো আয়োজনের নানা বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই তিনটি প্রদর্শনী বাংলাদেশের গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পের বৃহত্তম ও প্রথম আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী।

বিগত ২৩ বছরের ধারাবাহিকতায় এ বছর ২৪তম বার এটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এসব প্রদর্শনী ক্রেতা ও সরবরাহকারীদের জন্য বৃহত্তম মিলনমেলা। প্রদর্শনীগুলো দেশি ও বিদেশি সরবরাহকারী, ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সর্ববৃহৎ মিলনমেলা হওয়ায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের দেশের বাইরে গিয়ে ক্রেতা অনুসন্ধান বা ভিসা জটিলতা পোহাতে হচ্ছে না।

বরং অর্থ, শ্রম ও সময়ের সাশ্রয় করে গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্প সংশ্লিষ্ট ক্রেতা ও সরবরাহকারীরা এক ছাদের নিচে একত্র হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন।

এ প্রদর্শনীগুলো সেমস-গ্লোবাল ইউএসএ আয়োজিত টেক্সটাইল সিরিজ অব এক্সিবিশনের অংশ। প্রতিবছর বাংলাদেশ, ব্রাজিল, মরক্কো, থাইল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত হয়। টেক্সটাইল সিরিজ অব এক্সিবিশন ইতিমধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পের অগ্রগতিতে বড় ভূমিকা পালন করছে। প্রদর্শনীগুলোতে ২ হাজার ২৪৫টির বেশি বুথসহ ৩৭টি দেশের প্রায় ১ হাজার ৪৭৫টিরও বেশি কোম্পানি অংশগ্রহণ করছেন।  

পূর্বাচলে চলমান আন্তর্জাতিক এ প্রদর্শনীগুলোতে টেক্সটাইল ও অ্যাপারেল মেশিনারি, ইয়ার্ন, ফেব্রিক, ট্রিমস, অ্যাকসেসরিজ, ডাইস্টাফ, টেক্সটাইল রাসায়নিকসহ সর্বাধুনিক টেক্সটাইল পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে।

এবারের টেক্সটাইল সিরিজ অব এক্সিবিশনের বাংলাদেশ সংস্করণের উল্লেখযোগ্য সংযোজন হলো সাসটেইনেবিলিটি জোন, যেখানে অংশগ্রহণ করছে বিওয়াইটিইএস প্রজেক্ট অব সুইস কনটাক্ট, রিসাইকেল রো, স্কিউব টেকনোলজিস লিমিটেড ও প্রগতি বিল্ডিং ম্যাটেরিয়ালস (প্রাইভেট) লিমিটেড। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জন এবং আন্তর্জাতিক মানের শিল্পক্ষেত্র তৈরিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে এটি। পাশাপাশি প্রদর্শনী চলাকালীন গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্প বিষয়ক চারটি আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ অন ষ ঠ ত ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

তুরস্কের সঙ্গে উত্তেজনা: সাইপ্রাসকে ‘এস–৩০০’–এর চেয়েও ভয়ংকর ‘বারাক এমএক্স’ দিল ইসরায়েল

সাইপ্রাসে গত সপ্তাহে উন্নতমানের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সরবরাহ করেছে ইসরায়েল। গত ডিসেম্বর থেকে এ ধরনের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার তৃতীয় চালান এটি। তুরস্কের সঙ্গে ক্রমে উত্তেজনা বেড়ে চলার মধ্যে সাইপ্রাসকে এ ব্যবস্থায় সজ্জিত করল ইসরায়েল। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত একাধিক সূত্র মিডল ইস্ট আইকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, লিমাসলের বন্দর দিয়ে একটি ট্রাক ‘বারাক এমএক্স’ ব্যবস্থার বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নিয়ে যাচ্ছে। এ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ১৫০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

সাইপ্রাসের সংবাদমাধ্যম রিপোর্টার জানিয়েছে, বারাক এমএক্স ব্যবস্থার সরবরাহ এখন সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরই এটি আকাশ প্রতিরক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

এই সরবরাহের আগে গত জুলাইয়ে ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের (আইএআই) বহিঃসম্পর্ক বিভাগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট শাই গাল একটি নিবন্ধে লিখেছিলেন, ইসরায়েলের উচিত সাইপ্রাস নীতি পুনর্বিবেচনা করা এবং সামরিক পরিকল্পনা তৈরি করা; যাতে এ দ্বীপের উত্তরাঞ্চলকে তুর্কি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে ‘মুক্ত’ করা যায়। বারাক এমএক্স তৈরি করেছে ইসরায়েলি সংস্থাটি।

আরও পড়ুনইসরায়েলের আগ্রাসন কীভাবে মোকাবিলা করবে তুরস্ক৩০ আগস্ট ২০২৫

গাল লিখেছিলেন, ‘ইসরায়েলকে গ্রিস ও সাইপ্রাসের সঙ্গে সমন্বয় করে এ দ্বীপের উত্তর অংশ মুক্ত করার বিকল্প পরিকল্পনা করতে হবে। এতে তুরস্কের পুনরায় সেনা পাঠানোর পথ বন্ধ হবে, উত্তর সাইপ্রাসের বিমান প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস হবে, গোয়েন্দা ও কমান্ড সেন্টারগুলো গুঁড়িয়ে যাবে এবং শেষ পর্যন্ত তুর্কি বাহিনী সরে যাবে। এর মাধ্যমে সাইপ্রাসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।’

গ্রিসের সঙ্গে একীভূত করার লক্ষ্য নিয়ে সাইপ্রাসে এক অভ্যুত্থানচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর ১৯৭৪ সালে সেখানে আক্রমণ চালায় তুরস্ক। সেই থেকে দ্বীপটি দুই ভাগে বিভক্ত—দক্ষিণে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সাইপ্রাস প্রজাতন্ত্র ও উত্তরে তুরস্ক-সমর্থিত উত্তর সাইপ্রাস, যা শুধু আঙ্কারার স্বীকৃত।

এই সরবরাহের আগে গত জুলাইয়ে ইসরায়েল অ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজের (আইএআই) সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট শাই গাল একটি নিবন্ধে লিখেছিলেন, ইসরায়েলের উচিত সাইপ্রাস নীতি পুনর্বিবেচনা করা এবং সামরিক পরিকল্পনা তৈরি করা; যাতে এ দ্বীপের উত্তরাঞ্চলকে তুর্কি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ থেকে ‘মুক্ত’ করা যায়।

এখন পর্যন্ত আঙ্কারা নতুন প্রতিরক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে বারাক এমএক্সে রয়েছে উন্নত নজরদারি ও গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ক্ষমতা। এর থ্রিডি রাডার সর্বোচ্চ ৪৬০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত কার্যকর, যা দক্ষিণ তুরস্কের একটি বড় অংশের আকাশসীমা আয়ত্তে আনতে পারে।

আরও পড়ুনইসরায়েল ও তুরস্ক কখন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বে?২৪ জানুয়ারি ২০২৫

১৯৯৭ সালে দক্ষিণ সাইপ্রাস রাশিয়ার তৈরি দুটি এস–৩০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা কেনার চেষ্টা করলে তুরস্কের সঙ্গে তার যুদ্ধ বাধার উপক্রম হয়। সে সময় আঙ্কারা পুরোদমে সামরিক জবাব দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে সে সংকট মেটে গ্রিস ওই ক্ষেপণাস্ত্র নিজেদের ভূখণ্ডে নিয়ে গেলে ও সাইপ্রাস বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজতে শুরু করলে।

এ ব্যবস্থা এস-৩০০ থেকেও অনেক বেশি বিপজ্জনক। ১৯৯৭ সালে রাশিয়া থেকে সাইপ্রাস যে এস-৩০০ অর্ডার দিয়েছিল, তা কখনো মোতায়েন করা হয়নি। ইসরায়েল ও গ্রিসের সঙ্গে সাইপ্রাসের বর্তমান সামরিক ঘনিষ্ঠতার কারণে এ শক্তিশালী প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও রাডার পূর্ব ভূমধ্যসাগরে ইসরায়েলের গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে।আরদা মেভলুতোগলু, তুরস্কের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক

তুরস্কের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক আরদা মেভলুতোগলু বলেন, এই ব্যবস্থা এস–৩০০ থেকেও অনেক বেশি বিপজ্জনক। ১৯৯৭ সালে রাশিয়া থেকে সাইপ্রাস যে এস–৩০০ অর্ডার দিয়েছিল, তা কখনো মোতায়েন করা হয়নি। ইসরায়েল ও গ্রিসের সঙ্গে সাইপ্রাসের বর্তমান সামরিক ঘনিষ্ঠতার কারণে এ শক্তিশালী প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ও রাডার পূর্ব ভূমধ্যসাগরে ইসরায়েলের গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে।

ইসরায়েলের আশদোদে আইএআই বারাক এমএক্স বিমান প্রতিরক্ষা লঞ্চার। ১২ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রথম চালানে ৩৭ হাজার ৪৬০ কেজি ইলিশ গেল ভারতে
  • তুরস্কের সঙ্গে উত্তেজনা: সাইপ্রাসকে ‘এস–৩০০’–এর চেয়েও ভয়ংকর ‘বারাক এমএক্স’ দিল ইসরায়েল
  • গুদামে খাওয়ার অনুপযোগী চাল নিয়ে রাজশাহী খাদ্য বিভাগে তোলপাড়, ৮ তদন্ত কমিটি
  • ‘কেনতো পারমু না, হেইতে ইলশার সুরতটা দেইখ্যা যাই’
  • বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিনে ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ডলার কিনল কেন
  • নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
  • যুক্তরাজ্য থেকে আসছে মাদক এমডিএমএ, গ্রেপ্তার ৫
  • চাপে পড়ে নয়, অনুরোধে ভারতে ইলিশ পাঠানোর অনুমোদন: ফরিদা আখতার
  • সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা
  • ভোটের সরঞ্জাম আসছে ইসিতে