পূর্ব সুন্দরবনের কচিখালী অভয়ারণ্য কেন্দ্রের ডিমের চরের সাগরে সাঁতার কাটতে নেমে নিখোঁজের প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর পর্যটক মাহিদ আব্দুল্লাহর (১৬) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ৩টার দিকে ডিমের চরের দক্ষিণ পাশের সাগরে ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহ দেখতে পান জেলেরা। পরে বন বিভাগ ও কোস্ট গার্ডের সদস্যরা মরদেহটি উদ্ধার করেন।

আরো পড়ুন:

স্পিডবোট দুর্ঘটনা: নিখোঁজ ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার

গোপালগঞ্জে নিখোঁজ যুবকের লাশ উদ্ধার

এর আগে, গতকাল শনিবার সকাল ১০টার দিকে কচিখালী ডিমের চরে সাগরে সাঁতার কাটতে গিয়ে ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে যান মাহিদ আব্দুল্লাহ। এরপর থেকে বন বিভাগ ও কোস্ট গার্ডের সদস্যরা তাকে উদ্ধার অভিযান চালিয়ে আসছিল।

নিহত মাহিদ আব্দুল্লাহ ঢাকার মিরপুর ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক ডা.

শেখ সুলতান মাহমুদ আসাদের ছেলে। তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শেখেরটেক এলাকার বাসিন্দা।

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “নিখোঁজ পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের কাছে মরদেহটি হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা পরবর্তী সময়ে মরদেহ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেবে।”

এর আগে, ঢাকার বিভিন্ন এলাকার ৭৫ জনের একটি পর্যটক দল নিয়ে ‘দি এক্সপ্লোরার’ নামের একটি লঞ্চ গত শুক্রবার শরণখোলা স্টেশন অফিসের অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করে। তাদের ভ্রমণ সূচিতে কচিখালী, কটকা, ডিমের চরসহ একাধিক দর্শনীয় স্থান অন্তর্ভুক্ত ছিল। ভ্রমণের প্রথম দিন কচিখালিতে ঘটনাটি ঘটে।

ঢাকা/শহিদুল/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ স ন দরবন র মরদ হ পর যটক

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’

পূর্ব সুন্দরবনের নিসর্গঘেরা অভয়ারণ্যে গড়ে তোলা হয়েছে নতুন পর্যটন কেন্দ্র ‘আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার’। সবুজ ম্যানগ্রোভ বনের বুক চিরে, নদীর নোনাজলে ভেসে, প্রকৃতির নীরব সৌন্দর্যে ঘেরা এই কেন্দ্রটি চলতি নভেম্বর মাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন পর্যটকরা।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন আলী বান্দা এরইমধ্যে ভ্রমণপিপাসুদের দৃষ্টি কেড়েছে। শরণখোলা রেঞ্জ অফিস থেকে ট্রলারযোগে মাত্র ৪০ মিনিটের নৌপথ পেরিয়ে পৌঁছানো যায় সেখানে। 

যাত্রাপথে চোখে পড়ে বনের গভীর সবুজ গাছগাছালি, ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে যাওয়া পাখি, কচুরিপানায় ঢাকা জলাশয় এবং সুন্দরী-গেওয়া গাছের সারি যা পর্যটকদের মোহিত করে।

বন বিভাগ জানিয়েছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টারের অবকাঠামো নির্মাণকাজ শুরু হয়। এখানে তৈরি হয়েছে ছয়তলা ভবনের সমান উচ্চতার একটি ওয়াচ টাওয়ার, যেখান থেকে সুন্দরবনের বিস্তৃত সবুজাভ দৃশ্য চোখে ধরা পড়ে। 

রয়েছে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুট ট্রেইল (ওয়াকওয়ে)। পথের দুই পাশে ঘন বনের মাঝে হাঁটলে দেখা যায় প্রকৃতির আসল রূপ। এছাড়া রয়েছে মিষ্টি পানির পুকুর, হরিণ রাখার সেড, জেটি, বিশ্রামাগার, সুভেনিয়ার শপ এবং পর্যটকদের নিরাপত্তায় বনরক্ষী ও স্থানীয় গাইডের সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধান।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আলীবান্দা বরিশাল বিভাগের জেলাগুলোর মানুষের জন্য সবচেয়ে সহজগম্য স্পট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কম সময় ও কম ঝুঁকিতে সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে এখানে। স্থানীয় পর্যটকরা এরইমধ্যে আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহিন বলেন, “আলীবান্দা ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হলে স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে স্থানীয় গাইড, নৌযানচালক, হোটেল ব্যবসায়ী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কর্মসংস্থান বাড়বে। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব পর্যটনের মাধ্যমে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সচেতনতা বাড়বে।”

তবে পর্যটনকেন্দ্রে প্রবেশ ফি নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। আলীবান্দায় প্রবেশের ফি নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪৫ টাকা।

শরণখোলা ট্যুরিজম অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল বয়াতী বলেন, ‘‘আলীবান্দায় প্রবেশ ফি ৩৪৫ টাকা, অথচ একই বনের করমজল পর্যটন পয়েন্টে ফি মাত্র ৪৬ টাকা। অনেকেই আলীবান্দায় যেতে আগ্রহী, কিন্তু ফি বেশি হওয়ায় নিরুৎসাহিত হচ্ছেন।’’

পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, “আলীবান্দা এখন প্রায় প্রস্তুত। চলতি মাসেই এখানে হরিণ আনা হবে। বর্তমানে পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে স্পটটি। যেহেতু এটি ২০১৭ সালে ঘোষণা করা অভয়ারণ্য এলাকার অন্তর্ভুক্ত, তাই সাধারণ বনাঞ্চলের তুলনায় কিছু বিধিনিষেধ ও প্রবেশ ফি বেশি রাখা হয়েছে। তবে পর্যটকদের দাবির বিষয়টি আমরা সরকারের কাছে জানাব।’’

ঢাকা/শহিদুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনের নতুন পর্যটন স্পট ‘আলী বান্দা’
  • সুন্দরবনের বড় গেছো প্যাঁচা