ভারতে বিজেপি সরকারের করা সংশোধিত ওয়াক্‌ফ আইন খারিজ করলেন না সুপ্রিম কোর্ট। আইনের ওপর সম্পূর্ণ স্থগিতাদেশও দেওয়া হলো না। তবে আইনের কয়েকটি ধারার ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, ওই আইনে জেলা প্রশাসকদের হাতে যে বিপুল ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল, সুপ্রিম কোর্ট তা কেড়ে নিয়েছেন।

আজ সোমবার সুপ্রিম কোর্ট ওয়াক্‌ফ মামলার অন্তর্বর্তী রায় ঘোষণা করেছেন। প্রধান বিচারপতি বি আর গাভাই ও বিচারপতি এ আর মসিহের ডিভিশন বেঞ্চ ২০২৫ সালের ওয়াক্‌ফ (সংশোধনী) আইনের কয়েকটি ধারা স্থগিত রাখার রায় শোনান। দীর্ঘ শুনানির পর গত ২২ মে ওই মামলার রায় স্থগিত রাখা হয়েছিল।

বিজেপির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার মুসলিম সম্প্রদায়ের ওয়াক্‌ফ সম্পত্তির ‘সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ’ ও ‘অপব্যবহার’ রুখতে আইন সংশোধন করে। ওই আইনের বিরুদ্ধে সারা দেশে মুসলিম সম্প্রদায় বিক্ষোভ দেখায়। ধর্মীয় বিষয়ে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ ওঠে। সুপ্রিম কোর্টে একাধিক মামলা করা হয়। আইন বাতিলের দাবিও ওঠে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট আইন বাতিল না করে কয়েকটি ধারার ওপর স্থগিতাদেশ দেন।

নতুন আইনে বলা হয়েছিল, কোনো সম্পত্তি, তা সে জমি, বাড়ি যা–ই হোক না কেন—জরিপ শেষে ওয়াক্‌ফের কি না, বলার অধিকারী হবেন জেলা প্রশাসক। সুপ্রিম কোর্ট আজ অন্তর্বর্তী আদেশে বলেন, জেলা প্রশাসক সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত অধিকার নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না।

নতুন আইনে বলা হয়েছে, ওয়াক্‌ফে সম্পত্তি দান করতে হলে কোনো ব্যক্তিকে পাঁচ বছর ইসলাম ধর্ম পালন করতে হবে। তবেই তিনি সম্পত্তি দানের অধিকারী হবেন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ওই ধারাও স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

ভারতে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ওয়াক্‌ফ কাউন্সিল আছে। প্রতিটি রাজ্যে আছে ওয়াক্‌ফ বোর্ড। সেই কাউন্সিল ও বোর্ডের সব সদস্য এত দিন ধরে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষই হতেন। নতুন আইনে অমুসলিমদেরও রাখার বিধান দেওয়া হয়েছে। নারীদেরও অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট সে বিষয়েও হস্তক্ষেপ করেছেন।

অন্তর্বর্তী রায়ে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় ওয়াক্‌ফ কাউন্সিলে সর্বোচ্চ চার ও রাজ্যস্তরের ওয়াক্‌ফ বোর্ডে সর্বোচ্চ তিন অমুসলিম সদস্য রাখা যাবে।

একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট বলেন, কেন্দ্রীয় ওয়াক্‌ফ কাউন্সিল ও রাজ্য ওয়াক্‌ফ বোর্ডের মুখ্য পরিচালক মুসলিম হওয়াই বাঞ্ছনীয়।

ভারতে ওয়াক্‌ফের অধীনে ৮ লাখ ৭০ হাজার সম্পত্তি রয়েছে। ওয়াক্‌ফ বোর্ডগুলোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ৯ লাখ ৪০ হাজার একর জমি, যার আনুমানিক মূল্য ১ লাখ ২০ হাজার কোটি রুপি।

তবে ওয়াক্‌ফের অধীনে থাকা জমি, বাড়ি বা স্থাপত্য বিক্রি করা যায় না। চিরকাল ইজারাও দেওয়া যায় না। ভারতীয় রেল ও সশস্ত্র বাহিনীর পর ওয়াক্‌ফ বোর্ডগুলোই তৃতীয় বৃহত্তম জমির মালিক। ভারতে ওয়াক্‌ফ বোর্ডের সংখ্যা ৩০।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক উন স ল আইন র

এছাড়াও পড়ুন:

উৎসব ঘুরে প্রেক্ষাগৃহে ‘বাড়ির নাম শাহানা’

কৈশোর পেরোনোর আগেই শাহানাবাড়ির মেয়ে দীপার বিয়ে হয়ে যায়। স্বামীর নির্যাতনের জাল ছিঁড়ে নিজের মতো করে বাঁচতে চেয়েছেন তিনি। নব্বইয়ের দশকের পটভূমিতে দীপার বেঁচে থাকার লড়াইয়ের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে বাড়ির নাম শাহানা।

সত্য কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত বাড়ির নাম শাহানায় দীপা চরিত্রে অভিনয় করেছেন আনান সিদ্দিকা। ছবিটি যৌথভাবে প্রযোজনা করেছে কমলা কালেক্টিভ ও গুপী বাঘা প্রোডাকশন্স লিমিটেড।

নির্মাণের বাইরে লীসা গাজী লেখক, নাট্যকর্মী হিসেবে পরিচিত

সম্পর্কিত নিবন্ধ