বিবিএসের নাম হবে স্ট্যাটিসটিকস বাংলাদেশ, থাকবে তদারক পরিষদ—সুপারিশ টাস্কফোর্সের
Published: 15th, September 2025 GMT
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) নাম বদলে ‘স্ট্যাটিসটিকস বাংলাদেশ (স্ট্যাটবিডি)’ করার প্রস্তাব দিয়েছে পরিসংখ্যানসংক্রান্ত স্বাধীন টাস্কফোর্স। সংস্থার প্রধানকে চিফ স্ট্যাটিসটিশিয়ান বা প্রধান পরিসংখ্যানবিদ পদে উন্নীত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
আজ সোমবার পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের কাছে এই প্রতিবেদন পেশ করেছে টাস্কফোর্স। টাস্কফোর্সের নেতৃত্ব দেন বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান। সেই প্রতিবেদনে এসব সুপারিশ করা হয়েছে। পরিকল্পনা উপদেষ্টার কার্যালয়ে গিয়ে টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন জমা দেন টাস্কফোর্সের প্রতিনিধিদল।
টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন গ্রহণ করার পর গণমাধ্যমকে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, কাজের দক্ষতা ও জবাবদিহি এবং তথ্যকে মুক্ত করে দেওয়ার জন্য যা যা করণীয় তা এই প্রতিবেদনে আছে। তা ছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক উন্নতি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার করণীয় বিষয়গুলো এখানে রয়েছে।
প্রতিবেদন জমা দিয়ে পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, বিবিএসের তথ্য–উপাত্তকে গুণগত ও স্বচ্ছতায় বিশ্বমানের পর্যায়ে নিয়ে যেতে আমরা সুনির্দিষ্ট সুপারিশ দিয়েছি। স্বাধীনভাবে তথ্য পর্যালোচনা ও প্রতিবেদন তৈরির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনি সুরক্ষার বিষয়গুলো আমাদের সুপারিশে এসেছে। এটা খসড়া প্রতিবেদন, প্রয়োজনে কিছুটা পরিবর্তন ও পরিমার্জন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। নাম পরিবর্তনের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের প্রধান কীভাবে নির্বাচিত হবেন—তা এখানে এসেছে।
সুপারিশে যা আছে
একই সঙ্গে প্রতিবেদনে ট্রাস্ট অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্সি কাউন্সিল অব স্ট্যাটিসটিকস (টিটিসিএস) নামে সাত সদস্যের তদারক পরিষদ গঠনের প্রস্তাব এসেছে। এটি বার্ষিক কার্যক্রম ও ব্যয় নিরীক্ষা খতিয়ে দেখবে এবং প্রতিষ্ঠানের প্রধান নিয়োগে ভূমিকা রাখবে।
সংস্কারের অংশ হিসেবে পরিসংখ্যান আইন-২০১৩ সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। তথ্য যাচাই ও প্রকাশে বিবিএসের স্বাধীনতা আইনগতভাবে সুরক্ষিত করার উদ্দেশ্যে এটি করা হয়েছে। এ ছাড়া ৮টি উইং বাড়িয়ে ১৬টি করা, উপজেলাপর্যায়ে ৪৩৭টি নতুন পদ সৃজন ও ক্যাডার-নন-ক্যাডার একীভূত করার কথা বলা হয়েছে।
অর্থায়নের ক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে বার্ষিক জরিপ কার্যক্রম স্থিতিশীল করা ও মূল জরিপগুলোকে রাজস্ব বাজেটে স্থান দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আগাম ক্যালেন্ডার প্রকাশ, সবার জন্য একসঙ্গে তথ্য প্রকাশ, পূর্ণ মেটাডেটা ও পদ্ধতিগত ব্যাখ্যা প্রকাশের মাধ্যমে জনগণের আস্থা ফেরানো জরুরি। এ ছাড়া বার্ষিক অংশীজন সম্মেলন, বড় জরিপে উপদেষ্টা কমিটি ও তরুণদের ইন্টার্নশিপ চালুর প্রস্তাবও করা হয়েছে।
সংগঠনটির প্রশিক্ষণকেন্দ্রকে স্ট্যাটবিডি ট্রেনিং একাডেমিতে রূপান্তর ও মেথডোলজিক্যাল অ্যাডভাইজরি কাউন্সিল গঠনেরও সুপারিশ এসেছে। সেই সঙ্গে পরিকল্পনা উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাস্তবায়ন দল গঠনের আহ্বান জানিয়েছে টাস্কফোর্স।
স্বাধীন টাস্কফোর্সের অন্য সদস্যরা হলেন বিবিএসের সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ, বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, র্যাপিডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইএসআরটির অধ্যাপক সৈয়দ শাহাদাত হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জনসংখ্যা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক অতনু রব্বানী ও সরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক মোহাম্মদ ইউনুস।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র প রস ত ব পর স খ য ন ম হ ম মদ ব ব এস র উপদ ষ ট প রক শ ত কর র
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস
সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) কাছে দেশটির এল–ফাশের শহরের পতনের পর সেখানকার বাসিন্দারা ‘চরম বিপদের’ মধ্যে রয়েছেন। তাঁরা শহরটিতে আটকা পড়েছেন। গতকাল শনিবার ফ্রান্সভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতব্য চিকিৎসা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছে।
২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরএসএফের লড়াই চলছে। গত ২৬ অক্টোবর এল-ফাশের দখল করে নেয় আধা সামরিক বাহিনীটি। শহরটির পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুনসুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে২২ ঘণ্টা আগেএল–ফাশের শহর থেকে যাঁরা পালিয়ে কাছের তাউইলা শহরে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরা বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা চালানোর কথা বলেছেন। তাঁদের ভাষ্য, এল–ফাশেরে মা–বাবার সামনে সন্তানদের হত্যা করা হচ্ছে। মানুষজন শহরটি থেকে পালানোর সময় তাঁদের মারধর করা হচ্ছে। জাতিসংঘের হিসাবে, ২৬ অক্টোবর থেকে ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ শহরটি থেকে পালিয়েছেন।
শনিবার ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, এল–ফাশেরের বিপুল মানুষ ‘চরম বিপদের’ মধ্যে রয়েছে। তাদের শহরটি ত্যাগ করতে দিচ্ছে না আরএসএফ ও তাদের সহযোগীরা। সংস্থাটির জরুরি বিভাগের প্রধান মাইকেল ওলিভিয়ার লাচেরিটে বলেন, এল–ফাশের থেকে যাঁরা নিখোঁজ হয়েছেন, তাঁরা কোথায়? সম্ভাব্য উত্তরটা হলো—তাঁদের হত্যা করা হয়েছে।
গত শুক্রবার জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আরএসএফের হামলায় এল–ফাশেরে কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছেন। তবে সুদানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দুই হাজার বেসামরিক মানুষকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, এল–ফাশেরে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।
সুদান ‘মহাবিপর্যয়কর পরিস্থিতির’ মধ্যে রয়েছে বলে শনিবার উল্লেখ করেছেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়েডফুল। বাহরাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বেসামরিক লোকজনকে সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আরএসএফ। এরপরও এমন নৃশংসতার জন্য তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। একই সংবাদ সম্মেলনে সুদানের পরিস্থিতি ‘ভয়ংকর’ বলে উল্লেখ করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার।
আরও পড়ুনসুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন৭ ঘণ্টা আগে