চাকসু ও হল সংসদে ২৩২ পদে মনোনয়নপত্র নিলেন ১ হাজার ৮৮ জন প্রার্থী
Published: 16th, September 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ২৩২ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন ১ হাজার ৮৮ জন প্রার্থী। এর মধ্যে চাকসুর ২৬টি পদে লড়বেন ৪৮৮ জন প্রার্থী, আর ১৪টি হল ও একটি হোস্টেলের ২০৬টি পদে লড়বেন ৬০০ জন।
আজ মঙ্গলবার রাতে চাকসু ভবনের নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার ও সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘আজ শিক্ষার্থীদের ভিড় ছিল বেশি, তবে কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। এমন পরিস্থিতি থাকলে আমরা আশাবাদী, চাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।’
এ ছাড়া আজ মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন ১৯ জন প্রার্থী। ১৪ জন কেন্দ্রীয় সংসদের, তিনজন ছেলেদের হলের ও দুজন নারী শিক্ষার্থীদের হলের।
হলভিত্তিক প্রার্থিতাছেলেদের হলে মনোনয়ন ফরম নিয়েছেন ৪৫২ জন প্রার্থী। এর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী হলে সর্বাধিক ৭৫ জন এবং শহীদ আব্দুর রব হলে সর্বনিম্ন ৩৭ জন ফরম নিয়েছেন। মেয়েদের হলে মোট ১৪৮ জন ফরম নিয়েছেন। এর মধ্যে বিজয় ২৪ হলে ৩৯ জন ও নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে ১৪ জন। শিল্পী আবদুর রশিদ হোস্টেলের জন্য ২৫ জন প্রার্থী ফরম নিয়েছেন।
তিন প্যানেল ঘোষণাএখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সংসদ নির্বাচনে তিনটি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে—ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের যৌথ প্যানেল ‘দ্রোহ পর্ষদ’, ছাত্র অধিকার পরিষদের ‘চাকসু ফর র্যাপিড চেঞ্জ’ ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’।
হল সংসদে ঘোষণা হয়েছে দুটি প্যানেল। নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে পাহাড়ি ছাত্রীদের নেতৃত্বে প্যানেল ‘হৃদ্যতার বন্ধন’। তাদের ১৪ প্রার্থী ফরম নিয়েছেন। প্রীতিলতা হলে ইসলামী ছাত্রী সংস্থা সমর্থিত ‘সংঘবদ্ধ ছাত্রী জোট’ থেকে ফরম নিয়েছেন ১২ জন প্রার্থী।
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন বুধবার। যাচাই–বাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর, প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ ২১ সেপ্টেম্বর এবং চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১২ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর এবার আবার ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফরম ন য় ছ ন জন প র র থ দ র হল ন ফরম
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রদলের আবেদনের পর মনোনয়নপত্র নেওয়ার সময় বাড়ল
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র নেওয়া ও জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হয়েছে। আজ বুধবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। একইভাবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার ছিল মনোনয়নপত্র নেওয়ার শেষ দিন। এ ছাড়া আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় নির্ধারিত ছিল। সময় বাড়ানোর বিষয়টি আজ বেলা দেড়টার দিকে নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময় দুই দিন বাড়ানোর দাবিতে আজ বেলা ১১টার দিকে নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করে ছাত্রদল। সংগঠনটির পক্ষে শাখা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান এই আবেদন করেন। এ ছাড়া একই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে করা এক আবেদনে ইসলামী ছাত্র মজলিসের পক্ষ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় আগামী রোববার পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি করা হয়।
ছাত্রদল নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমানের করা আবেদনে বলা হয়, গত ৩০ ও ৩১ আগস্ট গ্রামবাসীদের হামলার শিকার হয়ে আহত অনেক শিক্ষার্থী এখনো গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছে। এ কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনেকেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারেননি। এ অবস্থায় নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম বিতরণ ও জমা দেওয়ার সময়সীমা আরও দুই দিন বাড়ালে নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক সব শিক্ষার্থীর জন্য মঙ্গল হতো। জানতে চাইলে আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থে এই আবেদন করেছি।’
ইসলামী ছাত্র মজলিসের আবেদনটিতে সই করেন সংগঠনটির শাখা সভাপতি সাকিব মাহমুদ ও সেক্রেটারি নাজমুস সাদাত। তাঁরা উল্লেখ করেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছে। শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কার্যক্রমেই বেশি ব্যস্ত। এ অবস্থায় তাড়াহুড়া ও মানসিক চাপ নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া অনেকের জন্যই কষ্টকর হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার সময় রোববার পর্যন্ত বাড়ানো হোক।’
জানতে চাইলে সংগঠনটির সভাপতি সাকিব মাহমুদ বলেন, নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। বেশির ভাগ প্রার্থীই একাডেমিক কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত। এ অবস্থায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ও প্যানেল গোছানো কষ্টকর। এসব বিবেচনায় তাঁরা মেয়াদ বাড়ানোর দাবি করেছেন।
গতকাল রাত পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ মিলিয়ে ২৩২ পদের বিপরীতে ১ হাজার ৮৮ শিক্ষার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে চাকসুর ২৬টি পদের বিপরীতে ৪৮৮ জন এবং ১৪টি হল ও একটি হোস্টেলের ২০৬টি পদের বিপরীতে ৬০০ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়নপত্র জমা
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে সকাল থেকেই ভিড় দেখা গেছে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ের সামনে। এ সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।
দুপুরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন সাদিয়া মাহসিন। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের স্নাতকোত্তরের এই শিক্ষার্থী বিজয় ২৪ হলের সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘হারজিত থাকবেই। তবে এই উৎসবমুখর নির্বাচনে অংশ নিয়ে খুব ভালো লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবনের শেষ সময়ে এমন আয়োজনের অংশ হতে পেরে সত্যিই ভালো লাগছে।’
আজ দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটসহ ক্যাম্পাসে সক্রিয় ছাত্রসংগঠনগুলোর শীর্ষ পদে থাকা কাউকেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেখা যায়নি।
আগামী ১২ অক্টোবর চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এবার মোট ভোটার ২৭ হাজার ৬৩৭ জন। গত রোববার মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। ২১ সেপ্টেম্বর প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশিত হবে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর এবং চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।