হল সংসদে পাহাড়ি ছাত্রীদের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ‘হৃদ্যতার বন্ধন’
Published: 15th, September 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হল সংসদ নির্বাচনে পাহাড়ি ছাত্রীরা পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছেন। তাঁদের প্যানেলের নাম ‘হৃদ্যতার বন্ধন’। নওয়াব ফয়জুন্নেছা হলে তাঁরা ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
আজ সোমবার বিকেলে চাকসু ভবনের এসে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন প্যানেলের সদস্যরা। সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নাট্যকলা বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী প্রমিতা চাকমা। তিনি বলেন, ‘আমাদের হল নতুন। অনেক সংস্কারকাজ বাকি আছে। শিক্ষার্থীদের জন্য যা যা সংস্কার প্রয়োজন, সেসবের দাবিতে কাজ করতেই আমরা পূর্ণ প্যানেল নিয়ে নির্বাচন করছি।’
সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পালি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সিংঞোইউ মারমা। তিনি বলেন, ‘হলের খাবারের মান, লাইব্রেরির উন্নয়নসহ যেসব সংস্কারের প্রয়োজন, আমরা সেগুলো নিয়ে কাজ করব।’
সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী মে থুই চিৎ খেয়াং। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিভেদহীন পরিবেশ গড়ে তুলতে চাই আমরা। তাই প্যানেলে সব পাহাড়ি ছাত্রীগোষ্ঠী থেকে প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।’
এ ছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আছেন খেলাধুলা সম্পাদক স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ইতি চাকমা, সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্পাদক সংগীত বিভাগের প্রত্যাশা চাকমা, দপ্তর সম্পাদক হিসাববিজ্ঞান বিভাগের খিং খিং রাখাইন, সমাজসেবা, পরিবেশ ও মানবাধিকার সম্পাদক পালি বিভাগের অপরাজিতা বড়ুয়া, বিজ্ঞান, গবেষণা ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সুরঞ্জনা ত্রিপুরা, স্বাস্থ্য সম্পাদক পালি বিভাগের অংমে মারমা, রিডিংরুম, ডাইনিং ও হল লাইব্রেরি সম্পাদক মার্কেটিং বিভাগের মোনালিসা চাকমা, যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক পালি বিভাগের শ্রেয়া তালুকদার, নির্বাহী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিপ্রা তঞ্চঙ্গ্যা, পরিসংখ্যান বিভাগের অনন্যা চাকমা এবং বাংলা বিভাগের প্রমিতা ত্রিপুরা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন এবং হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর ভোট গ্রহণ হবে আগামী ১২ অক্টোবর ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালে। গতকাল রোববার থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়ন ফরম বিতরণ।
মনোনয়নপত্র বিতরণের বিষয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হবে ১৫ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। যাচাই-বাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত। প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২১ সেপ্টেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স প ট ম বর করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রদলের আবেদনের পর মনোনয়নপত্র নেওয়ার সময় বাড়ল
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র নেওয়া ও জমা দেওয়ার সময় বাড়ানো হয়েছে। আজ বুধবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। একইভাবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার ছিল মনোনয়নপত্র নেওয়ার শেষ দিন। এ ছাড়া আজ বেলা তিনটা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় নির্ধারিত ছিল। সময় বাড়ানোর বিষয়টি আজ বেলা দেড়টার দিকে নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময় দুই দিন বাড়ানোর দাবিতে আজ বেলা ১১টার দিকে নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করে ছাত্রদল। সংগঠনটির পক্ষে শাখা সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান এই আবেদন করেন। এ ছাড়া একই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে করা এক আবেদনে ইসলামী ছাত্র মজলিসের পক্ষ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় আগামী রোববার পর্যন্ত বাড়ানোর দাবি করা হয়।
ছাত্রদল নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমানের করা আবেদনে বলা হয়, গত ৩০ ও ৩১ আগস্ট গ্রামবাসীদের হামলার শিকার হয়ে আহত অনেক শিক্ষার্থী এখনো গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছেন। একই সঙ্গে বিভিন্ন বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছে। এ কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনেকেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পারেননি। এ অবস্থায় নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম বিতরণ ও জমা দেওয়ার সময়সীমা আরও দুই দিন বাড়ালে নির্বাচনে অংশ নিতে ইচ্ছুক সব শিক্ষার্থীর জন্য মঙ্গল হতো। জানতে চাইলে আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের স্বার্থে এই আবেদন করেছি।’
ইসলামী ছাত্র মজলিসের আবেদনটিতে সই করেন সংগঠনটির শাখা সভাপতি সাকিব মাহমুদ ও সেক্রেটারি নাজমুস সাদাত। তাঁরা উল্লেখ করেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছে। শিক্ষার্থীরা একাডেমিক কার্যক্রমেই বেশি ব্যস্ত। এ অবস্থায় তাড়াহুড়া ও মানসিক চাপ নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া অনেকের জন্যই কষ্টকর হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা নেওয়ার সময় রোববার পর্যন্ত বাড়ানো হোক।’
জানতে চাইলে সংগঠনটির সভাপতি সাকিব মাহমুদ বলেন, নির্বাচনে প্রার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। বেশির ভাগ প্রার্থীই একাডেমিক কার্যক্রম নিয়ে ব্যস্ত। এ অবস্থায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ও প্যানেল গোছানো কষ্টকর। এসব বিবেচনায় তাঁরা মেয়াদ বাড়ানোর দাবি করেছেন।
গতকাল রাত পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ মিলিয়ে ২৩২ পদের বিপরীতে ১ হাজার ৮৮ শিক্ষার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে চাকসুর ২৬টি পদের বিপরীতে ৪৮৮ জন এবং ১৪টি হল ও একটি হোস্টেলের ২০৬টি পদের বিপরীতে ৬০০ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।
উৎসবমুখর পরিবেশে মনোনয়নপত্র জমা
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে সকাল থেকেই ভিড় দেখা গেছে নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ের সামনে। এ সময় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে।
দুপুরে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন সাদিয়া মাহসিন। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের স্নাতকোত্তরের এই শিক্ষার্থী বিজয় ২৪ হলের সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘হারজিত থাকবেই। তবে এই উৎসবমুখর নির্বাচনে অংশ নিয়ে খুব ভালো লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাজীবনের শেষ সময়ে এমন আয়োজনের অংশ হতে পেরে সত্যিই ভালো লাগছে।’
আজ দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটসহ ক্যাম্পাসে সক্রিয় ছাত্রসংগঠনগুলোর শীর্ষ পদে থাকা কাউকেই মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেখা যায়নি।
আগামী ১২ অক্টোবর চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এবার মোট ভোটার ২৭ হাজার ৬৩৭ জন। গত রোববার মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। ২১ সেপ্টেম্বর প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশিত হবে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর এবং চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।