উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের প্রথম রাতেই নাটকীয়তা ছড়িয়ে জয় তুলে নিলো রিয়াল মাদ্রিদ। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে মার্সেইয়ের বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে কিলিয়ান এমবাপ্পে জোড়া গোল করে ১০ জনের রিয়ালকে ২-১ গোলের রোমাঞ্চকর জয় উপহার দিলেন।

এই জয়ের মধ্য দিয়ে রেকর্ড ১৫ বারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে ২০০তম জয়ের মাইলফলক ছুঁল। একই সঙ্গে রিয়ালের সাবেক কিংবদন্তি মিডফিল্ডার থেকে কোচ হওয়া জাবি আলোনসোও পেলেন প্রতিযোগিতায় নিজের অভিষেক জয়।

আরো পড়ুন:

এমবাপ্পে-গুলের গোলে ১০ জনের রিয়ালের লড়াকু জয়

তিন গোল বাতিলের পরও রিয়ালের দাপুটে জয়

ম্যাচের শুরুটা ছিল অতিথি মার্সেইয়ের। কিংবদন্তি জর্জ ওয়েহর ছেলে টিমোথি ওয়েহর দুর্দান্ত শটে ২২ মিনিটে এগিয়ে যায় ফরাসি ক্লাবটি। তার আগে কিশোর ফ্রাঙ্কো মাস্তান্তুয়ানো দারুণ এক শটে পোস্ট কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। আর এমবাপ্পের এক ঝটকার বাইসাইকেল কিক অল্পের জন্য বাইরে যায়।

তবে সেই লিড বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ২৯ মিনিটে জিওফ্রে কন্দোগবিয়ার অদক্ষ ট্যাকলে রদ্রিগো পড়ে গেলে রেফারি পেনাল্টি দেন। ঠাণ্ডা মাথায় শট নিয়ে জালে পাঠান এমবাপ্পে, ফেরান সমতা।

ম্যাচে উত্তেজনা বাড়ে ৭০ মিনিটে। কর্নার থেকে বল ক্লিয়ার হওয়ার পর রিয়ালের ডিফেন্ডার দানি কারভাহাল মার্সেই গোলরক্ষক জেরোনিমো রুলির সঙ্গে ধাক্কা খান। রিপ্লেতে দেখা যায় তিনি ঢুস মেরেছেন তাকে। যদিও সংস্পর্শ খুবই সামান্য ছিল। ভিএআরের পর লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় রিয়ালের অধিনায়ককে।

একজন কম নিয়েও আক্রমণ থামায়নি রিয়াল। ৮১ মিনিটে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের শট ব্লক করতে গিয়ে ফাকুন্দো মেদিনার হাতে বল লাগে। দ্বিতীয়বারের মতো পেনাল্টি পায় রিয়াল। আর এমবাপ্পে আবারও নির্ভুল শটে জালে বল জড়িয়ে জয় নিশ্চিত করেন। এই গোলের মাধ্যমে রিয়ালের হয়ে তার গোলসংখ্যা দাঁড়াল ৫০।

শেষ দিকে ম্যাসন গ্রিনউড চেষ্টা করেছিলেন সমতা ফেরাতে। তবে থিবো কোর্তোয়ার সেভে রক্ষা পায় রিয়াল। শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে নায়ক হয়ে ওঠেন এমবাপ্পে।

ম্যাচ শেষে সতীর্থ ফেদেরিকো ভালভার্দে বলেন, “আমরা খুশি, এমবাপ্পে গোল করে যাচ্ছেন এবং ক্রমে আরও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। আমাদের কাজ তাকে বল দেওয়া, বাকিটা সে সামলে নেয়।”

ম্যাচ শুরুর আগে অবশ্য সামান্য অশান্তি হয়। সান্তিয়াগো বার্নব্যুয়ের বাইরে মার্সেই সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধাক্কাধাক্কি হয়। দাঙ্গা পুলিশ ও অশ্বারোহী বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি সামলে নেয়। ফলে ম্যাচের ভেতরে উত্তেজনা আর ছড়ায়নি।

শেষ পর্যন্ত এমবাপ্পের জোড়া পেনাল্টি শুধু জয়ই এনে দেয়নি, রিয়ালকে ছুঁইয়ে দিয়েছে নতুন মাইলফলক। চ্যাম্পিয়নস লিগে ২০০ জয়! আর নতুন কোচ আলোনসোর হাতে প্রথম ম্যাচেই এমন জয় যেন তার জন্য নিখুঁত সূচনা।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল চ য ম প য়নস ল গ চ য ম প য়নস ল গ এমব প প

এছাড়াও পড়ুন:

বিশ্বের প্রথম ৫ লাখ কোটি ডলারের কোম্পানি এনভিডিয়া

চিপ কোম্পানি এনভিডিয়ার অগ্রযাত্রা চলছেই। এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির প্রাণভোমরা হচ্ছে এই চিপ। ফলে এনভিডিয়ার ব্যবসায়িক বিকাশই এখন প্রযুক্তি খাতের স্বাভাবিক ঘটনা। সে সুবাদে কোম্পানিটি একের পর এক সমৃদ্ধির মাইলফলক অর্জন করে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।

সফলতার ধারাবাহিকতায় জেনসেন হুয়াং প্রতিষ্ঠিত এই কোম্পানি গত বুধবার বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম কোম্পানি হিসেবে ৫ ট্রিলিয়ন বা ৫ লাখ কোটি মার্কিন ডলারের বাজার মূলধনের নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে। খবর অ্যারাবিয়ান বিজনেসের।

বাজার মূলধন ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে ওঠার খবরে বুধবার এনভিডিয়ার শেয়ারের দর ২ দশমিক ৯৯ শতাংশ বেড়ে যায়। এই দাম বাড়ার ফলে দিন শেষে কোম্পানিটির বাজার মূলধন বেড়ে দাঁড়ায় ৫ দশমিক শূন্য ৩ ট্রিলিয়ন বা ৫ লাখ ৩ হাজার কোটি মার্কিন ডলার।

এক মাইলফলক থেকে আরেক মাইলফলক অর্জন করতে এনভিডিয়ার তেমন একটা সময় লাগছে না। ২০২৩ সালের জুন মাসে কোম্পানিটি প্রথম এক ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ কোটি ডলারের বাজার মূলধনের মাইলফলক স্পর্শ করে। তার ২৯ মাসের মাথায় কোম্পানিটি ৫ লাখ কোটি ডলারের মাইলফলক ছুঁয়ে ফেলল।

এক লাখ কোটি ডলারের বাজার মূলধন থেকে দুই লাখ কোটি ডলারে পৌঁছাতে এনভিডিয়ার সময় লেগেছিল ১৮০ দিন। এরপর দুই লাখ কোটি ডলার থেকে তিন লাখ কোটি ডলারে যেতে লেগেছে মাত্র ৬৬ দিন। সর্বশেষ চার লাখ কোটি ডলার থেকে পাঁচ লাখ কোটি ডলারে পৌঁছাতে সময় লেগেছে ৭৮ দিন।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) উত্থানের ঢেউয়ে চেপে এগিয়ে চলেছে এনভিডিয়া—যে প্রবণতা শুরু হয়েছে ২০২২ সালের শেষ দিকে ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি চালুর পর থেকে। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। আর গত পাঁচ বছরে বেড়েছে ১ হাজার ৫০০ শতাংশের বেশি। সেই তুলনায় এ বছর এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক বেড়েছে মাত্র ১৭ শতাংশ ও ন্যাসডাকে ২৩ শতাংশ।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বর্তমানে এনভিডিয়ার বাজার মূলধন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন ছাড়া এখন বিশ্বের যেকোনো দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকারের চেয়ে বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপির আকার ২৯ দশমিক ১৮ ট্রিলিয়ন ডলার, আর চীনের জিডিপি ১৮ দশমিক ৭৪ ট্রিলিয়ন ডলার। এর পেছনে জার্মানির অবস্থান। সে দেশের জিডিপির আকার ৪ দশমিক ৬৬ ট্রিলিয়ন ডলার।

কোম্পানিস মার্কেট ডট কমের তথ্যানুসারে, বাজার মূলধনের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে আছে মাইক্রোসফট; তাদের বাজার মূলধন ৪ লাখ ২৫ হাজার কোটি ডলার। ৪ লাখ কোটি ডলারের বাজার মূলধন নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে অ্যাপল। ৩ লাখ ৩২ হাজার কোটি ডলার নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে অ্যালফাবেট। ২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি ডলার নিয়ে পঞ্চম স্থানে আছে অ্যামাজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিশ্বের প্রথম ৫ লাখ কোটি ডলারের কোম্পানি এনভিডিয়া