নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার একটি খালে কচুরিপানার ভেতর থেকে মানুষের মাথার খুলি ও শরীরের বিভিন্ন অংশের হাড়গোড় উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার নলদী ইউনিয়নের হলদা গ্রামের ইছামতী বিল এলাকা থেকে এসব উদ্ধার করা হয়। তবে এগুলো কার দেহের অংশ, তা এখনো শনাক্ত করা যায়নি।

আজ রোববার সকালে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম এসব তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেলের দিকে হলদা গ্রামের স্থানীয় এক কৃষক নিজের জমিতে ওষুধ ছিটাতে ইছামতী বিলে যান। এ সময় খালের কচুরিপানার ভেতরে তিনি মানুষের হাড় দেখতে পান। পরে তাঁর ডাক শুনে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং আশপাশে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে কচুরিপানার নিচ থেকে মাথার খুলি ও আরও কিছু হাড়গোড় পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কঙ্কালের বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করে।

স্থানীয় লোকজনের ধারণা, উদ্ধার করা মাথার খুলি ও হাড়গোড় সেকেলা বেগম (৬০) নামের এক নারীর হতে পারে। তিনি ওই গ্রামের আবদুল শুকুরের স্ত্রী। প্রায় ১ মাস ১০ দিন আগে তিনি নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন।

এ বিষয়ে ওসি শরিফুল ইসলাম বলেন, মানবকঙ্কালের যেসব অংশ উদ্ধার করা হয়েছে, তা নারী নাকি পুরুষের—এটা প্রাথমিকভাবে বলা যাচ্ছে না। পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৩ জুন উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের কোলা এলাকার একটি তিলখেতে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মাথার খুলি, চুল, হাড়গোড় ও জামাকাপড় উদ্ধার করেছিল পুলিশ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জয়েন্টের ব্যথা মানেই কি বাত? আর কী কী কারণে ব‍্যথা হতে পারে

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে চলাফেরা ও কাজকর্মে জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। নানা কারণে সন্ধিতে বা জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে। বেশির ভাগ মানুষ জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির ব্যথা অনুভব করলেই ধরে নেন, হয়তো বাত হয়েছে। যদিও জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির ব্যথার একটি অন্যতম প্রধান কারণ হলো বাত, তবে সব ব্যথাই বাত নয়। অনেক ক্ষেত্রেই এই ব্যথার উৎস হতে পারে মাংসপেশি, টেন্ডন, বা স্নায়ুতন্ত্র।

সব জয়েন্টের ব্যথা বাত নয়

প্রথমেই জানা দরকার, ‘বাত’ আসলে কোনো একক রোগ নয়। এটি মূলত আর্থ্রাইটিস বা গাঁটে প্রদাহের সাধারণ নাম, যার মধ্যে রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, গাউটসহ আরও অনেক ধরনের রোগ অন্তর্ভুক্ত। এসব ক্ষেত্রে সাধারণত জয়েন্ট ফুলে যায়, লালচে বা গরম অনুভূত হয় এবং নড়াচড়ায় ব্যথা বাড়ে। যেমন-
অস্টিওআর্থারাইটিস: বয়সজনিত কারণে জয়েন্টের ক্ষয় হলে বা ভেঙে গেলে দেখা দেয়।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস: এটি একটি অটোইমিউন রোগ, যেখানে শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা ভুল করে জয়েন্টে আক্রমণ করে।

জয়েন্টের আশপাশে ব্যথা সৃষ্টি হওয়ার আরও বেশ কিছু কারণ আছে—
টেন্ডিনাইটিস বা বার্সাইটিস: জয়েন্টের কাছের টেন্ডন (পেশি ও হাড়ের সংযোগকারী অংশ) বা বার্সা (জয়েন্টের ভেতরের তরল থলি)-তে প্রদাহ হলে ব্যথা হতে পারে।
আঘাত বা অত্যধিক ব্যবহার: খেলাধুলা বা অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে মাংসপেশি বা লিগামেন্টে টান লাগা।

নিউরোলজিক্যাল কারণ

অনেক সময় জয়েন্টের কাছাকাছি যে ব্যথা অনুভব হয়, তা আসলে সেই জয়েন্টের সমস্যা নয়, বরং স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা। নিউরোলজিক্যাল কারণে সৃষ্ট জয়েন্ট ব্যথার প্রধান উৎসগুলো হলো—  

নার্ভ কম্প্রেশন: মেরুদণ্ড থেকে বেরিয়ে আসা কোনো স্নায়ু বা নার্ভে চাপ পড়লে (যেমন: কোমরে ডিস্ক প্রোল্যাপস বা সায়াটিকা) সেই ব্যথা বাহু বা পায়ে অবস্থিত জয়েন্ট পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। একে রেফার্ড পেইন বলে। উদাহরণস্বরূপ, ঘাড়ের নার্ভে চাপ পড়লে কাঁধ বা কনুইতে ব্যথা হতে পারে।

পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি: ডায়াবেটিস বা অন্যান্য কারণে হাত-পায়ের প্রান্তীয় স্নায়ুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে জয়েন্টে বা তার আশপাশে জ্বালাপোড়া, তীব্র ব্যথা বা অসারতা অনুভূত হতে পারে।

অন্যান্য স্নায়বিক রোগ: কিছু স্নায়বিক রোগ, যেমন ফাইব্রোমায়ালজিয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশে বিশেষ করে জয়েন্টের চারপাশে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা সৃষ্টি করে।

করণীয় কী?

যদি আপনার জয়েন্টের ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয়, সকালে বেশি থাকে, ফোলা থাকে বা এর সঙ্গে অসারতা বা ঝিনঝিন ভাব দেখা দেয়, তবে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে বিপদে না পড়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তিনি পরীক্ষা করে বাত নাকি স্নায়বিক কোনো সমস্যা, তা নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারবেন।

আরও পড়ুনসহজ এই ১২টি উপায় মানলে মস্তিষ্ক থাকবে চাঙা ও কর্মক্ষম১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ