ঢালিউড তারকা সিয়াম আহমেদ চলচ্চিত্রের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। সম্প্রতি নির্মাতা রায়হান রাফীর ‘আন্ধার’ সিনেমার শুটিং শেষ করেছেন। এবার তার ‘রাক্ষস’ শিরোনামে নতুন সিনেমা নিয়ে দর্শকদের মাঝে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। শুরুতে সিনেমাটিতে সিয়ামের বিপরীতে প্রার্থনা ফারদিন দীঘি ও সাবিলা নূরের নাম শোনা যায়।
অবশেষে জানা গেল, সিয়ামের বিপরীতে কলকাতার অভিনেত্রী ইধিকা পালকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহে তার সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। সব ঠিক থাকলে এটি হবে সিয়াম-ইধিকা জুটির প্রথম সিনেমা।
আরো পড়ুন:
প্রেমিকের সঙ্গে বিদেশে অবসর যাপন, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অকপট তারা
বড়দা মিঠুর ‘দেনা–পাওনা’
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে শোনা যায়, তামিম রহমান পরিচালিত ‘সিকান্দার’ সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করবেন তারা। তবে সেই প্রকল্পের খবর আর প্রকাশিত হয়নি। ফলে ‘রাক্ষস’-এর মাধ্যমে দর্শকরা এই জুটিকে পর্দায় দেখতে পাবেন বলে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
ইধিকা পাল বাংলাদেশের দর্শকের কাছে পরিচিত হন শাকিব খান অভিনীত ‘প্রিয়তমা’ সিনেমার মাধ্যমে। এরপর শাকিবের বিপরীতে ‘বরবাদ’ সিনেমায়ও অভিনয় করেন। শাকিব খানের বাইরে তিনি কাজ করেছেন বাংলাদেশের পরিচালক হাসিবুর রেজার ‘কবি’ সিনেমায় এবং কলকাতার ‘খাদান’ ও ‘রঘু ডাকাত’ সিনেমায় দেবের বিপরীতে। ধীরে ধীরে তিনি বাংলাদেশের পাশাপাশি কলকাতাতেও জনপ্রিয়তা অর্জন করছেন।
সিয়াম আহমেদের সর্বশেষ সিনেমা ‘জংলি’, যেখানে তার বিপরীতে ছিলেন শবনম বুবলী, দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল। ‘পোড়ামন ২’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিষেকের পর থেকে তিনি বাণিজ্যিক ও কনটেন্ট-ড্রিভেন সব ঘরানার সিনেমায় নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, চলতি মাসেই ঢাকায় ‘রাক্ষস’ সিনেমার শুটিং শুরু হবে, এরপর শ্রীলঙ্কা ও মালয়েশিয়ায় কিছু অংশের দৃশ্যধারণ করা হবে। আন্তর্জাতিক লোকেশন ও আধুনিক অ্যাকশন ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছেন নির্মাতারা।
পরিচালক মেহেদী হাসান আপাতত আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে চাচ্ছেন না, সিয়ামও মন্তব্য করছেন না। তবে সূত্রের খবর, দুই সপ্তাহের মধ্যেই ক্যামেরা রোলিং শুরু হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ঈদুল ফিতরে সিনেমাটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র র ব পর ত কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ভাই খুন করার পর মৃত প্রেমিককে বিয়ে করলেন তরুণী
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুজনের পরিচয়। এরপর ধীরে ধীরে ভালো লাগা। পরে মন দেওয়া–নেওয়া। একপর্যায়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। কিন্তু শেষমেষ সাতপাকে বাঁধা হলো না। ভিন্ন জাতের কারণে ছেলেটিকে মেরে ফেলা হয়। অভিযোগ প্রেমিকার পরিবারের বিরুদ্ধে। এতে দমে যাননি প্রেমিকা। প্রেমিকের মরদেহকে বিয়ে করে তাঁর বাড়িতে বসবাস শুরু করেছেন।
মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যে। তরুণীর নাম আঁচল মামিদওয়ার (২১)। তাঁর প্রেমিকের নাম সক্ষম তাতে (২০)। মৃত প্রেমিককে বিয়ে করার দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এরপর বিষয়টি নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা।
আঁচল বলেন, তাঁরা বিয়ে করলে মেনে নেবেন বলে পরিবারের সদস্যরা আশ্বস্ত করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তিন বছর ধরে একসঙ্গে ছিলাম। কত স্বপ্ন দেখেছি। আমার ভাইয়েরা আশ্বাস দিয়েছিলেন, তাঁরাই আমাদের বিয়ের আয়োজন করবেন; কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁরা আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন।’
সক্ষমের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে পরিচয় হয়েছিল বলে জানান আঁচল। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়। তিনি বলেন, ‘তাঁরা (পরিবারের সদস্যরা) সক্ষমের সঙ্গে ভালো আচরণ করতেন, একসঙ্গে খেতেন। তাঁরা সক্ষমকে আশ্বস্ত করেছিলেন, সব ঠিক আছে। আমরা ভাবতে পারিনি যে এমন কিছু ঘটবে।’
পুলিশের উসকানি
আঁচল অভিযোগ করেন, ধীরাজ কোমলওয়ার ও মহিত আসারওয়ার নামের দুজন পুলিশ সদস্য এ কাজে তাঁর ভাইদের উসকানি দিয়েছিলেন। তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আগেও অপরাধে জড়িত থাকার রেকর্ড ছিল বলে জানা গেছে।
আঁচল বলেন, ‘সক্ষমকে যেদিন হত্যা করা হয়, সেদিন বেলা ১১টার দিকে আমার ছোট ভাই আমাকে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে সক্ষমের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিতে বলে, যা ছিল মিথ্যা। আমি তাতে রাজি হইনি।’
মহারাষ্ট্রের এই তরুণী বলেন, ‘তখন পুলিশ আমার ভাইকে বলে, “তুমি তো মানুষ খুন করার পরেও এখানে আসো। তোমার বোন যাঁর সঙ্গে প্রেম করেন, তাঁকে মেরে ফেলো না কেন?”’
আঁচল বলেন, ‘পুলিশের কথার জবাবে আমার ভাই বলে, “ঠিক আছে, সন্ধ্যার মধ্যেই তাকে মেরে আপনাদের কাছে হাজির হব।”’
সক্ষমকে যেভাবে হত্যা করা হয়
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন সক্ষম। তখন আচঁলের ভাই হিমেশ মামিদওয়ারের সঙ্গে তাঁর কথা–কাটাকাটি হয়, যা শেষ পর্যন্ত মারামারিতে রূপ নেয়। হিমেশ একপর্যায়ে ২০ বছর বয়সী সক্ষমকে গুলি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। গুলিটি তাঁর পাঁজরে লাগে। এরপর হিমেশ তাঁর মাথায় টাইলস দিয়ে আঘাত করে ঘটনাস্থলেই তাঁকে মেরে ফেলেন।
এ ঘটনায় হিমেশ, তাঁর ভাই সহিল, তাঁদের বাবা গজনান মামিদওয়ার এবং আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে হত্যা, দাঙ্গাসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়েছে।
শেষকৃত্য রূপ নেয় বিয়েতে
পরদিন সন্ধ্যায় শুক্রবার সক্ষমের শেষকৃত্যের প্রস্তুতি চলছিল। আঁচল তখন সক্ষমের বাড়িতে গিয়ে সিঁদুর পরে সক্ষমের মরদেহকে ‘বিয়ে’ করেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘তিন বছর ধরে সক্ষমের সঙ্গে প্রেম করেছি। কিন্তু জাতপাতের পার্থক্যের কারণে আমার বাবা এ সম্পর্কের বিরোধিতা করেছিলেন। আমার পরিবার প্রায়ই সক্ষমকে হত্যার হুমকি দিত। আর এখন আমার ভাই ও বাবা সেটাই করে ফেলেছেন। আমি বিচার চাই। আমি চাই অভিযুক্তদের ফাঁসি হোক।’
আঁচল বলেন, এখন থেকে তিনি সক্ষমের পরিবারের সঙ্গে থাকবেন।
‘জাতপাতের কারণে হত্যা’
আঁচল জানিয়েছেন, পরিবার বলে দিয়েছে তাঁর জন্য বাড়ির দরজা চিরতরে বন্ধ। তিনি বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে জাতপাতের কারণে। আমার বাবা ও ভাইয়েরা বলতেন, “আমরা গ্যাংস্টার, সক্ষম তা জানে। সে কীভাবে আমাদের মেয়ের সঙ্গে কথা বলার সাহস পায়?”’
আঁচল বলেন, সক্ষমের পরিবার তাঁকে মেনে নিয়েছে। তিনি আজীবন তাদের সঙ্গেই থাকবেন। তিনি ন্যায়বিচার পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।
এই তরুণী বলেন, ‘অনেক মানুষ আমার পাশে রয়েছে। জাতের কারণে কাউকে হত্যা করা উচিত নয়।’