পাবনায় আবার স্পিডবোটে এসে নদীসংলগ্ন স্বর্ণের দোকান, ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি
Published: 4th, December 2025 GMT
পাবনায় আবার স্পিডবোটে এসে নদীসংলগ্ন বাজার ও এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার গভীর রাতে ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
বাজারের ব্যবসায়ীদের দাবি, ডাকাত দল বাজারের পাঁচটি সোনার দোকান ও এক ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে অন্তত ৪০ ভরি স্বর্ণালংকার এবং প্রায় এক কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। ঘটনার পর থেকে তাঁরা আতঙ্কে আছেন।
এর আগে গত ২৪ নভেম্বর পাবনার বেড়া উপজেলার যমুনাপাড়ের নাকালিয়া বাজারে একই কায়দায় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এদিন ডাকাত দল বাজারের ৪টি দোকান থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
অষ্টমনিষা বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, রাত পৌনে দুইটার দিকে ১০–১৫ জনের একটি ডাকাত দল গুমানী নদী দিয়ে স্পিডবোটে এসে বাজারে ঢুকে পড়ে। তাদের হাতে অস্ত্র ছিল। কারও কারও হাতে দোকানের তালা কাটার যন্ত্র দেখা গেছে। তারা এসে প্রথমেই বাজারের দুই নৈশপ্রহরীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে ফেলে। এরপর দোকানের তালা ভেঙে পাঁচটি সোনার দোকান লুট করে। পরে বাজারের পার্শ্ববর্তী এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি করে। ডাকাত দল ওই বাড়ির লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মারধর ও লুটপাট চালায়। পরে আরেক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করলে ব্যর্থ হয়ে ভোর চারটার দিকে স্পিডবোট নিয়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়দের দাবি, ডাকাতদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র ছিল। কিছুতেই তাদের প্রতিরোধ করা সম্ভব ছিল না। আতঙ্কে কেউ বাড়ি থেকে বের হচ্ছিলেন না।
তপন জুয়েলার্সের মালিক তপন কর্মকার বলেন, ‘আমার দোকানে বেশ কয়েক লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার ছিল। কত ভরি সোনা ছিল, তা–ও বলতে পারতেছিনে। আমার সব শেষ হয়ে গেছে।’
রতন জুয়েলার্সের মালিক রতন কর্মকারের দাবি, তাঁর দোকান থেকে ডাকাতেরা সোনা ও পাঁচ লাখ টাকা এবং তাঁর বাড়ি থেকে ১০ ভরি সোনা ও ১৫ লাখ টাকা লুট করে। এ ছাড়া মধু জুয়েলার্স, মা জুয়েলার্স ও আঁখি জুয়েলার্স থেকেও বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও টাকা লুট করা হয়।
রতন কর্মকার জানান, ডাকাতেরা দোকানে লুটপাট শেষে তাঁর বাড়িতে হানা দেয়। এরপর দরজা ভেঙে অস্ত্রের মুখে তাঁর স্ত্রী-সন্তানকে জিম্মি করে মারধর শুরু করে। তিনি তিনতলায় গিয়ে লুকিয়ে কয়েকজন প্রতিবেশীকে ফোন দেন। কিন্তু অস্ত্রের ভয়ে কেউ আসেন না। এর মধ্যেই ডাকাতেরা তাঁর বাড়িতে লুটপাট চালায়।
ব্যবসায়ী দীপক কর্মকার জানান, ডাকাতেরা তাঁর বাড়িতেও ডাকাতির চেষ্টা করে। তবে ভেতরে কোনোভাবেই ঢুকতে না পেরে পরে চলে যায়।
আরও পড়ুনপাবনার বেড়ায় স্পিডবোটে এসে বাজারে ডাকাতি, আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা২৫ নভেম্বর ২০২৫ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। কিন্তু তার আগেই ডাকাতেরা পালিয়ে যায়। ঘটনার পর জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টির তদন্তে থানা–পুলিশের পাশাপাশি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) কাজ শুরু করেছে। দ্রুত ডাকাত দলকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস য় র ব ড় ত ক ব যবস য় র ব ড় ড ক ত দল ল ট কর স বর ণ
এছাড়াও পড়ুন:
বিপিএলের আগে মুমিনুলকে সিডনিতে খেলার সুযোগ দিলেন হাথুরুসিংহে
-চন্ডিকা হাথুরুসিংহে তাহলে আপনার এখন সবচেয়ে প্রিয় মানুষ?
- এই- যে আবার শুরু হয়ে গেছে…
ফোনের ওপাশে মুমিনুল হকের হাসি থামে না। বলতে থাকেন, ‘এগুলো বানানো কথা।’ কোনটা বানানো, কোনটা অপ্রিয় কিংবা কোনটা প্রিয় সেগুলো মাঠে নিয়মিত যারা খোঁজ খবর রাখেন তারা সবটাই জানেন। যেমন-এটা সত্য হাথুরুসিংহে ও মুমিনুলের রসায়ন এখন দারুণ। দারুণ পেশাদার।
তেমনি এটাও সত্য- হাথুরুসিংহের প্রথম অধ্যায়ে দুজনের সম্পর্ক শীতল ছিল না। তাদের রসায়ন খুব একটা জমেনি। মুমিনুল সেরা সময়ে ছিলেন। তার ব্যাটিং গড় ছিল পঞ্চাশ পেরিয়ে। কিন্তু হাথুরুসিংহের সময়ে মুমিনুল নিজেকে হারিয়ে খুঁজেছেন। ফর্ম হারিয়েছেন। ব্যাটিংয়ে রান ভুলেছিলেন। শিষ্যের ভুল না শুধরে উল্টো সমালোচনা করেছিলেন হাথুরুসিংহে। শর্ট বল খেলতে পারেন না, মুমিনুলকে নিয়ে এমন কথাও বলেছিলেন।
সময়ের স্রোতে দুজনের সম্পর্ক, রসায়ন এখন তুঙ্গে। পুরোনো শিষ্যর সঙ্গে হাথুরুসিংহের বোঝাপড়া দারুণ। তাইতো সিডনিতে তাকে খেলার সুযোগও করে দিয়েছেন তিনি। সিডনিতে গ্রেড ওয়ান ক্রিকেটের দল ব্ল্যাকটাউনের হয়ে খেলতে আগামীকাল বুধবার অস্ট্রেলিয়ায় উড়াল দিচ্ছেন মুমিনুল।
প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই প্রতিযোগিতা সিডনিতে বেশ জনপ্রিয়। ২৩ বছর ধরে ব্ল্যাকটাউন ক্লাব প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। এই ক্লাবের হয়েই একদিনের ম্যাচ ও দুই দিনের ম্যাচ খেলার কথা ছিল মুমিনুল হকের। লম্বা সময় থাকার পরিকল্পনা ছিল তার। কিন্তু বিপিএলে দল পেয়ে যাওয়ায় সূচিতে পরিবর্তন এনেছেন।
আপাতত মুমিনুল খেলবেন তিনটি একদিনের ম্যাচ। এরপর দেশে ফিরে সিলেট টাইটান্সের হয়ে খেলবেন বিপিএল। পরে সুযোগ হলে আবার দিতে চান উড়াল।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগেও মুমিনুল অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিলে ব্যক্তিগত কাজে। কাজের ফাঁকেই হাথুরুসিংহের সঙ্গে কয়েকটি সেশন করেছেন। নিবিড়ভাবে কাজ করে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছেন। এবারও তেমন পরিকল্পনা করেই লম্বা সময় সিডনিতে থাকতে চেয়েছিলেন। এপ্রিলের আগে বাংলাদেশের টেস্ট নেই। মুমিনুলের আশা বিপিএলের পরও সময় পাওয়া যেতে পারে।
রাইজিংবিডিকে মুমিনুল বলেছেন, ‘‘অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছি। হাথুরুসিংহে একটা ক্লাবে খেলার সুযোগ করে দিয়েছেন। আপাতত তিনটা একদিনের ম্যাচ খেলবো। বিপিএলে দল পাবো কিনা নিশ্চিত ছিলাম না। যেহেতু পেয়েছি বিপিএলও খেলবো। হাথুরুসিংহে খেলার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। তার সঙ্গে আগেই আমার যোগাযোগ ছিল।’’
‘‘আয়ারল্যান্ড সিরিজের আগে তার সঙ্গে আমার কাজ করা হয়েছে। বেশ ভালো কয়েকটি সেশন কাটিয়েছি। ব্যাটিংটা করে উপভোগ করেছি। হয়তো আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি পেলে পূর্ণতা পেত। কিন্তু যেটা হয়েছে তা আলহামদুলিল্লাহ। এবারও তার সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান সেশন করবো। বিপিএল খেলি। এরপর সুযোগ হবে আশা করি। তখন আবার যাওয়া যাবে।’’ - বলেছেন মুমিনুল।
চট্টগ্রাম/ইয়াসিন