মাদারীপুরে দীপ্তি হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
Published: 21st, October 2025 GMT
মাদারীপুরে মাদ্রাসাছাত্রী দীপ্তিকে ধর্ষণ ও হত্যার মামলায় ইজিবাইকের চালক মো. সাজ্জাদ হোসেন খানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এর পাশাপাশি তাকে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে মাদারীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শরীফ এ এম রেজা জাকের এ রায় ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
মাদক বিক্রির প্রতিবাদ করায় ট্রাকচালককে হত্যা, প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যার বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে
রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মামলার সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট শরীফ সাইফুল কবীর। তিনি জানিয়েছেন, দীর্ঘ ছয় বছর বিচারিক কার্যক্রম শেষে আদালত অভিযুক্ত সাজ্জাদ হোসেনকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই মাদারীপুর শহরের পূর্ব খাগদী এলাকার একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে অজ্ঞাত এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন নিহতের বাবা মজিবর ফকির লাশটি শনাক্ত করে জানান, সেটি তার মেয়ে দীপ্তি (১৫)।
ঘটনার পর মজিবর ফকির মাদারীপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করলে তদন্তে নামে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৮। তদন্তে জানা যায়, ইজিবাইক চালক সাজ্জাদ হোসেন খান দীপ্তিকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন।
সাজ্জাদ হোসেন এর আগেও শিশু হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ছিলেন। তিনি ২০১১ সালে মুক্তি পান। ২০১৯ সালের ১১ জুলাই বৃষ্টির দিনে দীপ্তি তার ইজিবাইকে ওঠেন চর মুগরিয়া যাওয়ার জন্য। অন্য কোনো যাত্রী না থাকায় সাজ্জাদ জোর করে দীপ্তিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও হত্যা করেন। পরে মরদেহ বিদ্যুতের তার দিয়ে বেঁধে কয়েকটি ইটসহ পুকুরে ফেলে দেন।
দুই দিন পর লাশটি ভেসে উঠলে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও দ্রুত বিচারের দাবিতে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা।
দীপ্তির বাবা মজিবর ফকির রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, “আমার মেয়ের হত্যাকারী আজ আইনের কাছে জবাবদিহি করেছে। আমরা এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেয়েছি।”
পিপি শরীফ সাইফুল কবীর বলেন, “এটি ছিল অত্যন্ত নৃশংস হত্যা ও ধর্ষণের মামলা। আদালত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমরা রায়ে সন্তুষ্ট।”
দীপ্তি মাদারীপুর সদর উপজেলার চর নচনা গ্রামের মজিবর ফকিরের মেয়ে। সে বলাইর চর শামসুন্নাহার বালিকা মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
ঢাকা/বেলাল/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যাঁরা জাতির ভবিষ্যৎ গড়েন, তাঁদের সুবিধা দিতে কেন পিছুটান দেখাই রাশেদা কে চৌধূরী
দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা টানা ১০ দিন ধরে ঢাকার রাস্তায় আন্দোলন করেছেন বাড়িভাড়া ও অন্যান্য সুবিধা বাড়ানোর দাবিতে। এ সময়ে সরকারের নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে নানা ধরনের বক্তব্য এসেছে; কিন্তু কার্যকর পদক্ষেপের ঘাটতি ছিল স্পষ্ট। শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরারকে ধন্যবাদ জানাই—তিনি নিজেও একজন শিক্ষক হিসেবে বিষয়টি অনুধাবন করে অর্থ বিভাগে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন এবং বিভিন্ন পর্যায়ে উদ্যোগও নিয়েছেন। কিন্তু জানা গেছে, প্রস্তাবটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে গিয়ে আটকে ছিল।
শিক্ষা পরিবারের একজন সদস্য হিসেবে আমার প্রশ্ন, সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বেতন–ভাতা বাড়াতে যখন বেতন কমিশন হয়, তখন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক–কর্মচারীদের বিষয়টি কেন গুরুত্ব পায় না? তাঁদের জন্য আলাদা বেতন কমিশন গঠন করা যেতে পারে। সরকারি কর্মচারীদের সুযোগ–সুবিধা ক্রমেই বাড়ছে, অথচ যাঁরা জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণের কারিগর, তাঁদের ক্ষেত্রে কেন পিছুটান দেখা যায়—এটাই দুঃখজনক।
আরও পড়ুনএমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া বাড়ছে ১৫ শতাংশ, কার্যকর দুই ধাপে২ ঘণ্টা আগেনানা চ্যালেঞ্জের মধ্যেও অন্তর্বর্তী সরকার এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ১৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত (দুই ধাপে কার্যকর হবে) নিয়েছে—এর জন্য তাঁদের ধন্যবাদ। আশা করব, আগামীতে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক, তারা যেন শিক্ষক–কর্মচারী ও শিক্ষাকে রাজনৈতিক দৃষ্টিতে না দেখে, মানবসম্পদ গঠনের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করে।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের প্রতিশ্রুতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে শোনা যাচ্ছে। সক্ষমতা অনুযায়ী সেটি করা যেতে পারে, তবে শুধু জাতীয়করণই সমস্যার পূর্ণ সমাধান নয়। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের দিকও ভাবতে হবে।
বাড়ি ভাড়া বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে ১২ অক্টোবর থেকে আন্দোলন করছেন এমপিওভূক্ত শিক্ষক–কর্মচারিরা