চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আলাওল হল প্রাধ্যক্ষের বিরুদে হল সংসদের নবনির্বাচিত রিডিংরুম, ডাইনিং ও হল লাইব্রেরি সম্পাদককে নিজের টাকায় ইশতেহার পূরণ করতে বলার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযুক্ত হল প্রাধ্যক্ষের নাম অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ এনামুল হক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক।

আরো পড়ুন:

জোবায়েদ হত্যার বিচার যেন গ্রেপ্তারেই সীমাবদ্ধ না থাকে: জবি উপাচার্য

৩ দাবিতে রাবি চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগে শাটডাউন

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুর ৪টায় রাইজিংবিডি ডটকমকে বিষয়টি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী হল সম্পাদক শিহাবুর রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। 

অভিযোগে তিনি বলেন, “আমি আজ (মঙ্গলবার) স্যারকে বলেছিলাম- আমাদের হল লাইব্রেরির জন্য নির্বাচনের আগে কিছু চেয়ার এসেছিল, সেগুলো এখন দেখতে পাচ্ছি না; চেয়ারগুলো এখন কোথায় আছে? তিনি বললেন- ‘তুমি অফিসে জিজ্ঞেস করনি? তুমি এত প্রশ্ন করছো কেন? তুমি আমাকে বলার কে?’ পরে আমি আমার পরিচয় দিয়েছি। স্যারের কথা বলার ধরণ অস্বাভাবিক ছিল।”

তিনি আরো বলেন, “এরপর বলছিলাম- ‘স্যার, আমাদের লাইব্রেরিতে বইয়ের সংখ্যা খুবই কম।’ এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তোমাদের সব ইশতেহার পূরণ করতে পারব না। বিভিন্ন জায়গা থেকে ফান্ড ম্যানেজ করে নিজের টাকায় ইশতেহার পূরণ করবা।”

অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক ড.

এনামুল হক বলেন, “আমিও হল সংসদের সভাপতি, সে-ও আমার বডির একজন সদস্য। সে যদি আমার ব্যাপারে এমন অভিযোগ করে থাকে, তাহলে বিষয়টা নিয়ে হল সংসদের সবাই আগামীকাল একসঙ্গে বসে আলোচনা করব। আমরা তো সবাই এক পরিবারের অংশ। আমাদের মধ্যে কোনকিছু হলে সেটা আমরা নিজেদের মধ্যে সমাধান করব।”

হল প্রাধ্যক্ষ্যের বিরুদ্ধে এর আগে হলের শিক্ষার্থীদের থেকে অভিযোগ উঠেছিল, তিনি দু-তিন মাসে একবার হলে যান। হলটিতে পানি-ওয়াইফাই সেবাসহ বিভিন্ন সমস্যা থাকলেও তিনি এসবের খোঁজ রাখেন না।

এ বিষয়ে গত আগস্ট মাসে এই প্রতিবেদক অধ্যাপক এনামুল হককে মোবাইলে কল করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এসব বিষয়ে তুমি আমাকে জিজ্ঞেস না করে অফিসে জিজ্ঞেস করো। তুমি আমাকে কল করার কে? তুমি কোন পত্রিকার সাংবাদিক সেটা আমি দেখব। তুমি বিভাগে কাগজপত্র নিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করো।”

পরে বিভাগের গিয়ে তাকে পাওয়া না গেলে কল দিলে তিনি তার বক্তব্যের জন্য প্রতিবেদকের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন। একইসঙ্গে জানান, হলের সমস্যা সমাধানে তিনি কাজ করছেন।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আনন্দ মোহন কলেজের চলমান সংকট নিরসনের দাবি

ময়মনসিংহ নগরের আনন্দ মোহন কলেজের চলমান সংকট নিরসনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আজ দুপুর ১২টার দিকে মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

কলেজ চত্বরে মিছিল করে কলেজের প্রধান ফটকের সামনে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ সারোয়ার। সংবাদ সম্মেলনে কলেজের ভবিষ্যৎ, শিক্ষার মান, শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা ও কলেজের প্রশাসনিক সমস্যার সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান জানানো হয়।

রিয়াদ সারোয়ার বলেন, দুই মাস ধরে কলেজে অধ্যক্ষ না থাকায় প্রশাসনিক শৃঙ্খলা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। নবনির্মিত হিন্দু হলটি এখনো চালু হয়নি। হিন্দু শিক্ষার্থীরা তাঁদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, যা বৈষম্যমূলক। শিক্ষার্থীদের প্রশংসাপত্র ও ছাড়পত্র উত্তোলনসহ অন্যান্য কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অধ্যক্ষ না থাকায় কলেজের সার্বিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। সন্ধ্যার পর কলেজ প্রাঙ্গণে মাদকসেবীরা অবস্থান করেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাত দফা দাবি উপস্থাপন করেন ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী রাসেল আহমেদ। দাবিগুলো হলো অবিলম্বে অধ্যক্ষ পদায়ন, পদায়নের আগপর্যন্ত কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে জেলা প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ, পদায়নপ্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষতা, হিন্দু হল দ্রুত চালু, প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতকরণ, ছিনতাইকারী ও মাদকসেবীদের দমনে যথাযথ ব্যবস্থা এবং কলেজ ক্যাম্পাসে একটি পুলিশ বক্স স্থাপন করা।

প্রসঙ্গত, আনন্দ মোহন কলেজের অধ্যক্ষ আমান উল্লাহকে গত ৩১ জুলাই ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করায় ৩ আগস্ট বিকেলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন উপাধ্যক্ষ সাকির হোসেন। তাঁর অপসারণ দাবিতে ১২ আগস্ট থেকে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ আন্দোলন শুরু করে। অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের দুটি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন তাঁরা। ১৮ আগস্ট কলেজের নতুন একাডেমিক ভবনের ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগে একাডেমিক কাউন্সিল ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা ডাকা হয়। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কলেজের ভেতরে শিক্ষকদের নিয়ে সভা করছেন—এই খবরে শিক্ষার্থীরা ফিন্যান্স বিভাগেও তালা ঝুলিয়ে দেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাদা কাগজে লেখেন, ‘আনন্দ মোহন কলেজের চলমান সংকট উত্তরণ না হওয়া পর্যন্ত আমি কোনো প্রকার দায়িত্ব পালন করব না’। এরপর পুলিশি পাহারায় কলেজ ত্যাগ করেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাকির হোসেন। এর পর থেকে তিনি আর কলেজে যেতে পারছেন না।

এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাকির হোসেন বলেন, ‘আমিও চাই কলেজের চলমান সংকট নিরসন হোক। কিন্তু শিক্ষার্থীরা যে আমার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে, আমার ত্রুটি কোথায়? আমার কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই, কারও পক্ষপাতিত্ব করেছি এমনও না। তাহলে কেন বিনা কারণে তারা এমন করল? আমি চাই, আমি থাকি বা না থাকি, কলেজটি ভালোভাবে চলুক।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ