মাছ রক্ষার জন্য মা মাছ ধরা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

তিনি বলেছেন, “আমাদের নদী ও সাগরে জেলেরা যেসব মাছ ধরে, তা প্রাকৃতিক। এই মাছগুলো আমরা যদি রক্ষা না করি, তাহলে আগামীতে মাছ পাব না। তাই মাছ ধরার নিষিদ্ধ সময়ে আইন মানতে হবে। আইন মানলে প্রকৃতপক্ষে লাভবান হবে জেলেরা।” 

আরো পড়ুন:

অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের জরুরি ও সমন্বিত কার্যক্রম শুরু

তামাক দূর করতে পারব না কেন, প্রশ্ন মৎস্য উপদেষ্টার

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির ১২তম জাতীয় সম্মেলন-২০২৫ এ প্রধান  অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মৎস্যজীবীদের উদ্দেশ্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, “আপনারাই এই দেশের মানুষকে মাছ খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখছেন। আপনারা ক্ষুদ্র নন, বরং দেশের এক বৃহৎ জনগোষ্ঠী। আমরা শুধু ভাত খাই না—মাছ, শাক, তরকারিও খাই। মৎস্যজীবীরা যদি মাছ না ধরেন, আমরা কেউই মাছ খেতে পারব না। আপনারা পরিশ্রম করে সবার খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন—এটিকে ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই।”

তিনি বলেন, “ভারত যাতে আমাদের সীমানায় এসে মাছ ধরে না নিয়ে যায়, সেজন্য কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কাজ করতে হবে। মাছ ধরা নিষিদ্ধ সময়ে ভিজিএফের চালের পরিমাণ বাড়াতে খাদ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ করা হয়েছে। সরকারে যে পর্যন্ত আছি আপনাদের জন্য কাজ করে যাব।”

তিনি আরো বলেন, “জেলেদের জন্য আগামীতে অন্তত ৫০ কেজি চাল দেওয়া যায়, সে লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। তবে ভিজিএফের সঙ্গে আর্থিক সহায়তা দেওয়া যায় কিনা তা নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।”

মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, “জেলেদের জন্য দাদন একটি বড় সমস্যা, যা তাদের দারিদ্র্যের চক্রে আবদ্ধ করে রাখে। এ সমস্যা নিরসনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হলে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, স্বল্প সুদে বিকল্প পদ্ধতিতে জেলেদের ঋণ প্রদান করার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, যাতে তারা দাদনের উপর নির্ভরশীল না থাকে।”

উপদেষ্টা আরো বলেন, “প্রতিটি দুর্যোগে অনেক জেলে নিখোঁজ হন বা প্রাণ হারান। কিন্তু তাদের স্বজনরা জানেন না—তারা জীবিত না মৃত। ফলে এসব পরিবার কোনো সহায়তাও নিতে পারেন না। এই সমস্যা সমাধানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে, যাতে নিখোঁজ জেলেদের পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি কার্যকর সহায়তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়।”

নদীতে চর জেগে ওঠায় মাছের প্রজনন ও চলাচলে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের নিজস্ব ড্রেজিং সক্ষমতা না থাকলেও নৌপরিবহন ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছি। তারা আশ্বস্ত করেছেন যে, শুষ্ক মৌসুমে প্রয়োজনীয় ড্রেজিং কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন।”

সম্মেলনে বক্তারা মৎস্যজীবীদের ন্যায্য অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিতের লক্ষ্যে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছেন। এসব দাবি বাস্তবায়িত হলে জেলে সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নত হবে এবং তাদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে বলে জানান বক্তারা।

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— ২০১৩ সালের পরিপত্র বাতিল করে ২০০৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল করা; খাদ্য ও অন্যান্য ত্রাণসামগ্রী বিতরণের ক্ষেত্রে তালিকা ও মাস্টার রোলে মৎস্যজীবী প্রতিনিধির স্বাক্ষর নিশ্চিত করা; মৎস্যজীবীদের নামে একটি বিশেষায়িত ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা; ভিজিএফ সহায়তা ৪০ কেজির পরিবর্তে ৬০ কেজি চাল এবং নগদ দুই হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া; নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে কোনো জেলে মৃত্যুবরণ করলে তার পরিবারকে এককালীন ৫ লাখ টাকা পুনর্বাসন সহায়তা প্রদান এবং কোস্টগার্ড, নৌ–পুলিশ ও মৎস্য বিভাগের অভিযানে মৎস্যজীবী সমিতির মনোনীত মাঝিকে অন্তর্ভুক্ত করা।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসরাইল খলিল পন্ডিতের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য দেন, মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক ড.

মো. মোতালেব হোসেন, বিজিবি ট্রাইব্যুনালের সহকারী এটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এম হেলাল উদ্দিন, বরিশাল জজ কোর্টের অ্যাডিশনাল পিপি অ্যাডভোকেট মো. হুমায়ুন কবির, বাংলাদেশ সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোসাদেক হোসেন স্বপন, বাংলাদেশ সংযুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোকাদ্দেম হোসেন, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল মীর, জেলে সমিতির সদস্য তাছলিমা বেগম।

দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির সদস্যরা এতে উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র জন য উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে এমএ প্রোগ্রাম, যোগ্যতা অনার্স ডিগ্রি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে স্প্রিং-২০২৬ সেশনে দুটি ইংরেজি প্রফেশনাল এমএ প্রোগ্রামে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

দুটি ইংরেজি এমএ প্রোগ্রাম—

১. এমএ ইন ইংলিশ (লিটারেচার অ্যান্ড কালচারাল স্টাডিজ),

২. এমএ ইন ইংলিশ (অ্যাপ্লায়েড ল্যাঙ্গুইজ অ্যান্ড ইএলটি)।

আরও পড়ুনসহকারী শিক্ষকদের বেতন গ্রেড ১১ করতে মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব, হলে কত টাকা লাগবে২০ ঘণ্টা আগেপ্রোগ্রামের তথ্য—

-সেমিস্টার সিস্টেম: ১৮ মাস।

-ক্রেডিট: ৪৮।

- শুক্র ও শনিবার ক্লাস।

আবেদনের যোগ্যতা লাগবে —

১. যেকোনো বিভাগে ব্যাচেলর (অনার্স) ডিগ্রি,

২. বিএ (পাস)সহ এক বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

৩. মোট ৬ পয়েন্ট থাকতে হবে।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রে কোথায় পড়বেন: সিদ্ধান্ত নিতে মনে রাখুন ‘থ্রি–সি’০৯ নভেম্বর ২০২৫আবেদন করার লিংক —

অনলাইনে আবেদন করতে হবে লিংকে প্রবেশ করে।

ভর্তির বিস্তারিত তথ্য—

১. আবেদনের শেষ তারিখ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫।

২. ভর্তির লিখিত পরীক্ষা হবে: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, সকাল ১০টা।

৩. মৌখিক পরীক্ষা হবে: ১৯ ডিসেম্বর, বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে।

৪. ভর্তির পরীক্ষার ফলাফল: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫।

৫. ভর্তির তারিখ: ২১ থেকে ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫।

৬. ক্লাস শুরুর তারিখ: ৯ জানুয়ারি ২০২৬।

# বিস্তারিত তথ্যের জন্য ওয়েবসাইট

আরও পড়ুনএইচএসসি পরীক্ষা ২০২৬: আপাতত নির্বাচনী পরীক্ষা নয়, চলবে ক্লাস২১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ