২০২১ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সিদ্ধান্ত অনুসারে ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি (লিস্ট ডেভেলপড কান্ট্রি) থেকে উত্তরণ হওয়ার কথা। এ পরিপ্রেক্ষিতে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ বিলম্বিত করার বিষয়টি গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন গোষ্ঠী, বিশেষ করে ব্যবসায়ী মহলের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে, গুরুত্বের সঙ্গে আলোচিত হচ্ছে।

এলডিসি উত্তরণ বাংলাদেশকে বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে এবং এগুলো মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশের কিছু বাড়তি সময় প্রয়োজন বলে স্বার্থসংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দিক থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়টিও এ পটভূমিতে সামনে চলে এসেছে।

স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত বাজার-সুবিধা, ওষুধশিল্প খাতে মেধাস্বত্ব আইনের প্রয়োগের ক্ষেত্রে ছাড়, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিভিন্ন চুক্তির বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিশেষ এবং বিভাজিত সুবিধা (যেমন বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার বিভিন্ন চুক্তির অধীন বাধ্যবাধকতার প্রলম্বিত বাস্তবায়ন, প্রণোদনা ও ভর্তুকি সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে নমনীয় দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি) এবং স্বল্পোন্নত দেশের বাণিজ্যসক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রদত্ত আর্থিক ও কারিগরি সহায়তাসহ বিবিধ সুবিধা ভোগ করে আসছে।

এলডিসি উত্তরণের ফলে এসব সুবিধা আর থাকবে না; তখন আন্তর্জাতিক বাজারে এসব সুবিধাভোগী খাতসমূহের প্রতিযোগিতা সক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ার যে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে, তা অমূলক নয়। এলডিসি উত্তরণের জন্য আরও কিছু বাড়তি সময় পেলে লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই, এটা বোধগম্য। কিন্তু এ প্রসঙ্গে চারটি প্রশ্ন গভীরতর পর্যালোচনার দাবি রাখে।

প্রথমত, এলডিসি উত্তরণ পেছানোর এ দাবি পূরণের সম্ভাবনা কতটা বাস্তবসম্মত?

দ্বিতীয়ত, উত্তরণের লক্ষ্যে গৃহীত প্রস্তুতিমূলক কর্মকাণ্ডের বর্তমান অবস্থা কী?

তৃতীয়ত, যদি কয়েক বছরের জন্য উত্তরণ পেছানো সম্ভবও হয় তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সময়টুকু কীভাবে সর্বোত্তমভাবে কাজে লাগানো যায়?

চতুর্থত, এলডিসি উত্তরণ পেছানো যদি সম্ভব হয়, তাহলে এই অজুহাতে প্রস্তুতিমূলক কর্মকাণ্ডে অবহেলার আশঙ্কা আছে কি?

জাতিসংঘের সিডিপি ও ইকোসকের সুপারিশের পটভূমিতে ২৪ নভেম্বর ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে বাংলাদেশের এলডিসি থেকে উত্তরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এটা কার্যকর হওয়ার কথা ২৪ নভেম্বর ২০২৬ সালে (কোভিডের কারণে সব এলডিসির উত্তরণ দুই বছর বিলম্বে কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়)। বাংলাদেশের সঙ্গে কিছু দেশ একই সময়ে এলডিসি উত্তরণ করবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

এলডিসি উত্তরণ পেছানোর যুক্তি ও যৌক্তিকতা

গত সরকারের আমলেই বাংলাদেশের রপ্তানিমুখী কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী সম্প্রদায় এলডিসি উত্তরণ কয়েক বছর পিছিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন। এলডিসি উত্তরণের সময় আরও কাছে আসার পটভূমিতে এ দাবি বর্তমানে আরও জোরালো হচ্ছে; যদিও কথাটি হওয়া উচিত: ‘সরকারের পক্ষ থেকে আবেদন করার দাবি’। কারণ, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের, বাংলাদেশ সরকারের নয়। সরকার কেবল আবেদন করতে পারে।

সাম্প্রতিককালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ‘উত্তরণ যথাসময়ে হবে’ পূর্বঘোষিত এ অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছে বলে মনে হয়। কিছুদিন আগে বাণিজ্যসচিব বলেছেন, যদি উত্তরণ তিন বছরের মতো পেছানো যায়, তা দেশের জন্য ইতিবাচক হবে। প্রধান উপদেষ্টার সাম্প্রতিক জাতিসংঘ সফরের সময় বাংলাদেশের এলডিসি প্রস্তুতির আলোচনার প্রাসঙ্গিকতায় উত্তরণ পেছানোর আবেদনের সম্ভাবনার বিষয়টি আবার উঠে এসেছে।

এলডিসি উত্তরণ পেছানোর উদাহরণ

এটা ঠিক, কিছু কিছু স্বল্পোন্নত দেশের ক্ষেত্রে চূড়ান্তভাবে এলডিসি উত্তরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও পরে বিভিন্ন কারণে উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।

জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মালদ্বীপের উত্তরণের কথা ছিল ২০০৫ সালে। কিন্তু অর্থনৈতিক ও জলবায়ু ঝুঁকিসম্পর্কিত বিবেচনার কারণে এবং মালদ্বীপের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরণ পিছিয়ে তা কার্যকর হয় ২০১১ সালে।

জাতিসংঘের সিডিপির ২০১২ সালের মূল্যায়ন প্রতিবেদনে টুভালু এবং ২০১৮ সালের মূল্যায়নে কিরিবাতির এলডিসি উত্তরণের সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু ইকোসক জলবায়ু ঝুঁকির কারণে ওই সুপারিশকে গ্রহণযোগ্য ও বাস্তবসম্মত মনে করেনি।

অ্যাঙ্গোলার উত্তরণ হওয়ার কথা ছিল ২০২১ সালে; কিন্তু সে সময় দেশটির আর্থসামাজিক বিভিন্ন সূচকের অবনমনের কারণে (মূলত বিশ্ববাজারে তেলের মূল্য পতনজনিত) দেশটির উত্তরণ অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে দেওয়া হয়।

সলোমন দ্বীপপুঞ্জের উত্তরণ ২০২৪ সালে হওয়ার কথা ছিল। বিশেষ বিবেচনায় এখন তা ২০২৭ সালে পুনর্নির্ধারিত হয়েছে।

উত্তরণ পেছানোর আবেদন প্রস্তুতির সম্ভাব্য কৌশল

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি এলডিসি উত্তরণ পেছানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তবে আবেদনের সপক্ষে বাংলাদেশকে যুক্তিসংগত কারণ উল্লেখ করতে হবে। উত্তরণের তিন মাপকাঠির নিরিখে বাংলাদেশের উত্তরণকে প্রশ্নবিদ্ধ করে যুক্তি দাঁড় করানো কঠিন হবে বলেই মনে হয়।

তথ্য-উপাত্তের বিশ্বাসযোগ্যতা শ্বেতপত্রে উত্থাপিত প্রশ্নের আলোকে ও পরামর্শের নিরিখে এসবের কোনো পর্যালোচনা, পুনর্মূল্যায়ন ও পরিবর্তন করা হয়নি; উত্তরণের সূচকসমূহও নতুনভাবে পরিমাপ করা হয়নি।

তবে একই সঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে যে সিডিপি-ইকোসক উত্তরণের মাপকাঠিগুলো বিবেচনার সঙ্গে সঙ্গে সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, অর্থনীতির কাঠামোগত প্রতিবন্ধকতাসমূহ, নতুন কোনো চ্যালেঞ্জ, উত্তরণ মসৃণ ও টেকসই করা বাধাগ্রস্ত হবে কি না—এসব বিষয়ও জাতিসংঘের পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত বাস্তবায়নের আগে পর্যালোচনা ও বিবেচনা করে থাকে।

যেসব স্বল্পোন্নত দেশের উত্তরণ নির্ধারিত (বা অনির্ধারিত) সময়ের জন্য পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এসব বিবেচনাই মূলত কাজ করেছে। বাংলাদেশকেও উত্তরণ মসৃণ ও টেকসই করার প্রয়োজনীয়তাকে প্রাধান্য দিয়ে যুক্তি দাঁড় করাতে হবে।

এটাও মনে রাখা প্রয়োজন যে যখন কোনো স্বল্পোন্নত দেশ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক সুপারিশকৃত হয়, তার পরে সংশ্লিষ্ট স্বল্পোন্নত দেশকে এসটিএস (স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্র্যাটেজি বা মসৃণ উত্তরণ কৌশল) প্রণয়ন করতে বলা হয়। এ কৌশল প্রণয়নে কাজে সিডিপি-ইকোসক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা সহায়তা প্রদান করে থাকে।

বাংলাদেশও অনুরূপ এসটিএস প্রণয়ন করেছে, যা বর্তমানে বাস্তবায়নাধীন। একই সঙ্গে সিডিপি ইএমএমের (এনহান্সড মনিটরিং মেকানিজম) মাধ্যমে এসটিএস বাস্তবায়নের অগ্রগতি উত্তরণের আগে ও উত্তরণের পরে পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করে থাকে।

অক্টোবরের মধ্যে বাংলাদেশকে এসটিএস বাস্তবায়নের প্রতিবেদন সিডিপির কাছে পাঠানোর কথা। নভেম্বরে মাসের শেষ সপ্তাহে বাংলাদেশের জন্য এই পর্যালোচনার অংশ হিসেবে একটি টিমের বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে। সরকার ও সিডিপির মধ্যে অক্টোবর-ডিসেম্বর সময়ে একটি ভার্চ্যুয়াল আলোচনাও হওয়ার কথা আছে। সিডিপির ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্লেনারি অধিবেশনে এসব প্রতিবেদনের পর্যালোচনা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাতিসংঘের হাই রিপ্রেজেনটেটিভ অ্যাম্বাসেডর রবাব ফাতিমার আলোচনার প্রাসঙ্গিকতায় একটি পর্যালোচনার কথা উঠে এসেছে। যে পর্যালোচনার প্রতিবেদন আগামী বছরের মধ্য-জানুয়ারির মধ্যে প্রস্তুত করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

এসব বিভিন্ন পর্যালোচনামূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে সমন্বয় কীভাবে করা হবে এবং তার পটভূমিতে সিদ্ধান্তের প্রক্রিয়াই-বা কী হবে, তা জানা ও স্পষ্ট করা অত্যন্ত জরুরি।

আবেদনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে বাংলাদেশকে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে হবে এবং এ-সংক্রান্ত বিভিন্ন পর্যালোচনায় অংশগ্রহণ করতে হবে। উত্তরণ বিলম্বের আবেদনের সপক্ষে শক্ত যুক্তি দাঁড় করাতে হবে।

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক অতীতে বড় রাজনৈতিক পরিবর্তন সংঘটিত হয়েছে, তার অভিঘাত অর্থনীতিতেও পড়েছে। গণতান্ত্রিক উত্তরণ নিশ্চিত করাই এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রধান কাজ। অর্থ পাচার, ব্যাংক খাতের বিশাল খেলাপি ঋণের বোঝাসহ নানা সমস্যা বাংলাদেশকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা পুনরুদ্ধারের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সংস্কার কর্মসূচির পেছনে অনেক সময় ব্যয় করতে হচ্ছে। এসব কারণে উত্তরণ টেকসই করার জন্য বাড়তি সময় প্রয়োজন। যুক্তি হিসেবে এসব কারণ উত্থাপন করা যায়।

এটা মনে রাখতে হবে যে ২০১২ সালে উত্তরণের দুটি সূচকে পরিবর্তন আনার ফলেই (মানবসম্পদ ও ভঙ্গুরতার সূচক) একই সঙ্গে এতগুলো স্বল্পোন্নত দেশ একই সময় উত্তরণের জন্য বিবেচিত হচ্ছে।

 বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ, জাতিসংঘের (১৯৯১ সালে গৃহীত) সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত স্বল্পোন্নত দেশের জনসংখ্যা ৭৫ মিলিয়নের বেশি হতে পারবে না। ফলে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ তাই একরৈখিকও বটে; পরে (যেকোনো কারণে) আবার এ গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ অন্তত বাংলাদেশের সামনে নেই।

অন্য কোনো দেশ যদি উত্তরণ পেছানোর আবেদন না করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে বাংলাদেশের একার এবং একক আবেদন দুর্বল হবে—এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। সে দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের এ বিষয়ে যোগাযোগ ও আলোচনা শুরুর সময় এখনই।

সব কটি দেশ সম্মিলিতভাবে উত্তরণ পেছানোর প্রস্তাব করলে সে আবেদন অবশ্যই অনেক শক্তশালী হবে। তাহলে দক্ষিণ এশিয়ায় যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ আফগানিস্তানের সঙ্গে এক কাতারে বাংলাদেশকে (আবেদন অনুমোদন হওয়া সাপেক্ষে) স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে থাকতে হবে না ।

বাংলাদেশ উত্তরণ পেছানোর আবেদনের সিদ্ধান্ত নিলে তার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে—এ কথা আগেই বলা হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশকে সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের সমর্থন পেতে হবে। যেসব উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ বাংলাদেশ ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন, তাদের সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশের জেনেভা মিশন, জাতিসংঘ মিশনসহ সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান ও অংশীজনকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে।

উত্তরণ বিলম্বিত যদি হয়ও, তা হবে সীমিত সময়ের জন্য, বড়জোর আরও তিন বছর যোগ হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যুক্তিসংগতভাবে উত্তরণের জন্য প্রস্তুতিকে প্রাধান্য দিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বাংলাদেশের প্রস্তুতির নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড.

আনিসুজ্জামান চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এসটিএসের বাস্তবায়নকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য। প্রস্তুতি কার্যক্রমে কোনোভাবেই শৈথিল্য দেখানো যাবে না।

বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ও নেতিবাচক হবে যদি টেকসই উত্তরণের লক্ষ্যে আশুকরণীয়সমূহ বাস্তবায়নে দুর্বলতা থেকে যায়; আর অন্যদিকে উত্তরণ পেছানোর আবেদনেও ইতিবাচক সাড়া ও সিদ্ধান্ত না পাওয়া যায়।

সুতরাং এলডিসি উত্তরণের প্রস্তুতি এবং টেকসই উত্তরণের লক্ষ্যে এসটিএসের বাস্তবায়নকে অগ্রাধিকার দিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। এর পাশাপাশি এলডিসি উত্তরণ পেছানোর জন্য সরকারের দিক থেকে আনুষ্ঠানিক আবেদনের সিদ্ধান্তের সাপেক্ষে তথ্য-উপাত্ত ও যুক্তিনির্ভর প্রতিবেদন প্রস্তুতির কাজও সমান্তরালভাবে চালিয়ে যেতে হবে। উভয় ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের সামনে সময় নিতান্তই কম।

অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান সম্মাননীয় ফেলো, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)

মতামত লেখকের নিজস্ব

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল দ শ র এলড স প রস ত ত র র র জন য র জন য প র লক ষ য দ শ র জন পটভ ম ত সরক র র হওয় র ক ত হয় ছ ট কসই র সময় ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ জসিমের মেয়ে লামিয়া ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ মো. জসিম উদ্দিনের মেয়ে লামিয়া ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। এ মামলার তিন আসামির মধ্যে দুইজনকে ১৩ বছর এবং অন্য জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক।

আরো পড়ুন: জুলাই বিপ্লবে শহীদ জসিমের মেয়েকে ‌সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, আটক ১

আরো পড়ুন:

খুলনায় প্রতারণা মামলায় কাজী গ্রেপ্তার 

মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে মা, ধর্ষণচেষ্টার মামলা করতে গিয়ে বাবা-ভাই কারাগারে

বুধবার (২২ অক্টোবর) সকালে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিলুফার শিরিন রায় ঘোষণা করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান। 

সাজাপ্রাপ্তরা ঘটনার সময় অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকায় শিশু আদালত আইনের আওতায় তাদের সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে সাকিব মুন্সী ও সিফাত মুন্সিকে ১৩ বছর এবং ইমরানকে ১০ বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় দুমকি উপজেলার পাংগাশিয়া ইউনিয়নে বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে শহীদ জসিম উদ্দিনের মেয়ে লামিয়া সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। পরে তিনি নিজেই বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরবর্তীতে ধর্ষণের ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে লামিয়া ২৬ এপ্রিল ঢাকার শেখেরটেক এলাকায় ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে আজ বুধবার মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক। 

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, “আজ বিজ্ঞ আদালয় রায় দিয়েছেন। এ মামলায় ১৬ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ দিয়েছেন। আদালত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করায় আমার সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি।” 

পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান টোটন বলেন, “অপরাধী যত প্রভাবশালী হোক না কেন, তাকে শাস্তি পেতেই হবে। এ মামলাটি তার একটি বার্তা “

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ