ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে আজাদের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় জেলা যুবদলের পর এবার ফরিদপুর মহানগর যুবদলের নেতৃত্বকে নোটিশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় যুবদল।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে যুবদলের কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়ার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এম ইউসুফ ও সাধারণ সম্পাদক আলী রেজোয়ান বিশ্বাসকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

এতে বলা হয়, ‘আপনারা যথাক্রমে ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক দায়িত্বে থেকেও মহানগর যুবদলের কার্যক্রম পরিচালনায় শৈথিল্য প্রদর্শন করেছেন, যার ফলে সংগঠনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে—এ মর্মে যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির দৃষ্টিগোচর হয়েছে।’ এতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘সংগঠনের শৃঙ্খলা বিনষ্টকারী কর্মকাণ্ডের জন্য আপনাদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়নের সম্মুখে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলো।’

গত রোববার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ফরিদপুর সদরের পরমানন্দপুর বাজার এলাকায় গণসংযোগে গেলে এ কে আজাদের গাড়িবহরে হামলা হয়। ওই সময় যুবদলের নেতৃত্বে একটি মিছিল থেকে বহরের দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনার পর গত সোমবার জেলা যুবদলের সভাপতি রাজীব হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনকে নোটিশ দেয় কেন্দ্রীয় যুবদল।

জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, শোকজ চিঠির নির্দেশ মেনে গতকাল তিনি ও সভাপতি রাজীব যুবদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের অবস্থান জানিয়েছেন।

ফরিদপুর মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এম ইউসুফ গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দুজনের নামে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে কি না, তা আমি জানি না। তবে কেন্দ্রীয় কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আমাকে ফোন করে জানিয়েছেন, আগামীকাল (আজ বুধবার) বিকেল চারটার মধ্যে ঢাকায় যুবদলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতে হবে। আমরা সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

রোববারের হামলার ঘটনায় এ কে আজাদ কেন্দ্রীয় মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর-৩ আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী নায়াব ইউসুফকে দায়ী করে বলেছিলেন, ‘তাঁর নির্দেশেই যুবদলের কর্মীরা আমার গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছেন।’

তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে গতকাল দুপুরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে নায়াব ইউসুফ বলেন, তিনি দলের কাউকে কোনো নির্দেশ দেননি। যুবদলের কেউ এ ঘটনায় জড়িতও নন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য বদল র ক য বদল র স য় য বদল গতক ল ইউস ফ

এছাড়াও পড়ুন:

ঝাড়ু হাতে ‘পরিচ্ছন্নকর্মীদের’ ডিসির বিরুদ্ধে মিছিল

‘পরিচ্ছন্নকর্মী’ পদে নিয়োগ পরীক্ষায় বৈষম্যের শিকার হওয়ার অভিযোগে ক্ষুব্ধ লালমনিরহাটের হরিজন সম্প্রদায়। জেলা প্রশাসকের (ডিসি) অফিসে নিয়োগ বাতিলের দাবিতে ব্যানার ও ঝাড়ু হাতে বিক্ষোভ করেছে জেলার দুটি কলোনীর শতাধিক মানুষ।

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে স্টেশনের পূর্ব ও পশ্চিম পাশের সুইপার কলোনী থেকে মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমবেত হন আন্দোলনকারীরা। সেখানে ‘বাংলাদেশ হরিজন ঐক্য পরিষদ ও হরিজন অধিকার আদায় সংগঠন’ জেলা শাখার ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ।

বক্তারা ক্ষোভের সঙ্গে অভিযোগ করেন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) এচইএম রকিব হায়দার ইচ্ছাকৃতভাবে কঠিন প্রশ্নপত্র তৈরি করে কৌশলে তাদের নিয়োগ বাতিল করার চেষ্টা করছেন।

উল্লেখ্য গত ১৩ এপ্রিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক সংস্থাপন শাখায় মোট ৭টি পদের অনুকূলে ৩৯ জনকে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে ‘পরিচ্ছন্নকর্মী’ পদের শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয় জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।

বক্তারা বলেন, গত শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় হরিজন সম্প্রদায়ের প্রার্থীদের প্রতি চরম বৈষম্য করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, ডিসি অফিস ওই ৩৯ জন স্টাফ নিয়োগে তাদের সঙ্গে যে বৈষম্য করেছে, তার প্রমাণ প্রশ্নপত্রের কাঠিন্য। অথচ এই পদে ঐতিহ্যগতভাবে এবং পেশাগত দিক দিয়ে হরিজনদের অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা বলেও জানান তারা। 

আগামীকাল রবিবার (৭ ডিসেম্বর) রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে এই নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগেই, বৈষম্যের প্রতিবাদে সরব হলেন হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক এইচএম রকিব হায়দার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রশ্নপত্র নির্দিষ্ট কারো জন্য করা হয় না। সকল প্রার্থী বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ প্রশ্নপত্র তৈরি করেছেন। পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে কেউ যদি আন্দোলন করে তাতে কিছু করার নেই।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘মাত্র ফাইনাল হলো, অপেক্ষা করেন! অস্থির হওয়ার কিছু নেই। আর পরীক্ষায় টেকেনি কে বলেছে? হরিজন সম্প্রদায়ের তিনজন টিকেছে বলে আমি জেনেছি।’’

ঢাকা/সিপন//

সম্পর্কিত নিবন্ধ