পাবনায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে আহত একজনের মৃত্যু, গ্রেপ্তার ২
Published: 24th, October 2025 GMT
ঈদগাহ মাঠের দ্বন্দ্ব নিয়ে পাবনার ফরিদপুর উপজেলার মধ্য পুংগলী গ্রামে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে আহত একজন মারা গেছেন। শুক্রবার (২৪ অক্টেবর) ভোরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
নিহত গাজ্জালী মুন্সি (৫০) একই গ্রামের মৃত রমজান মুন্সীর ছেলে। তিনি হাজী গোষ্ঠী পক্ষের লোক।
আরো পড়ুন:
কুবিতে ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত ২
নোয়াখালীতে শিবির-যুবদল সংঘর্ষের ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা
আরো পড়ুন: ঈদগাহ মাঠের পুরনো দ্বন্দ্বে সংঘর্ষ, আহত ২০
ফরিদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাকিউল আজম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, “সংঘর্ষের ঘটনার পর রাতে উভয়পক্ষ থানায় মামলা করেছে। মামলায় কুদরত এ খুদা (৪৫) ও ধলা (২৫) নামে দুই পক্ষের দুইজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।”
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে ফরিদপুর উপজেলার মধ্য পুংগলী গ্রামে হাজী গোষ্ঠী ও বাদশাহ গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
পুলিশ জানায়, গত বছর ঈদগাহ মাঠে নামাজ পড়া নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। সেই পুরনো বিরোধের জেরে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে হাজী গোষ্ঠী ও বাদশা গোষ্ঠীর মধ্যে আবারো উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে দুই গোষ্ঠীর লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
সংঘর্ষে আহত ২০ জনকে ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে গুরুতর কয়েকজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় গাজ্জালী মুন্সীকে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল। পথেই মারা যান তিনি। আজ শুক্রবার সকালে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ম মল স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
একজন ‘প্রধানমন্ত্রী’ ধর্ষণ করেছিলেন ভার্জিনিয়া জিউফ্রেকে: স্মৃতিকথায় দাবি
যুক্তরাষ্ট্রের কুখ্যাত যৌন নিপীড়ক জেফরি এপস্টেইনের কাছে থাকা ভার্জিনিয়া জিউফ্রেকে অজ্ঞাতনামা একজন ‘প্রধানমন্ত্রী’ নির্মমভাবে মারধর ও ধর্ষণ করেছিলেন। তিনি ভয় পেয়েছিলেন, ‘হয়তো যৌনদাসী হিসেবেই তাঁর মৃত্যু হতে পারে।’
ভার্জিনিয়া জিউফ্রে তাঁর স্মৃতিকথায় এমনটা দাবি করেছেন। প্রায় ছয় মাস আগে অস্ট্রেলিয়ায় জিউফ্রে আত্মহত্যা করেন।
এপস্টেইন ও তাঁর চক্রের বিষয়ে জিউফ্রে লিখেছেন, ‘তাঁদের সঙ্গে থাকার সময় তাঁরা আমাকে বহু ধনী, ক্ষমতাবান মানুষের কাছে পাঠাতেন। নিয়মিতভাবে আমাকে ব্যবহার করা হতো এবং আমাকে অপমান করা হতো। কিছু ক্ষেত্রে আমাকে শ্বাসরোধ, মারধর এবং এমনকি রক্তাক্ত করা হতো।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমি মনে করতাম, একজন যৌনদাসী হিসেবে আমার মৃত্যু হতে পারে।’
জিউফ্রের মৃত্যুর ছয় মাস পর গতকাল মঙ্গলবার তাঁর স্মৃতিকথা ‘নোবডি’স গার্ল’ প্রকাশিত হয়েছে। এতে কিশোরী বয়সে তাঁর ওপর হওয়া নির্যাতন এবং নিজের ও তাঁর সঙ্গে নির্যাতিত অন্য মেয়েদের ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য বছরের পর বছর ধরে তাঁর সংগ্রামের মর্মান্তিক বর্ণনা রয়েছে।
বইয়ের মার্কিন সংস্করণে জিউফ্রে দাবি করেছেন, তাঁকে একজন লোক ধর্ষণ করেছিলেন, যাঁকে তিনি শুধু ‘একজন সুপরিচিত প্রধানমন্ত্রী’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। যুক্তরাজ্যের সংস্করণে ওই অংশগুলো প্রায় অভিন্ন। তবে সেখানে ওই লোককে ‘একজন সাবেক মন্ত্রী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বইয়ের দুই সংস্করণে এই অসংগতির কারণ স্পষ্ট নয়।
এপস্টেইনের ক্যারিবীয় দ্বীপে থাকার সময় জিউফ্র কীভাবে তাঁকে এক লোকের কাছে পাচার করেছিলেন, সেই বর্ণনা রয়েছে। ওই ব্যক্তি তাঁকে আগেকার যে কারও চেয়ে বেশি নৃশংসভাবে ধর্ষণ করেছিলেন বলে লিখেছেন জিউফ্রে। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৮ বছর।
জিউফ্রে লিখেছেন, ‘তিনি বারবার আমার গলা টিপে ধরেছিলেন, যতক্ষণ না আমি জ্ঞান হারাই এবং আমাকে ভয় পেতে দেখে তিনি আনন্দ পেতেন। যখন প্রধানমন্ত্রী আমাকে ভয়াবহভাবে আঘাত করতেন, তখন তিনি হাসতেন। আমি যখন তাঁকে থামতে মিনতি করতাম, তখন তিনি আরও বেশি উত্তেজিত হতেন।’
জিউফ্রে লিখেছেন, ‘পরে আমি অশ্রুসিক্ত চোখে এপস্টেইনের কাছে অনুরোধ করেছিলাম, যেন তিনি আমাকে আর ওই ব্যক্তির কাছে আর না পাঠান।’
জিউফ্রে স্মৃতিকথায় লিখেছেন, ‘আমি তাঁর পায়ে ধরে অনুরোধ করেছিলাম। আমি জানি না, এপস্টেইন লোকটিকে ভয় পেতেন নাকি তাঁর কাছে ঋণী ছিলেন। তিনি আমাকে কোনো প্রতিশ্রুতি দেননি; বরং রাজনীতিবিদের নৃশংসতার কথা শুনে নির্দয়ভাবে বলেছিলেন, “কখনো কখনো তুমি এমনটাই পাবে।”’
জিউফ্রের এই স্মৃতিকথা এপস্টেইনের সঙ্গে ধনী ও ক্ষমতাশালী মানুষের কাছাকাছি থাকার কেলেঙ্কারিকে আরও তীব্র করবে। এ ঘটনা যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কয়েক মাস ধরে মার্কিন কংগ্রেসকে পর্যন্ত নাড়া দিয়ে যাচ্ছে।
বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর যুক্তরাজ্যের প্রিন্স অ্যান্ড্রুর ওপর নতুন করে নজরদারি বাড়বে। যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের এই সদস্যের বিরুদ্ধে জিউফ্রে অভিযোগ এনেছিলেন, তিনি কিশোরী থাকাকালে এই ব্যক্তি তাঁর ওপর যৌন নির্যাতন চালিয়েছিলেন।
বর্তমান রাজা চার্লসের ভাই প্রিন্স অ্যান্ড্রু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অস্বীকার করেছেন।
স্মৃতিকথায় জিউফ্রে দাবি করেছেন, যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে তিনি তিনবার যৌন সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। এর মধ্যে একবার যৌন সম্পর্ক স্থাপনের সময় জেফরি এপস্টেইন ছাড়াও আরও আটজন তরুণী সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
জিউফ্রে ও লেখক অ্যামি ওয়ালেস মিলে নতুন বইটি লিখেছেন।
স্মৃতিকথায় জিউফ্রে বলেছেন, ২০০১ সালের মার্চে তিনি প্রথমবার প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এপস্টেইনের বান্ধবী গিসলেইন ম্যাক্সওয়েল তাঁকে জাগিয়ে বলেছিলেন, দিনটি একটি ‘বিশেষ দিন’ হবে এবং ‘সিন্ডারেলার মতো’ তিনি একজন সুদর্শন প্রিন্সের দেখা পাবেন।
জিউফ্রে আরও বলেছেন, দিনের শেষের দিকে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে যখন তাঁর দেখা হয়, ম্যাক্সওয়েল তাঁকে (অ্যান্ড্রু) বলেছিলেন তাঁর (জিউফ্রে) বয়স অনুমান করতে।
অ্যান্ড্রুর বয়স তখন ৪১ বছর ছিল। তিনি যথাযথভাবেই জিউফ্রের বয়স বলতে পেরেছিলেন। তখন জিউফ্রের বয়স ছিল ১৭ বছর।