প্রতিকূলতা পেরিয়ে নারী হাদিসবেত্তাদের কীর্তি
Published: 24th, October 2025 GMT
নারী হাদিস বিশারদদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে মানুষের কাছ থেকে উৎসাহের বদলে অনেক বাধা পেয়েছি। বেশির ভাগ স্থানেই অধিকাংশ আলেম এর বিরোধিতা করেছেন। বিশেষ করে কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন এ নিয়ে বক্তব্য দিলাম, তখন এক অধ্যাপক দাঁড়িয়ে বললেন, ‘নারী স্কলারদের নিয়ে এই পুরো কাজটি পশ্চিমাদের ষড়যন্ত্র। আপনি নিজেও পশ্চিমে থাকেন। এই ষড়যন্ত্র হলো নারীদেরকে পুরুষের চেয়ে উত্তম ও গুরুত্বপূর্ণ দেখাতে চাওয়া।’
এরপর শায়খ ইউসুফ আল কারজাভি দাঁড়িয়ে বলেন, ‘ড.
একজন বলেন, ‘আপনার এই কাজ ইসলামকে বাদ দিয়ে দেবে।’ আমি বলেছি, ‘আমি যেসব তথ্য এনেছি, এগুলো ইসলামের মূল গ্রন্থগুলোয়ই আছে। আমাকে বলুন তো এই উৎসগুলোয় কি কোনো সমস্যা আছে?’
নারী হাদিস বিশারদদের নিয়ে কাজ করতে গিয়ে মানুষের কাছ থেকে উৎসাহের বদলে অনেক বাধা পেয়েছি। বেশির ভাগ স্থানেই অধিকাংশ আলেম এর বিরোধিতা করেছেন।অনেকে বলেছেন, নারী স্কলারের এই সংখ্যা আসলে বাড়াবাড়ি। আমার জবাব হলো, এটা একেবারেই সত্যি নয়। আমাদের কাছে এখনো পর্যাপ্ত তথ্য নেই। শুধু ইমাম মুসলিমেরই ৭০ নারী শিক্ষক ছিলেন, আমি কেবল চার থেকে পাঁচজনের তথ্য পেয়েছি। ইবনে নাজ্জার ৪০০ নারী থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন, আমাদের কাছে সবার তথ্য নেই। প্রত্যেকের সঙ্গে অসংখ্য নারী যুক্ত ছিলেন, যাঁদের তথ্য আমাদের বইয়ে নেই।
এক বর্ণনায় পাওয়া যায়, মধ্য এশিয়ার প্রতিটি ঘর থেকে নারীদের দস্তখতকৃত ফতোয়া আসত। অর্থাৎ প্রতি ঘরেই ফতোয়া দেওয়ার যোগ্য ও উপযুক্ত নারীরা ছিলেন।
আরও পড়ুনইতিহাসে লুকানো নারী হাদিস বর্ণনাকারীদের কাহিনী০৬ অক্টোবর ২০২৫‘আল–ওয়াফা বি আসমায়িন নিসা’ গ্রন্থের প্রচ্ছদ; যা ৪৩ খণ্ডে প্রকাশিত এবং যাতে প্রায় ১০ হাজার হাদিস বর্ণনাকারী নারীর জীবন–কর্ম সংকলিত হয়েছেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র হলে জনগণ তা মেনে নেবে না: সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কোনো দল বা ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের জনগণ তা মেনে নেবে না।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘আমরা চাই ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই নির্বাচন হোক। এর ব্যত্যয় ঘটলে জনগণ তা মেনে নেবে না। দেশজুড়ে নির্বাচনের সময় পেছানোর ষড়যন্ত্র চলছে। যারা নির্বাচন নির্বাচন জিকির করত, তারাই এখন নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র করছে। কারণ, তারা মাঠপর্যায়ে জরিপ করে দেখেছে, তাদের পায়ের নিচের মাটি খালি হয়ে গেছে।’
জনগণ জুলুম ও অত্যাচার চায় না উল্লেখ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ আর চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে টাকা পাচারকারীদের ভোট দিতে চায় না। বাংলাদেশের জনগণ আপসে একসঙ্গে বসবাস করতে চায়, ব্যবসা করতে চায়, চাঁদামুক্ত পরিবেশ চায়। মেয়েরা কী চায়? তারা নির্বিঘ্নে চলাফেরা করবে, ধর্ষণ বা ইভ টিজিংয়ের শিকার না হয়—এ রকম একটি আস্থার পরিবেশ চায়। জনগণ যেটা চায়, আমরা তাদের সেটা দিতে চাই। ইসলামি হুকুমত প্রতিষ্ঠা হলে দেশে একজনও না খেয়ে থাকবে না, বস্ত্রহীন থাকবে না। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বললাম, আগামী ১০ বছরে সব গরিব দারিদ্র্যসীমার ওপরে চলে যাবে।’
বিগত সময়ে কারচুপি, পেশিশক্তি ও ভোটারবিহীন নির্বাচনের অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে ফয়জুল করীম বলেন, দেশের মানুষ একটি স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়, যেখানে পেশিশক্তির প্রভাব থাকবে না, কালোটাকার প্রভাব থাকবে না এবং প্রত্যেকে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবে—এমন নির্বাচন আমরা প্রত্যাশা করছি। আসন্ন নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে না পারে, তাহলে জনগণ এই সরকারকে ক্ষমা করবে না। কোনো পক্ষ দখল বা সহিংসতার চেষ্টা করলে জনগণই প্রতিরোধ করবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি নারায়ণগঞ্জ-৪–এর আহ্বায়ক মুহা. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে নির্বাচনী জনসভায় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মাওলানা লোকমান হোসেন জাফরী, নগর সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রার্থী মুফতি মাসুম বিল্লাহ, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের প্রার্থী মাওলানা ইসমাঈল সিরাজি, জেলা সভাপতি মাওলানা মো. দ্বীন ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা আমির আতিকুর রহমান প্রমুখ।