থাইল্যান্ডের রাজমাতা সিরিকিত মারা গেছেন
Published: 25th, October 2025 GMT
থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্নের মা রানি সিরিকিত মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।
রাজধানী ব্যাংককের একটি হাসপাতালে গতকাল শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ৯টা ২১ মিনিটে সিরিকিত মারা যান বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে থাই রয়্যাল হাইসহোল্ড ব্যুরো।
রানি সিরিকিত ২০১৯ সাল থেকে শারীরিক নানা জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে চলতি মাসে তাঁর রক্তে সংক্রমণ ধরা পড়ে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন২৭ বছর পর কেন দেশে ফিরলেন থাই রাজার মেজ ছেলে০৮ আগস্ট ২০২৩দীর্ঘ ৬ দশকের বেশি সময় ধরে থাইল্যান্ডে রানি ছিলেন সিরিকিত। তিনি দেশটিতে সবচেয়ে বেশি সময় সিংহাসনে থাকা রাজা ভূমিবল আদুলাদেজের স্ত্রী। ২০১৬ সালে রাজা ভূমিবল মারা যান। এরপর সিংহাসনে বসেন তাঁদের ছেলে মহা ভাজিরালংকর্ন।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রয়াত মায়ের জন্য রাজকীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আয়োজনে থাই রয়্যাল হাউসহোল্ড ব্যুরোকে নির্দেশ দিয়েছেন রাজা ভাজিরালংকর্ন। রানি সিরিকিতের মরদেহ ব্যাংককের রাজপ্রাসাদের দুসিত থোর্ন হলে সমাহিত করা হবে। রাজপরিবারের সদস্যরা এক বছরের শোক পালন করবেন।
রানি সিরিকিতের মৃত্যুতে থাই প্রধানমন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল তাঁর মালয়েশিয়া সফর বাতিল করেছেন। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক জোটের (আসিয়ান) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে তাঁর কুয়ালালামপুর যাওয়ার কথা ছিল।
সিরিকিতের বাবা ছিলেন ফ্রান্সে থাই রাষ্ট্রদূত। প্যারিসে পড়াশোনা করেন তিনি। সেখানেই রাজা ভূমিবলের সঙ্গে তাঁর প্রথম দেখা হয়।
আরও পড়ুনথাই রাজা ২০ উপপত্নীসহ জার্মানিতে আইসোলেশনে২৯ মার্চ ২০২০১৯৮০ সালে বিবিসির একটি তথ্যচিত্রে ভূমিবলের সঙ্গে প্রথম দেখা হওয়ার দিনের স্মৃতিচারণা করেছিলেন সিরিকিত। মজা করে বরেছিলেন, প্রথম দেখায় ভূমিবলকে তাঁর একটুও ভালো লাগেনি। কারণ, ভূমিবল দেরি করে এসেছিলেন। বিকেল চারটায় আসার কথা থাকলেও ভূমিবল সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত তাঁকে অপেক্ষা করিয়েছিলেন।
এ যুগল ১৯৫০ সালের ২৮ এপ্রিল বিয়ে করেন। সপ্তাহখানেক পর ভূমিবল সিংহাসনে আরোহণ করেন। ষাটের দশকে তরুণ রাজকীয় দম্পতি হিসেবে বিশ্বভ্রমণ করেন ভূমিবল–সিরিকিত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আইজেনহাওয়ার, ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, তারকা এলভিস প্রিসলি প্রমুখের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তাঁরা। ওই দশকজুড়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজের সেরা পোশাকের জন্য আলোচনায় ছিলেন সিরিকিত।
আরও পড়ুনঅভিষেকের আগে দেহরক্ষীকে বিয়ে করলেন থাই রাজা০২ মে ২০১৯সিরিকিতকে খুবই সম্মান করেন থাইল্যান্ডের মানুষ। দেশটিতে ১২ আগস্ট তাঁর জন্মদিনকে ‘মা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৭৬ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
২০১২ সালে স্ট্রোক করেছিলেন সিরিকিত। এরপর থেকে তাঁকে জনসমক্ষে খুব কমই দেখা গেছে। তিনি এক ছেলে ও তিন মেয়ে রেখে গেছেন।
আরও পড়ুনমর্যাদা ফিরে পেলেন থাই রাজার প্রেমিকা সিনিনাত ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ ম বল
এছাড়াও পড়ুন:
উত্তেজনার পারদ চড়ছে ওয়েলিংটন টেস্টে
ওয়েলিংটন টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ম্যাচের চিত্র দাঁড়িয়ে রোমাঞ্চের দারপ্রান্তে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ পেসারদের ধারালো বোলিংয়ে মাঝে মাঝে চাপে পড়লেও ডেভন কনওয়ে ও অভিষিক্ত মিচেল হে-র জোড়া ফিফটিতে এগিয়ে থেকেই দিন শেষ করেছে নিউ জিল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে ৭৩ রানের লিড নেওয়ার পর দিনশেষে সফরকারীরা এখনও পিছিয়ে ৪১ রানে; হাতে রয়েছে ৮ উইকেট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলাররা শুরুতে সুইং আর বাউন্সে কিউই ব্যাটারদের নানাভাবে কাঁপিয়েছে। আলগা শটে উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার ভুলও করেছে স্বাগতিকরা। তবে কনওয়ে ও হে সেই চাপ সামলে জুটি গড়ে ম্যাচে ফেরেন।
আরো পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়ার দল ঘোষণা, অধিনায়ক কামিন্স
বিপিএলে খেলতে ১০ ক্রিকেটারকে ছাড়পত্র দিল পাকিস্তান
কনওয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম এবং ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন, করেন ৬০ রান। অন্যদিকে, ব্যাট হাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া মিচেল হে আত্মবিশ্বাসী ৬১ রানের ইনিংসে মুগ্ধ করেন। দুজনের মিলিত প্রচেষ্টায় নিউ জিল্যান্ড ৯ উইকেটে ২৭৮ রান তোলে। চোটের কারণে ব্লেয়ার টিকনার ব্যাট করেননি। তাতে ২৭৮ রানে থামে কিউইদের প্রথম ইনিংস।
দ্বিতীয় দিনের শুরুতে নতুন বলে কেমার রোচ, জেডেন সিলস, ওজে শিল্ডস এবং অ্যান্ডারসন ফিলিপ দারুণ ধারায় ছিলেন। বল দুদিকেই সুইং করছিল, মাঝে মাঝে বাউন্সেও চাপে ফেলছিল ব্যাটারদের। কনওয়ে অবশ্য সুযোগ পেলেই কাট-ফ্লিকে বাউন্ডারি আদায় করে নেন, মারেন আটটি চার।
টম ল্যাথাম (১১) রোচের নিপ–ব্যাক ডেলিভারিতে বোল্ড হন। পরে অ্যান্ডারসন ফিলিপের বলে চকিত হয়ে বোল্ড হন কেন উইলিয়ামসন (৩৭)। মধ্যাহ্নভোজের পর রোচের ওয়াইড বল তাড়া করে ক্যাচ দেন রাচিন রবীন্দ্র। এরপর কনওয়ে ফেরেন জাস্টিন গ্রিভসের তুলনামূলক সহজ ডেলিভারিতে; লেগ সাইডে দুর্দান্ত ডাইভে ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক তেভিন ইমলাচ। ১১৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে তখন কিছুটা বিপাকে নিউ জিল্যান্ড।
এই বিপদ কাটাতে ড্যারিল মিচেল (২৫) ও হে পঞ্চম উইকেটে ৭৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ে দলকে লিডের কাছে নিয়ে যান। মিচেল ছিলেন সলিড, আর হে খেলেছেন সহজাত ভঙ্গিতে। তার খেলায় শট-কাট, পুল, সবই ছিল আত্মবিশ্বাসী।
তবে দুজনই শেষ পর্যন্ত লেগ সাইডে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন। মিচেল ফিলিপের বলে, হে শিল্ডসের শর্ট বলে পুল মিসটাইম করে। এরপর গ্লেন ফিলিপস (১৮) চেষ্টা করেছিলেন চাপ কমাতে। কিন্তু রোস্টন চেজের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দেন।
শেষদিকে জ্যাক ফাউকস (অপরাজিত ২৩) দৃঢ়তা দেখিয়ে পেসারদের ডিফ্লেকশন থেকে মূল্যবান রান যোগ করেন। ডাফি ও রে-ও কিছু বাউন্ডারি এনে স্কোর বাড়ান। রে তার প্রথম টেস্ট ইনিংসে ১৩ রান করে সিলসের বলে বোল্ড হন। এটা ছিল দ্বিতীয় দিনে সিলসের প্রথম উইকেট।
ব্যাটিংয়ে কিছুটা এলোমেলো হলেও বোলিংয়ে দিনের শেষ ভাগে আবার নিয়ন্ত্রণ নেয় নিউ জিল্যান্ড। মাত্র দশ ওভারেই দুই ওপেনারকে হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জন ক্যাম্পবেল রে-র ইনসুইংয়ে বোল্ড হন। পরের ওভারে নাইটওয়াচম্যান ফিলিপ প্রথমে ডিআরএসে বাঁচলেও পরের বলেই এলবিডব্লিউর শিকার হন।
শেষদিকে ব্র্যান্ডন কিং (১৫*) ও ক্যাভেম হজ (৩*) কোনো রকমে দিন পার করে দেন। তবে লিড কমাতে শুক্রবার সকালে তাদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে।
ঢাকা/আমিনুল