সোনারগাঁয়ে কৃষক দলের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ
Published: 25th, October 2025 GMT
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সোনারগাঁও উপজেলা কৃষক দলের উদ্যোগে জামপুর ইউনিয়নের পাকুন্ডা গ্রামে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মা-বোনদের মাঝে লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় এ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক ডা.
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁও উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক ফজলু মেম্বার, সদস্য সচিব এম. মিলন ভূঁইয়া, নারায়ণগঞ্জ জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সেলিম হোসেন দিপু, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বাশার, হাফেজ ইসমাইল, দেলোয়ার বেপারী, তোফাজ্জল, উজ্জ্বল, জামান, সুমন, মহম্মদ আলী, নাজমুল, কালামসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন কৃষক দলের নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, “দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার পুনরুদ্ধারে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে বিএনপি জনগণের পাশে আছে, থাকবে।”
তারা আরও বলেন, “৩১ দফার কর্মসূচির লক্ষ্য হচ্ছে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে জনগণই হবে ক্ষমতার উৎস। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে কৃষক দলের নেতাকর্মীরা ঘরে ঘরে কাজ করছেন।”
গণসংযোগ শেষে নেতৃবৃন্দ স্থানীয়দের সাথে কুশল বিনিময় করেন এবং ৩১ দফার বার্তা সাধারণ মানুষের মাঝে তুলে ধরেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি-জামায়াত দুই দলকেই কথায় বিদ্ধ করলেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে নিজেদের পার্থক্য বোঝাতে গিয়ে দুই দলকেই কথায় বিঁধিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী অভিযোগ করেছেন, গত ৫২ বছরে বিএনপি গণতন্ত্রের কথা বলে বাংলাদেশে ‘জিয়াতন্ত্র’ কায়েম এবং জামায়াতে ইসলামী ইসলামের কথা বলে ‘মওদুদিতন্ত্র’ কায়েমের চেষ্টা চালিয়েছে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে এনসিপির এক সভায় বক্তব্যে এই অভিযোগ তুলে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘বাংলাদেশে নতুন করে আমরা যখন মুজিববাদের গর্ত থেকে উঠে দাঁড়াচ্ছি, নতুন করে মওদুদিবাদ ও জিয়াবাদের গর্ত আমাদের সামনে আবির্ভূত হয়েছে। আমাদের মঞ্জিলে মকসুদ হলো বাংলাবাদ।’
তবে বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোট গঠনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তবে তা হবে কি না, তা দল দুটির ভূমিকার ওপর নির্ভর করবে বলে তিনি জানান।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিতে বাংলাদেশে নতুন একটি সংস্কার প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যারা যাবে, আমাদের আগামীর জোট তাদের সঙ্গেই হবে। এ ক্ষেত্রে যদি জামায়াতে ইসলামী এগিয়ে আসে, তাহলে আমরা দুই পা এগিয়ে যাব। যদি বিএনপি এগিয়ে আসে, তাহলেও আমরা দুই পা এগিয়ে যাব।’
ভবিষ্যতে কারা সরকার গঠন করবে, এনসিপি তার নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে মন্তব্য করে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আগামীর সংসদে আমরা জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগের কোনো প্রতিনিধি দেখতে চাই না, জাতীয় পার্টি এবং আওয়ামী লীগমুক্ত একটি সংসদ চাই। এটার জন্যই এই ভোট ব্যাংকে এনসিপি কাজ করে যাবে।’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগের বাহাত্তরের সংবিধান রয়েছে, সেটার প্রতি তাদের “পিরিত” জেগে উঠেছে। আপনাদের জাতির পিতা মুজিব হতে পারে, আমাদের জাতির পিতা মুজিব নয়। বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থানের সৈনিকেরা এখানে এখনো জেগে আছে। মুজিববাদী কায়দাকানুন যারা বাংলাদেশে নতুন করে কায়েম করার চেষ্টা চালাবে, তাদের পরিণতি হাসিনার মতোই হবে।’
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে আপত্তি তুলে এনসিপি নেতা বলেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক দলগুলো এবং এস্টাবলিশমেন্টের অংশের কারণে খুনের দায়ে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগের অন্যতম লেসপেন্সার চুপ্পু (রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন) এখনো আমাদের করের টাকায় বঙ্গভবনে ঘুমাচ্ছেন। আমরা তাঁর হাত দিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে স্বাক্ষর চাই না, চাই অবশ্যই প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের স্বাক্ষর।’
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘জনগণ আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে, জনগণ আপনাকে সম্মান দিয়েছে। আপনি জনগণের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিন। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হত্যার বিচার করুন। সেই ক্ষেত্রে আপনি যদি পিছপা হন, জনগণ যেভাবে আপনাকে সম্মান জানিয়েছে, তেমনিভাবে আপনাকে আবার অসম্মানও জানাতে পারবে। আমরা কোনো ব্যক্তিপূজা করি না।’
এনসিপির জুলাই সনদ স্বাক্ষর না করা নিয়ে দলটির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘স্বাক্ষর আমরা তখনই করব, যখন জনগণের অধিকার আমরা আইনিভাবে বুঝে পাব। কারণ, নব্বইয়ে জনগণকে কলা দেখানো হয়েছে, চব্বিশে তাদের কলা দেখানো যাবে না।’
নির্বাচন কমিশনে সেনাবাহিনী, জামায়াত ও বিএনপি থেকে একজন করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন এনসিপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে কোনো গ্যাংবাজি, দলবাজি চলবে না, কোনো পরিবারতন্ত্র চলবে না। নির্বাচন কমিশনকে মিলিটারিমুক্ত করতে হবে, সিভিল ফর্মে ফিরিয়ে আনতে হবে। এটাকে জিয়াবাদ মুক্ত করতে হবে, জামায়াতে ইসলামী মুক্ত করতে হবে।’
ডাকসু নির্বাচনে জয়ী ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাদের উদ্দেশে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘ছাত্ররা আপনাদের যে কারণে ভোট দিয়েছে, আপনারা এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা সমাধানকল্পে কোনো প্রকল্প হাজির করতে পারেননি; বরং জামায়াতের কার্যক্রম হিসেবে আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অস্থিতিশীল করার জন্য নতুন করে পাঁয়তারা চালাচ্ছেন। আমরা আপনাদের হুঁশিয়ার করে দিতে চাই। আপনারা গণতন্ত্রের জন্য কাজ করুন, দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য কাজ করুন। যদি আপনারা মনে করেন, ডাকসুতে আপনাদের নিয়োগকর্তা জামায়াত বা আপনাদের অর্থের জোগানদাতা ইবনে সিনা, তাহলে ছাত্ররা যেভাবে আপনাদের ডাকসু ভবনে বসিয়েছে, আবার আপনাদের ডাকসু ভবন থেকে টেনেহিঁচড়ে জনতার কাতারে নিয়ে আসবে।’
গুমের বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘যারা গুমের সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের আলাদা সাব-জেলে রাখা হয়েছে। আমরা রাষ্ট্রে কোনো বৈষম্য চাই না। বিচারালয়ে আপনাদের দাঁড়াতে হবে।...আমরা সেনাবাহিনীকে আহ্বান জানাব, সেনাবাহিনীকে কলঙ্কমুক্ত করার জন্য বাংলাদেশে একটি সুযোগ এসেছে। এই সুযোগকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর প্রত্যেকটি পদক্ষেপের সঙ্গে ইনশা আল্লাহ আমরা থাকব, যাতে আপনারা এদের বিচার নিশ্চিত করতে পারেন। আপনারা যে উদ্যোগ নিয়েছেন, আমরা সেটাকে সাধুবাদ জানাই। প্রসিকিউশনে যে মামলা হয়েছে, সেখানে অন্য যারা কয়েদি রয়েছে, তাদের যেভাবে হাজিরা দিতে হয়, আপনাদের সেভাবে হাজিরা ফেস করতে হবে।’
প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থায় সংস্কার আনার আহ্বান জানিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা আওয়াজ তুলেছিলাম, বাংলাদেশে ডিজিএফআইকে সংস্কার করতে হবে। কিন্তু আপনাদের থেকে এখনো কোনো উদ্যোগ আমরা দেখিনি। এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক। এ জন্য আগামী নির্বাচনে অতীতের নির্বাচনের মতো ডিজিএফআই যদি কোনো ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করতে চায়, তাহলে রাজপথে লড়াই হবে।’
এনসিপির ঢাকা মহানগর (উত্তর ও দক্ষিণ) এবং ঢাকা জেলার এই সমন্বয় সভায় দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুনএনসিপি ক্ষমতায় না গেলেও ‘পোষা’ বিরোধী দল হবে না: সারজিস আলম১ ঘণ্টা আগে