পাকিস্তানের সন্ত্রাসী তালিকায় সালমান খান কেন?
Published: 26th, October 2025 GMT
বলিউড অভিনেতা সালমান খানকে সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে পাকিস্তান সরকার। সালমান খানের একটি মন্তব্যের জেরে ১৯৯৭ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের শিডিউল ৪ অনুযায়ী, তাকে সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। মিড-ডে এ খবর প্রকাশ করেছে।
এ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের এই তালিকা ‘ব্ল্যাক লিস্ট’ হিসেবে পরিচিত। এ তালিকায় সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের নাম থাকে। পাকিস্তান সরকার তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের ওপর কড়া নজরদারি, চলাফেরায় সীমাবদ্ধতা এবং আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি করে থাকে।
আরো পড়ুন:
‘সালমান-আরবাজ পরস্পরকে ঘৃণা করে’
সালমানকে অনেকেই ভয় পান: এলি
কিছু দিন আগে সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত হয় ‘জয় ফোরাম ২০২৫’। এ অনুষ্ঠানে যোগ দেন সালমান খান, শাহরুখ খান। অনুষ্ঠানে শাহরুখের সঙ্গে দেখা যায় সালমানকে। যেখানে তারা মধ্যপ্রাচ্যে ভারতীয় সিনেমার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
এ আসরে সালমান খান বলেন, “এই মুহূর্তে আপনি যদি একটা হিন্দি সিনেমা বানিয়ে এখানে (সৌদি আরবে) মুক্তি দেন, সেটা সুপারহিট হবে। আপনি যদি তামিল, তেলেগু বা মালায়ালাম সিনেমা বানান, তাহলে সেটাও শত শত কোটি রুপির ব্যবসা করবে। কারণ এখানে অনেক দেশ থেকে মানুষ এসে কাজ করছেন। এখানে বেলুচিস্তান থেকে মানুষ এসেছেন, আফগানিস্তান থেকে মানুষ আছেন, পাকিস্তান থেকেও মানুষ আছেন.
সবকিছু ঠিকই ছিল কিন্তু বক্তব্যের একটি জায়গায় সালমান খান ‘বেলুচিস্তান’ ও ‘পাকিস্তান’-কে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করেন। মূলত, বিপত্তিটা এখানেই। কারণ সালমান খানের মন্তব্যে ক্ষুব্ধ পাকিস্তান সরকার। অন্যদিকে, বালুচের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা তার বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন।
বালুচ স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা মীর ইয়ার বালুচ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, সালমানের বক্তব্যে ছয় কোটি বালুচ জনগণ আনন্দিত হয়েছেন। সালমানের প্রশংসা করে মীর ইয়ার বালুচ বলেন, “সালমান যা করেছেন, তা অনেক দেশ করতে সাহস পায় না।” সালমানের এই পদক্ষেপকে ‘সফট ডিপ্লোম্যাসি’ এর শক্তিশালী একটি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন মীর ইয়ার।
ঢাকা/শান্ত
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র সন ত র স
এছাড়াও পড়ুন:
ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠতে পারে, এমন কিছুতে যাওয়া ঠিক হবে না: সালাহউদ্দিন আহমদ
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আবেগের চেয়ে বাস্তবতাকে প্রাধান্য দেওয়ার পক্ষে মত জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেছেন, এমন কোনো পদ্ধতির মধ্যে যেন না যাওয়া হয়, যা নিয়ে ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠতে পারে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সাংবিধানিক আদেশ জারির দাবির প্রেক্ষাপটে আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে গণ অধিকার পরিষদের চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জনগণের কনস্টিটিউয়েন্ট পাওয়ার (সাংবিধানিক ক্ষমতা) গণভোটের মাধ্যমে প্রকাশিত হবে বলেই সংসদ এর বাইরে যেতে পারবে না। এখন যদি আবেগপ্রবণ হয়ে রাজনৈতিকভাবে গণভোট করার জন্য বাক্য ব্যয় করা হয়, বিভিন্ন আদেশ কার্যকর করা হয়, তাহলে এগুলো নিয়ে সামনে প্রশ্ন উঠতে পারে। সেটা না করে সবার ঐক্যের ভিত্তিতে যাতে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন করা হয়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।’
বিএনপিসহ অধিকাংশ দল জুলাই সনদে সই করলেও তা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে মতভেদ দেখা দিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী চায়, সাংবিধানিক আদেশ জারির মাধ্যমে তা শাসনতন্ত্রে সন্নিবেশিত হোক। সনদে সই না করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) একই দাবি তুলে বলেছে, এই সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা পেলেই তারা এতে সই করবে।
এনসিপিসহ কয়েকটি দলের সনদে সই না করার বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, তাদের কিছু দাবিদাওয়া আছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। আশা করা যায়, সুষ্ঠু একটা সমাধান হবে। তারপর তারাও স্বাক্ষর করতে পারবে। তাহলে জুলাই সনদ হবে রাজনীতিতে সমঝোতার একটি ঐতিহাসিক দলিল, যা বাস্তবায়নের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো অঙ্গীকারবদ্ধ।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচিত জাতীয় সংসদই সুনির্দিষ্ট ফোরাম—এ মন্তব্য করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘এখানে কোনো দলের বিশেষ দ্বিমত নেই। জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় সংসদ যাতে বাধ্য থাকে, সেটার একটি আইনি ভিত্তি রচনার জন্য একটা প্রস্তাব বা সুপারিশ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দেওয়া হবে। এরপর কী প্রক্রিয়ায় আইনি ভিত্তি দিতে চাচ্ছে, সেটি জানা যাবে। নোট অব ডিসেন্টসহ যেভাবে জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে, হুবহু সেই সনদ বাস্তবায়নের জন্য জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে যখন একটি বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি করা হবে, তখন সেখান থেকে জাতীয় সংসদ বা কোনো সংসদ সদস্য সরতে পারবে না।’
আবেগের চেয়ে বাস্তবতাকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘অনেকে আবেগের বশে বলে থাকেন, জুলাই অভ্যুত্থানে জনগণের যে অভিপ্রায় প্রকাশিত হয়েছে, সে অভিপ্রায়ের শক্তিবলে অনেক বৈপ্লবিক আদেশ জারি করা যায়। এগুলো আবেগী বক্তব্য। কারণ, জনগণের অভিপ্রায় বাস্তবায়নের জন্যই সংবিধানের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। সাংবিধানিকভাবেই এই সরকার গঠিত হয়েছে। এখনো সাংবিধানিকভাবে এই রাষ্ট্র পরিচালিত হচ্ছে।’
এনসিপির উদ্দেশে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘বাস্তবতার ভিত্তিতে কথা বলতে হবে। এমন কোনো প্রস্তাব দেওয়া যাবে না, যেগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হবে। এমন কোনো আদেশ দেওয়া যাবে না, যেগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হবে। পুরো প্রক্রিয়াকে যাতে কেউ কখনো অবৈধ বলে আওয়াজ দিতে না পারে। ১০-১৫ বছর পরও যাতে কেউ এই প্রশ্ন নিয়ে আদালতে যেতে না পারে। সে রকম একটা ভিত্তি এখনই রচনা করতে হবে। অতি সাবধানে অর্জিত সাফল্যকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
‘ফ্যাসিবাদের’ প্রত্যাবর্তন ঠেকাতে সবাইকে এক থাকার আহ্বান জানান বিএনপির এই নেতা।
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হকের সভাপতিত্বে এবং মুখপাত্র ফারুক হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব জালালুদ্দীন আহমদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান হামিদী, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ্ কায়সার।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য আকবর খান, এনডিপির চেয়ারম্যান আবু তাহের, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে চোখ হারানো শ্রমিকনেতা রুবেল হোসেন, অভ্যুত্থানে শহীদ মিরাজ হোসেনের বাবা আবদুর রব, ইমাম হাসান ভূঁইয়ার ভাই রবিউল আওয়াল ভূঁইয়া, শহীদ গোলাম নাফিজের মা নাজমা আক্তারও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।