টাঙ্গাইল কারাগারে আ. লীগ নেতার মৃত্যু
Published: 27th, November 2025 GMT
টাঙ্গাইল কারাগারে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের মির্জাপুর উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের এক নেতার মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২৬ নভেম্বর) মধ্যরাতে তিনি মারা যান।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে কারাগারের জেলার মুহাম্মদ জাহেদুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন।
আরো পড়ুন:
সৌদি আরবে পুলিশের গুলিতে প্রবাসী নিহত, পরিবারে শোক
বিয়ে বাড়ির খাবার খেয়ে একজনের মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতালে ১৭
মারা যাওয়া সুলতান মিয়া উপজেলার গোড়াই ইউনিয়নের হরিরপাড়া গ্রামের আজমত আলীর ছেলে। তিনি গোড়াই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
জেল কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধবার মধ্যরাতে বুকে ব্যথা অনুভব করলে সুলতানকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
গত বছরের ৪ আগস্ট ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক-সংলগ্ন গোড়াই হাইওয়ে থানার সামনে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন’ চলাকালে পুলিশের ছররা গুলিতে গোড়াই ইউনিয়নের লালবাড়ি গ্রামের হিমেলের দুই চোখ অন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনায় হিমেলের মা নাছিমা বেগম বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জাপুর আমলি আদালতে মামলা করেন। সেই মামলায় পুলিশ, সাংবাদিক ও আওয়ামী লীগ নেতাসহ মোট ১০০ জনের নাম উল্লেখ এবং ৪০০-৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হিসেবে গত ২৮ অক্টোবর সুলতানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর প্রায় এক মাস তিনি টাঙ্গাইল জেলা কারাগারে ছিলেন।
জেলার মুহাম্মদ জাহেদুল আলম বলেন, “ময়নাতদন্ত ও আইনী প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে দেওয়া হবে।”
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ ই ইউন য ন
এছাড়াও পড়ুন:
আমাকে হারাতে জেলা বিএনপি ১০০ কোটি টাকার বাজেট করেছে, বললেন বিএনপির প্রার্থী
পটুয়াখালী-১ (সদর-মির্জাগঞ্জ-দুমকি) আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, ‘ওনারা ব্যাংকার দিয়ে রাজনীতি করাবে, কন্ট্রাক্টর দিয়ে নির্বাচন করাবে। গণ অধিকারের ভিপি নূরকে দিয়ে নির্বাচন করাবে। তাকে দিয়ে শুধু নির্বাচনই করাবে না, তাকে টাকাও দেবে, কিন্তু নূর রাজি হয়নি। তখন তারা রুহুল আমিন হাওলাদারকে (জাতীয় পার্টি) ধরছে। তারা আমাকে হারাতে ১০০ কোটি টাকার বাজেট করেছে। কিন্তু রুহুল আমিন হাওলাদার কেমনে নির্বাচন করবে? তার বিরুদ্ধে তো অনেক মামলা, মার্ডার কেসও আছে—একটাতেও জামিন নেই, রেজাল্ট জিরো।’
গতকাল বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার বদরপুর শহীদ স্মৃতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আয়োজিত নির্বাচনী সভায় জেলা বিএনপির কয়েকজন নেতাকে নিয়ে আলতাফ হোসেন চৌধুরী এ কথা বলেন। তাঁর বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সভায় আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘মনোনয়ন পাওয়ার আগে আমি জেলা বিএনপির সভাপতি স্নেহাংশু সরকার (কুট্টি), সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান (টোটন), জেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক মেয়র মোস্তাক আহম্মেদকে মুঠোফোনে কল করে কথা বলেছি। এরপর মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। বাসা ও অফিসে গিয়ে সবার সঙ্গে দেখা করেছি, কথা বলেছি। কিন্তু চোরায় না শোনে ধর্মের কাহিনি।’
আলতাফ হোসেন চৌধুরী আরও বলেন, ‘এখন জেলা বিএনপি অভিযোগ করছে, আমি তাদের ডাকছি না। আমি তাদের দাওয়াত খাওয়ার জন্য তো ডাকব না। নির্বাচনে কাজ করার জন্য ডাকব। আমার প্রথমে দেখতে হবে, কে কী কাজ করার জন্য যোগ্য। সেটা তো আমার দেখতে হবে, তারপর তাদের দায়িত্ব দেওয়া হবে। তবে এটা সত্য, যারা বিএনপির দুর্দিনে সম্মুখসারিতে ছিল, রক্ত দিয়েছে, জেল খেটেছে—তাদের হাত দিয়েই নির্বাচন হবে।’
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর (আলতাফ হোসেন চৌধুরী) অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। তিনি কোনো প্রমাণ দিতেও পারবেন না। ভিত্তিহীন এ বক্তব্যে দলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।
জেলা বিএনপির সভাপতি স্নেহাংশু সরকার বলেন, জাপার রুহুল আমিন হাওলাদারকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে জেলা বিএনপিকে ছোট করছেন আলতাফ হোসেন চৌধুরী। অথচ তিনি নিজেই রুহুল আমিনের আত্মীয়ের বাসায় দাওয়াত খাচ্ছেন। আওয়ামী লীগকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন। তিনি জেলা বিএনপির বৈধ কমিটিকে অস্বীকার করছেন। মূলত বয়স বেড়ে যাওয়ায় তিনি কী বলছেন, নিজেও জানেন না। তিনি দলীয় সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন এবং ভবিষ্যতেও থাকবেন।
যোগাযোগ করলে আলতাফ হোসেন চৌধুরী মুঠোফোনে প্রথম আলো বলেন, তাঁর বক্তব্যের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ তাঁর কাছে আছে। তাঁরা এই কাজগুলো করেছেন বলে তিনি দাবি করেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০১ সালের নির্বাচনে পটুয়াখালী-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আলতাফ হোসেন চৌধুরী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন। এরপর জেলা বিএনপির সভাপতি স্নেহাংশু সরকার ও পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র মোস্তাক আহমেদের সঙ্গে তিনি দ্বন্দ্বে জড়ান। ধীরে ধীরে সেই দ্বন্দ্ব আরও বেড়েছে। জেলা বিএনপির সভাপতি স্নেহাংশু সরকার এখানে মনোনয়ন পেতে দীর্ঘদিন ধরে দৌড়ঝাঁপ করেছিলেন। পরে আলতাফ হোসেন চৌধুরী মনোনয়ন পেলে দুই পক্ষের বিভাজন মিটিয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু আলতাফ হোসেন চৌধুরী কয়েকটি নির্বাচনী সভায় অভিযোগ করেন, নির্বাচন নিয়ে জেলা বিএনপি তাঁকে কোনো সহযোগিতা করছে না। এরপর পুরোনো দ্বন্দ্ব আবার প্রকাশ্যে আসে।