পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খানকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগার থেকে অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে গুজব ছড়ানো হয়েছিল। তবে গতকাল বুধবার গুজব উড়িয়ে দিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ বলেছে, তিনি এখনো কারাগারেই আছেন, সুস্থও আছেন।

এদিকে ইমরানের মৃত্যু নিয়েও ইন্টারনেটে গুজব ছড়িয়েছে বলে ভারতের কিছু গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।

ইমরান খান কারাগারে যেসব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন, তা খাজা আসিফ কখনো পাননি। তাঁর জন্য যে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়, তা কোনো পাঁচ তারকা হোটেলেও পাওয়া যায় না।খাজা আসিফ, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী

আদিয়ালা কারাগার কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘কারাগার থেকে তাঁকে (ইমরান খান) স্থানান্তর-সম্পর্কিত কোনো খবর সত্য নয়। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন।’ কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করে বলেছে, ইমরানের স্বাস্থ্য নিয়ে যে অনিশ্চয়তার কথা বলা হচ্ছে, তা ভিত্তিহীন। তাঁর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

আরও পড়ুনইমরান খানকে ‘শান্তির জন্য বড় হুমকি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন জেফরি এপস্টেইন১৫ নভেম্বর ২০২৫

ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন। ২০২২ সালের এপ্রিলে বিরোধী দলের অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে একাধিক মামলা হয়েছে।

পৃথক এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, ‘ইমরান খান কারাগারে যেসব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন, তা খাজা আসিফ কখনো পাননি। তাঁর জন্য যে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়, তা কোনো পাঁচ তারকা হোটেলেও পাওয়া যায় না।’

ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে আছেন। ২০২২ সালের এপ্রিলে বিরোধী দলের অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি থেকে শুরু করে সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে একাধিক মামলা হয়েছে।

খাজা আসিফ আরও দাবি করেন, ‘ইমরান খানের জন্য টেলিভিশন রয়েছে। তিনি যেকোনো চ্যানেল দেখতে পারেন। তাঁর জন্য শরীরচর্চার যন্ত্রও রয়েছে। অথচ আমরা কারাগারে থাকতে ঠান্ডায় মেঝেতে ঘুমাতাম, জেলের খাবার খেতাম। শুধু দুটি কম্বল পেতাম, এমনকি গরম পানিও ছিল না।’

আরও পড়ুনঅলৌকিক সেই ইমরান খান এখন কয়েদি নম্বর ৮০৪০৫ অক্টোবর ২০২৫

খাজা আসিফ আরও বলেন, ইমরান খানের জন্য বড় বিছানা ও নরম তোশকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি কারাগারের লাউডস্পিকারে নিজের বক্তৃতাও শুনতে পারবেন।

আরও পড়ুনইমরান খানের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু পিটিআইয়ের১৩ জুলাই ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইমর ন খ ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে দরিদ্র ৩ কোটি ৬০ লাখ

দারিদ্র্য কমানোর ক্ষেত্রে উল্টো পথে হাঁটছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংক বলছে, দেশে চার বছর ধরে দারিদ্র্যের হার বাড়ছে। সংস্থাটির অনুমিত হিসাব, ২০২৫ সালে দারিদ্র্যের হার হতে পারে ২১ শতাংশের কিছু বেশি। দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৬০ লাখ।

দেশের জনসংখ্যার বড় একটি অংশ দারিদ্র্যসীমার কিছুটা ওপরে থাকে। তারা উচ্চ মূল্যস্ফীতির মতো বিভিন্ন আঘাতের কারণে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। বিশ্বব্যাংকের হিসাবে ২০২২ সালে সংখ্যাটি ছিল ৬ কোটি ২০ লাখ।

দেশে দারিদ্র্যের হার হিসাব করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। সংস্থাটির খানা আয়–ব্যয় জরিপে এ তথ্য উঠে আসে। সর্বশেষ খানা আয়-ব্যয় জরিপ করা হয়েছিল ২০২২ সালে। তখন সার্বিক দারিদ্র্য হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ।

বিশ্বব্যাংকের হিসাবটি মূলত প্রাক্কলন, যা করা হয়েছে ‘মাইক্রো-সিমুলেশন মডেল’ নামের একটি পদ্ধতি ব্যবহার করে। শ্রমবাজারের গতিশীলতা, প্রবাসী আয় এবং সরকারের ভর্তুকি ব্যয়কে ভিত্তি ধরে মাইক্রো-সিমুলেশন মডেলে দারিদ্র্যের হার পর্যালোচনা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

বাংলাদেশে বিগত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশক থেকে উল্লেখযোগ্য হারে দারিদ্র্য কমতে শুরু করে (১৯৯১–৯২ সালে ছিল ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশ)। ২০০০ সালের পর থেকে তা আরও গতি পায়। বাংলাদেশ দারিদ্র্য কমানোর দিক থেকে বিশ্বে সুনাম কুড়িয়েছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, সে ক্ষেত্রে সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশ পেছন দিকে হাঁটছে।

‘বাংলাদেশ: দারিদ্র্য ও বৈষম্য বিশ্লেষণ, সমৃদ্ধির পথে অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক দারিদ্র্যের হারের নতুন হিসাব দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর এক হোটেলে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয় এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বিশ্বব্যাংক ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান। তিনি দেশে দারিদ্র্য কমার অতীত চিত্র তুলে ধরে বলেন, ২০২২ থেকে ২০২৫ সাল দুর্ভাগ্যজনকভাবে ‘উল্টো ঘুরে যাওয়ার’ সময়কাল। বিশ্বব্যাংকের তথ্য দেখায়, এটি কোনো আকস্মিক পতন নয়, এটাই বাস্তবতা, দারিদ্র্য বেড়েছে।

পিপিআরসিও দারিদ্র্য হার নিয়ে গত আগস্টে জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, ২০২৫ সালে দেশের সার্বিক দারিদ্র্য বেড়ে ২৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুসারে, বর্তমানে মাসিক মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৫০ টাকা হলে নিম্ন দারিদ্র্যসীমা এবং ৩ হাজার ৮৩২ টাকা হলে মোট দারিদ্র্যসীমা ধরা হয়।

দারিদ্র্য কেন বাড়ছে

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ সার্জিও অলিভিয়েরা অনুষ্ঠানে প্রতিবেদনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। এতে দারিদ্র্য বৃদ্ধির কারণ হিসেবে মোটাদাগে যথেষ্ট কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হওয়া, চাকরি হারানো, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, মজুরি সেভাবে বৃদ্ধি না পাওয়া ইত্যাদিকে দায়ী করা হয়েছে। সংস্থাটি বলছে, ২০২৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ২০ লাখ কর্মসংস্থান কম হয়েছে। ২০২৫ সালে আরও ৮ লাখ কর্মসংস্থান কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। চাকরির বাজার সংকুচিত হওয়ার সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি পড়েছে নারী ও তরুণদের ওপর।

২০১৬ সালের পর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধরনে পরিবর্তন এসেছে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলেছে, এ সময়ে সামগ্রিকভাবে বছরে প্রায় ১৫ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তবে তার ৬৩ শতাংশই হয়েছে কৃষি খাতে। কৃষিতে কর্মসংস্থানে আয় কম। শহরে কর্মসংস্থান সৃষ্টি অনেকটা স্থবির ছিল।

হোসেন জিল্লুর রহমান

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফরাসি সরকারের ‘ন্যাশনাল ডিফেন্স মেডেল-গোল্ড’ পেলেন বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তা
  • গাজায় নিহতের সংখ্যা ১ লাখের বেশি হতে পারে: জার্মানির শীর্ষ গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের তথ্য
  • সন্তানদের নিয়ে দ্বন্দ্ব, গ্রেপ্তার আতঙ্কে দুবাইয়ের শাসক পরিবারের সাবেক বউ
  • নারী হত্যার শাস্তির আলাদা বিধান রেখে ইতালির পার্লামেন্টে বিল পাস
  • ‘আমার বেটাকে বাঁচান’, চিকিৎসা খরচ মেটাতে হাত পাতছেন তাঁরা
  • দেশে দরিদ্র ৩ কোটি ৬০ লাখ
  • ঘনিষ্ঠজনের হাতেই প্রতি ১০ মিনিটে খুন হন একজন নারী: জাতিসংঘ
  • সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের বেতন, পেনশনসহ অন্য প্রাপ্যতা রিভিজিট করতে কেন নির্দেশ নয়: হাইকোর্ট
  • উৎপাদনকারী নয়, জীবন রক্ষাকারী ওষুধের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা সরকারের: হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়