শুধু কয়েকটি সিট পাওয়ার জন্য এনসিপি কোনো জোট করবে না: সারজিস আলম
Published: 26th, October 2025 GMT
জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে এক পাশে রেখে শুধু কয়েকটি সিট পাওয়ার জন্য জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কোনো জোট করবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। আজ রোববার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্প একাডেমি মিলনায়তনে এনসিপি আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সারজিস আলম বলেন, ‘এনসিপি শুধু কয়েকটি আসনকে সামনে রেখে সংসদে যাওয়ার জন্য জোট করার কোনো চিন্তা করছে না। এনসিপি মনে করে, কোনো রাজনৈতিক দল যদি তাদের জায়গা থেকে জুলাই সনদের প্রতিটা সংস্কার বাস্তবায়নের প্রতি কমিটমেন্ট থাকে, বিচারিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতাকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতি কমিটমেন্ট থাকে, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কমিটেড থাকার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিস্টদের দোসরদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য কমিটেড থাকে, তাহলে এর ভিত্তিতে আগামী নির্বাচনে তাদের সাথে জোট হতে পারে। কিন্তু জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে এক পাশে রেখে শুধু সিট পাওয়ার জন্য কোনোরকম জোট এনসিপি করবে না। আর যদি এনসিপি এসব কমিটমেন্টের ভিত্তিতে জোট করেও তাহলে জাতীয় নাগরিক পার্টির নামে করবে এবং সরকার গঠন করবে।’
জুলাই সনদে স্বাক্ষরের বিষয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘অন্যান্য রাজনৈতিক দল যখন জুলাই সনদের প্রশ্নে নিশ্চয়তার যে প্রয়োজন ছিল, সেই নিশ্চয়তা কীভাবে হবে, কবে হবে নিশ্চিত না হয়ে শুধু নির্বাচনমুখী আচরণ করে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল, তখন এনসিপি তাদের জায়গা থেকে মেরুদণ্ড সোজা করে সেই নিশ্চয়তা চেয়েছে এবং জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি। আমরা মনে করি, যেদিন জুলাই সনদ বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা দেওয়া হবে, যেদিন এই আদেশ জারি করা হবে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে এবং গণভোটে যদি জুলাই সনদের পক্ষে রায় আসে, তখন বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে এনসিপি নির্দ্বিধায় দেশের মানুষের পক্ষে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে। তার পূর্বে কোনো নিশ্চয়তা ছাড়া শুধু একটা কাগজে এনসিপি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশের মানুষের সাথে প্রতারণা করতে পারে না।’
এনসিপির এই নেতা আরও বলেন, আগামীর বাংলাদেশে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার ও বিচারিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করতে এককভাবে বিএনপি ও জামায়াত নেতৃত্ব দিতে পারবে না। সেই জায়গায় তরুণ প্রজন্মের এনসিপির অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা আবশ্যক। আগামী নির্বাচনে তরুণদের কণ্ঠস্বর ও জনগণের প্রতিনিধিত্ব করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
সারজিস আলম আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর বাংলাদেশের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা ছিল, ওই আকাঙ্ক্ষার কাছাকাছিও বাস্তবায়ন হয়নি। গত এক বছরে বাংলাদেশের তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। প্রত্যেক স্টেকহোল্ডার তাদের জায়গা থেকে সহযোগিতা করেনি। প্রশাসনে এখন হয় বিএনপি-জামায়াতের লোক, না হয় আগের স্বৈরাচারের লোকজন রয়েছে। সচিব, ডিসি, ইউএনও ও থানার ওসিদের দলীয় না হয়ে বাংলাদেশের হতে হবে। না হয় পরবর্তী সময়ে দেশে আবারও একটা কিছু হলে কেউ ছাড় পাবে না। তিনি আরও বলেন, ‘এনসিপি এই মুহূর্তে রাজনৈতিক দল হিসেবে তৃতীয় শক্তিশালী দল হলেও তার আগে যে শক্তিশালী দুটি দল রয়েছে, তাদেরও এই জায়গা থেকে বড় দায়িত্ব পালন করা উচিত। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের অসহযোগিতা করতে দেখেছি। দলীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে দেখেছি।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলার সাবেক আহ্বায়ক ইকরাম হোসেনের সঞ্চালনায় ও এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব আহনাফ সাঈদ খানের সভাপতিত্বে সভায় ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ হায়দার, কেন্দ্রীয় সংগঠক খাইরুল কবির, সংগঠক সাঈদ উজ্জ্বল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দিদার শাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ল ই সনদ ন শ চয়ত জ ট কর এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
পশ্চিম তীরে ‘ইসরায়েলি সর্বভৌমত্ব’ চাপিয়ে দেওয়ার নিন্দা জানাল বাংলাদেশ
ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরকে ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্ত করতে সম্প্রতি খসড়া আইন অনুমোদন দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট নেসেট।
তথাকথিত ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব আরোপের নামে এই আইনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ।
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে পুনর্ব্যক্ত করছে যে পূর্ব জেরুজালেমসহ দখল করা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের কোনো অংশে ইসরায়েলের কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েল পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি সম্প্রসারণের মাধ্যমে বেআইনি দখলদারত্ব চালিয়ে যাচ্ছে। এটি আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ ও নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব বিশেষ করে রেজলু৵শন ২৩৩৪-এর স্পষ্ট লঙ্ঘন।
গত ২২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)-এর দেওয়া অ্যাডভাইজরি ওপিনিয়ন বা পরামর্শমূলক মতামতকে স্বাগত জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ওই মতামতে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের অধীন ইসরায়েলের বাধ্যবাধকতাগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সাধারণ জনগণের ক্ষুধাকে যুদ্ধাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা নিষিদ্ধ।
বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার, তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমানার ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।