রিয়ালের তোপে ইয়ামাল, এল ক্লাসিকোর শেষ বাঁশির পর ঠিক কী ঘটেছে
Published: 27th, October 2025 GMT
‘রিয়াল মাদ্রিদ চুরি করে আর অভিযোগ করে’—এল ক্লাসিকোর আগে লামিনে ইয়ামালের এমন মন্তব্য তাতিয়ে দিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদকে। ম্যাচের আগেই ইয়ামালের এই মন্তব্য নিয়ে বিরক্তির কথা জানিয়েছিলেন রিয়াল তারকা দানি কারভাহাল। গতকাল মুখোমুখি লড়াইয়ে রিয়াল যেন ইয়ামালকে জবাব দেওয়ার জন্যই নেমেছিল।
মাঠে ইয়ামাল যখনই বল স্পর্শ করেছেন, পুরো সান্তিয়াগো বার্নাব্যু দুয়োধ্বনি দিয়েছে। পুরো ম্যাচেই বারবার এই দৃশ্য দেখা গেছে। তবে ম্যাচের শেষ বাঁশির পর ইয়ামালকে ঘিরে যা হয়েছে, তাতে উত্তাপ-উত্তেজনা দৃষ্টিকটু পর্যায়ের সীমা ছাড়িয়েছে।
ম্যাচটা রিয়ার মাদ্রিদ জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। খেলা শেষে দুই দুই দলের মধ্যে উত্তেজনার শুরু অবশ্য ভিন্ন এক ঘটনাকে ঘিরে। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার আগ মুহূর্তে রেফারি সিজার সোটো গ্রাদো বার্সেলোনার মিডফিল্ডার পেদ্রিকে লাল কার্ড দেখান।
আরও পড়ুনইয়ামালের দাবি, রিয়াল মাদ্রিদ চুরি করে আর অভিযোগ করে২৫ অক্টোবর ২০২৫রিয়াল মাদ্রিদের অরেলিয়েঁ চুয়ামেনিকে ট্যাকল করার জন্য ম্যাচে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন এই মিডফিল্ডার। এর আগে ভিনিসিয়ুসকে ফাউল করে পেয়েছিলেন প্রথম হলুদ কার্ড। এই ঘটনাকে কেন্দ্র দুই দলের ডাগআউটে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তবে এরপরই দ্রুত উত্তেজনার কেন্দ্রে চলে আসেন ভিনি-ইয়ামাল।
প্রথমে ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিয়ুসকে দেখা যায় বার্সেলোনার খেলোয়াড়দের সঙ্গে ডাগআউট থেকে তর্কে জড়াতে। এরপর রিয়াল তারকার তোপের মুখে পড়েন ইয়ামাল। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায় ইয়ামাল যখন হেঁটে মাঠ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন তখন তাঁকে হাত দিয়ে ইশারা করে কিছু বলছেন কারভাহাল। স্প্যানিশ গণমাধ্যমগুলোর খবর, সে সময় কারভাহাল তাঁর স্পেন সতীর্থ ইয়ামালকে বলেছিলেন, ‘তুমি অনেক কথা বলো। এখন বলো দেখি!’ তখন ইয়ামাল কারভাহালের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁকে থামিয়ে দেন রিয়াল মিডফিল্ডার এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা।
এরপর দুই দলের অন্য খেলোয়াড়রা সেখানে চলে এলে শুরু হয় হাতাহাতি। উত্তেজনার মধ্যে ইয়ামালকে মাঠ থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এক পাশ থেকে ভিনিসিয়ুসকে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে এগিয়ে এসে ইয়ামালকে উদ্দেশ্য করে কিছু একটা বলতে দেখা যায়। এ সময় কয়েকজন মিলেও ভিনিকে থামাতে পারছিলেন না। পরে জানা যায় ভিনি ইয়ামালকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, ‘কী ব্যাপার! ব্যাক পাস দেওয়া ছাড়া আর কিছুই তো করলে না।! শুধুই ডিফেন্ডারদের কাছে বল দিলে।’
রেফারির ম্যাচ-পরবর্তী আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করে স্প্যানিশ গণমাধ্যম জানিয়েছে বিশৃঙ্খলার ঘটনায় ৬ জনকে হলুদ কার্ড এবং একজনকে লাল কার্ড দেখানো হয়েছে। শেষ বাঁশির পরের ঘটনায় যেসব খেলোয়াড় হলুদ কার্ড দেখেছেন তারা হলেন, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, ফেরান তোরেস, আলেহান্দ্রো বালদে, ফারমিন লোপেজ, রদ্রিগো এবং এদার মিলিতাও। আর রিয়াল মাদ্রিদের গোলরক্ষক আন্দ্রে লুনিনকে তাঁর আচরণের জন্য সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয়েছে।
ইয়ামালকে জবাব দিয়েছেন কারভাহালও.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হল দ ক র ড
এছাড়াও পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে পাটাতন দেবে সেতুতেই আটকা কাভার্ড ভ্যান, যান চলাচল ব্যাহত
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় পাটাতন দেবে সেতুতেই আটকা পড়েছে মালবাহী কাভার্ড ভ্যান। আজ শুক্রবার সকাল আটটার দিকে উপজেলার বেতছড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ কারণে সকাল থেকেই খাগড়াছড়ির সঙ্গে রাঙামাটির লংগদু উপজেলার সড়কপথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। বেলা তিনটা পর্যন্ত সড়ক দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কাভার্ড ভ্যানটি দিয়ে দীঘিনালা থেকে লংগদুতে যাচ্ছিল। তবে সেতুতেই উঠতে এর পাটাতন দেবে যায়। এরপর এটি উদ্ধার করতে অন্য যান যাওয়ার পর দেবে যায় আরও কয়েকটি পাটাতন। এ কারণে সেতুটি দিয়ে বড় ও মাঝারি আকারের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে এক পাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করছে।
সেতু দিয়ে যান চলাচলের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী ও চালকেরা। লংগদু সড়কের বাসচালক জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বাস নিয়ে খাগড়াছড়ি হয়ে চট্টগ্রাম যাওয়ায় কথা ছিল তাঁর। কিন্তু সেতু দেবে যাওয়ায় যেতে পারছেন না। বাধ্য হয়ে যাত্রীরাও বাড়তি টাকা খরচ করে বিকল্প পথে যাচ্ছেন।
জসিম মিয়ার বাসটিতে থাকা লংগদুর মাইনী এলাকার মো. আবদুর রহিম নামের এক যাত্রী বলেন, বাসে তাঁর ভারী মালপত্র রয়েছে। এ কারণে বিকল্প পথে যেতে পারছেন না। সেতুটি দিয়ে আবার যান চলাচল শুরু না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে অপেক্ষা করতে হবে।
ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াতখাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও রাঙামাটির লংগদুর বাসিন্দাদের জন্য সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ। এ সড়ক দিয়ে খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, ঢাকা সহজেই যাতায়াত করা যায়। লংগদু থেকে এ সড়ক দিয়ে সাধারণত আদা, হলুদ, কলা, আনারস, বাঁশ-বেতসহ নানা কৃষিপণ্য দীঘিনালা ও খাগড়াছড়ি আনা হয়। এরপর সেখান থেকে দেশের অন্যান্য স্থানে পাঠানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়ক দিয়ে তাঁদের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। কিছুদিন পরপর সেতুর পাটাতন দেবে যাওয়ার কারণে ভোগান্তিতেও পড়তে হয়।
অবশ্য শুধু এ সেতু নয়। এ উপজেলার বাকি সেতুগুলোর অবস্থাও একই। এটি ছাড়াও উপজেলায় আরও পাঁচটি বেইলি সেতু রয়েছে। এগুলো স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে বোয়ালখালী, মেরুং বাজার, হেডকোয়ার্টার, মাইনী ও জামতলী সেতু নামে পরিচিত। এর মধ্যে মাইনী সেতুর দৈর্ঘ্য ১১০ মিটার। আর বাকিগুলো ১৫ থেকে ৪০ ফুট।
আরও পড়ুন‘সেতুতে উঠলেই ভয়ে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়’০৪ জুলাই ২০২৫স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নব্বইয়ের দশকে নির্মাণ হওয়া এসব সেতু নিয়েই এখন ভয় সবার। ভারী যানবাহন চলাচল ও বন্যার কারণে প্রায়ই ব্রিজের পাটাতন খুলে পড়ে। এতে দুর্ঘটনার পাশাপাশি স্থবির হয় যোগাযোগব্যবস্থাও। উপজেলায় এসব সেতু দিয়েই রাঙামাটির লংগদু, বাঘাইছড়ি ও সাজেকের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হয়। প্রতিদিন গড়ে ৪০০–৫০০ গাড়ি এই পথে চলে। তবে ছুটির দিনগুলোতে সাজেকগামী গাড়ির চাপ কয়েক গুণ বেড়ে যায়।
জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘সেতুটি পাকা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি পাকা হবে। আমাদের লোকজন ঘটনাস্থলে রয়েছে। সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক করার জন্য আমাদের কর্মীরা কাজ করছেন।’