ঢাকায় মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়া এবং তাতে একজনের মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখার নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট আবেদন হয়েছে উচ্চ আদালতে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন আজ সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেবদনটি দায়ের করেন।

এক বছর আগে ঢাকার মেট্রোরেলের স্তম্ভের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ার পর গতকাল রোববার আবার একই ঘটনা ঘটে। এবার পথচারী এক যুবকের মৃত্যু ঘটে। বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার ঘোষণা গতকালই দেওয়া হয়, সেই সঙ্গে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগ।

তার এক দিন পর দুটি ঘটনার প্রেক্ষাপট, কারণ ও ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ উদ্‌ঘাটন এবং সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি বা অবহেলা আছে কি না, তা নিরূপণে কমিটি গঠন করে বিস্তারিত তদন্তের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদনটি হলো।

আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মো.

আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে আবেদনটি জমা দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার এর ওপর শুনানি হতে পারে।

রিট আবেদনে তিনি কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদন যুক্ত করে দেন। ‘মানহীন বিয়ারিং প্যাড সরবরাহ ইতাল থাইয়ের’ শিরোনামে ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারিতে একটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন, ‘১১ ঘণ্টা পর মেট্রোরেল সেবা পুনরায় চালু হলো’ শিরোনামে গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর আরেকটি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন, ‘ঢাকায় মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড মাথায় পড়ে পথচারীর মৃত্যু’ শিরোনামে গতকাল প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদন এর মধ্যে রয়েছে।

একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়েছেন জানিয়ে আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, কমিটি ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর এবং গতকাল সংঘটিত—এ দুটি ঘটনা তদন্ত করবে। বিস্তারিত তদন্ত করে ঘটনার কারণ ও প্রেক্ষাপট, মৃত্যুর কারণ এবং সংশ্লিষ্টদের কোনো গাফিলতি বা অবহেলা আছে কি না, তা নিরূপণ করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বরের ঘটনা (মেট্রোরেল চলাচল ১১ ঘণ্টা বন্ধ) নিয়ে তখন যে কমিটি গঠিত হয়েছিল, সেই কমিটির অনুসন্ধান প্রতিবেদনও ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বিবাদীদের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনমেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড কী, খুলে পড়ার কারণ কী হতে পারে২৬ অক্টোবর ২০২৫

ঢাকা জেলায় অবস্থিত মেট্রোরেল ও সব ফ্লাইওভারের পিলারে ব্যবহৃত নির্মাণসামগ্রীর (বিয়ারিং প্যাডসহ) মান যাচাই নিশ্চিতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নিষ্ক্রিয়তা এবং এসব তদারকিতে রক্ষণাবেক্ষণ কমিটি গঠন ও রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রমে জবাবদিহি ও স্বচ্ছ প্রক্রিয়া নিশ্চিতে ব্যর্থতা কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এমন একটি রুলও আদালতের কাছে চাওয়া হয়েছে।

রিট আবেদনে সড়ক যোগাযোগ ও সেতু বিভাগের সচিব এবং ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ চারজনকে বিবাদী করা হয়েছে।

আরও পড়ুনমেট্রোরেল দুর্ঘটনা: তদন্ত কমিটি গঠন, ক্ষতিপূরণ পাবে নিহত ব্যক্তির পরিবার২৬ অক্টোবর ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গতক ল তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে পুলিশের উপর সন্ত্রাসী হামলা, ৩ নারীসহ গ্রেপ্তার ৪  

বন্দরে পুলিশের উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ নারীসহ ৪ মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই সময় স্থানীয় এলাকাবাসী আহত পুলিশ সদস্য জনী (৩৫)কে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে বন্দর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেছে।  বর্তমানে সে বন্দর থানার মদনগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে কনস্টেবল পদে কর্মরত রয়েছে।

সন্ত্রাসী হামলায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, বন্দর থানার দড়ি সোনাকান্দা এলাকার জয়নাল মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন (৩০) একই এলাকার মৃত মনির হোসেনের মেয়ে ও রবিউল ইসলামের স্ত্রী লেডি সন্ত্রাসী মুন্নি আক্তার (২৭) সোনাকান্দা বেপারীপাড়া এলাকার নুরুল আমিন মিয়ার মেয়ে  ফারজানা আক্তার (২৫) ও একই এলাকার মনির হোসেনের মেয়ে ও সোহেল মিয়ার স্ত্রী সুমা (২২)।

এ ব্যাপারে মদনগঞ্জ ফাঁড়ি উপ-পরিদর্শক সৈয়দ জাকির হোসেন  বাদী হয়ে সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে গ্রেপ্তারকৃত ৪ হামলাকারিসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ্য করে ও  আরো ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে সংশ্লিষ্ট থানায় এ মামলা দায়ের করেন।

গ্রেপ্তারকৃতদের সোমবার দুপুরে উল্লেখিত মামলায় আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর আগে গত রোববার (১৬ অক্টোবর)  রাত ১০টায় বন্দর থানার ২০ নং ওয়ার্ডের দড়ি সোনাকান্দা এলাকায় এ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাটি ঘটে।

থানার তথ্য সূত্রে জানা গেছে,  রোববার রাতে মদনগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে  বন্দর থানার দড়ি সোনাকান্দা এলাকায় মাদক উদ্ধারের অভিযান পরিচালনা কালে গ্রেপ্তারকৃত আসামীরাসহ অজ্ঞাত নামা মাদক কারবারিরা পুলিশের উপর লক্ষ করে অতর্কিত হামলা চালায়।  ওই সময় হামলাকারিরা পুলিশ সদস্য জনীক বেদম ভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে পালিয়ে যায়।

এলাকাবাসী জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতরা মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক।  তারা দীর্ঘ দিন ধরে উল্লেখিত এলাকায় অবাধে মাদক বিক্রি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে।

এর ধারাবাহিকতা গত ১৫ অক্টোবর   রাত ৮টায় বন্দর থানার দড়ি সোনাকান্দা এলাকার মৃত জামাল হোসেনের ছেলে শওকত  মিয়া কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে বন্দর থানাধীন দড়ি সোনাকান্দা বেপারীপাড়া সাকিনস্থ ধৃত লেডী সন্ত্রাসী  মুন্নী বেগমের মুদি দোকানের সামনে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছামাত্র বিবাদী মুন্নীসহ অন্যান্য বিবাদীগন পথ গতিরোধ
অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ শওকতের নিকট  ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে।

আমি বিবাদীদের দাবীকৃত চাঁদার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় বিবাদীগন আমাকে মারপিট করার জন্য উদ্যত হয়।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ