মাহফুজ ও আসিফের বিরুদ্ধে মিছিল, নেতৃত্বে এনসিপি থেকে বহিষ্কৃত মুনতাসির
Published: 11th, December 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এর তদন্ত ও বিচারের দাবিতে ঢাকার সড়কে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। এ বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে বহিষ্কৃত মুনতাসির মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে রাজধানীর বাংলামোটরে এই বিক্ষোভ হয়। মিছিলের ব্যানারে আয়োজক হিসেবে লেখা ছিল ‘তৃণমূল এনসিপি’। এর আগে বিকেলে এক ফেসবুক পোস্টে ‘তৃণমূল এনসিপি’ গঠনের ঘোষণা দেন মুনতাসির মাহমুদ।
মিছিলের পর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করা হয়। সেখানে মুনতাসির মাহমুদ বলেন, দুজন ছাত্র উপদেষ্টা (মাহফুজ ও আসিফ) জুলাইয়ের প্রতিশ্রুতি নিয়ে সরকারে গেলেও তাঁরা জুলাইয়ের প্রতিশ্রুতি রাখেননি। তাঁরা ‘সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে জুলাইয়ের সঙ্গে গাদ্দারি’ করেছেন। তাই সুনির্দিষ্ট দাবি হলো, তাঁরা উপদেষ্টার দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে যত নিয়োগ হয়েছে, যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে, যেসব টেন্ডার দেওয়া হয়েছে, সেগুলোতে কারা কাজ পেয়েছেন, কিসের বিনিময়ে পেয়েছেন, তা জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে।
মুনতাসির আরও বলেন, দুই ছাত্র উপদেষ্টা পদত্যাগ করে বলেছেন, তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা নেই। কিন্তু জেন-জি প্রজন্ম জানে, দুর্নীতির টাকা কেউ অ্যাকাউন্টে রাখে না। এই টাকা তাঁরা কোথায় পাচার করেছেন, নাকি বিটকয়েনে রেখেছেন, সেটা দুদককে তদন্ত করে বের করতে হবে।
প্রসঙ্গত, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর মুনতাসির মাহমুদ রেড ক্রিসেন্টে উপপরিচালক পদে চাকরি পেয়েছিলেন। আর উপদেষ্টা মাহফুজের ভাই মাহবুব আলম রেড ক্রিসেন্টের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। রেড ক্রিসেন্টে মুনতাসির মাহমুদের চাকরিটি ছিল অস্থায়ী। অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে কয়েক দিন ধরে রেড ক্রিসেন্টের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে রাজধানীর মগবাজারে প্রতিষ্ঠানটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভ করছিলেন মুনতাসির।
আরও পড়ুনবিদায়ী দুই উপদেষ্টা সরকারে থেকে কেমন করলেন৯ ঘণ্টা আগেএনসিপির পক্ষ থেকে নিষেধ করার পরও গত ১২ অক্টোবর লোকজন নিয়ে মুনতাসির সেখানে বিক্ষোভ করেন। ওই দিন রেড ক্রিসেন্টের বোর্ড সভায় তাঁকে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়। বোর্ড সভায় উপদেষ্টার ভাই মাহবুব আলমও ছিলেন। সভার পর রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি থেকে বের হতে গেলে তাঁকে অবরুদ্ধ করেন মুনতাসির মাহমুদের অনুসারীরা।
সেদিনই মুনতাসিরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ ও পদ থেকে অব্যাহতির চিঠি ফেসবুকে প্রকাশ করে এনসিপি। এর পর থেকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বিরুদ্ধে ফেসবুক পোস্টে বিভিন্ন অভিযোগ করছিলেন মুনতাসির। সম্প্রতি এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনের বিরুদ্ধেও তিনি দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন ফেসবুকে।
আরও পড়ুনমাহফুজ ও আসিফ কি স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন নাকি কোনো দলে যাচ্ছেন৭ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ম নত স র র উপদ ষ ট ফ সব ক ও আস ফ এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের তফসিলকে স্বাগত জানালেও সতর্ক থাকার আহ্বান গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের
প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘোষিত তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে তিন দলীয় মোর্চা ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’। তবে তারা নির্বাচন নিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
জোটের মুখপাত্র ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম ও আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু এ আহ্বান জানান। জোটের পক্ষে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদারুল ভূঁইয়া এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করায় সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের নেতারা বলেছেন, এত দিন যেসব সুযোগসন্ধানী ও সংস্কারবিরোধী চক্র নির্বাচন হবে না বলে গল্প ছড়িয়েছিল, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে তাদের মুখে চুনকালি পড়েছে। সব জল্পনাকল্পনার অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করে সরকার জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
তবে নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে অস্বস্তি প্রকাশ করে জোটের নেতারা বলেন, সব দলের প্রতি সমান আচরণ এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখনো সম্ভব হয়নি। বেশ কয়েক জায়গায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে। এসব হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁরা বলেন, এ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে ১ হাজার ৪০০ শহীদ এবং হাজারো আহত মানুষের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণ-অভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।
সম্প্রতি গঠিত জোটটির নেতারা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এবারের নির্বাচন ইতিহাসের সেরা নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মনোভাব এখনো ততটা জনবান্ধব নয়। অতি দ্রুত পেশাদার ও নিরপেক্ষ আচরণ নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে তাগিদ দেন তাঁরা।
সব শর্ত পূরণ এবং হাইকোর্টের আদেশ সত্ত্বেও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনকে এখনো নিবন্ধন দেওয়া হয়নি উল্লেখ করে গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের বিবৃতিতে বলা হয়, এ ধরনের আচরণ জনমনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে শঙ্কা তৈরি করবে।
তবে সব নেতিবাচক আচরণ ও প্রশ্নবোধক কর্মকাণ্ড পরিহার করে নির্বাচন কমিশন ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিন দলীয় জোটটির নেতারা।