তফসিল নিয়ে আপাতত কোনো আপত্তি নেই এনসিপির
Published: 11th, December 2025 GMT
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিলকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটি বলেছে, তফসিল নিয়ে আপাতত তাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে তফসিল পর্যালোচনায় যদি কোনো আপত্তি উঠে আসে, তাহলে সে বিষয়ে এনসিপিসহ তিন দলের ‘গণতান্ত্রিক সংস্কার জোট’ সংবাদ সম্মেলন করে জানাবে।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন দলের মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তফসিল সম্পর্কে এনসিপির প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর যারা অভিযোগ করেছিল এই সরকার নির্বাচন করবে না এবং সরকারের ঘাড়ে বন্দুক রেখে যারা সংস্কার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করেছিল, তফসিলের মাধ্যমে তাদের সেই আশঙ্কা সরকার দূর করল বলে মন্তব্য করেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ একটি নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ও সরকারের সদিচ্ছা আমরা দেখেছি। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও সক্ষমতার কিছু অভাব রয়েছে। আশা করব, সরকার সে বিষয়গুলো কাটিয়ে উঠে বাংলাদেশকে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেবে।’
নানা অভিযোগসংবাদ সম্মেলনে এনসিপি নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বেশ কিছু অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন যেটা হচ্ছে, এটি একটি লন্ডন ডিলের (সমঝোতার) মধ্য দিয়ে হয়েছিল। এটা যদি দেশে ঘোষণা হতো সব দলকে নিয়ে, সেটার মধ্যে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গাটা অনেক বেশি এগিয়ে আসত।’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে এনসিপির তিনজনকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। ঢাকা–২ আসনে এনসিপির সংবাদ করায় একজন সাংবাদিককে মারধর করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় অস্ত্রের ঝনঝনানি শোনা যাচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অতীতের পেশিশক্তি, টাকার প্রভাব, গডফাদারের সংস্কৃতি কতটুকু বন্ধ করা যাবে, সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ আছে। নির্বাচন কমিশন দলীয় প্রভাবের বাইরে গিয়ে কতটুকু নিরপেক্ষ হতে পারবে, সে ব্যাপারে আমাদের সন্দেহের জায়গা রয়েছে।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘লটারির মাধ্যমে এসপি–ডিসি (পুলিশ সুপার–জেলা প্রশাসক) নিয়োগ হলেও জাতির সামনে স্পষ্ট করা হয়নি কাদের নিয়োগ করা হচ্ছে। একটা অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় এটা করা হয়েছে। সরকার গণভোটে যে প্রশ্নবোধক চিহ্নগুলো রেখেছিল, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীরও যথেষ্ট সক্ষমতার পরিচয় দেখা যাচ্ছে না। আমাদের নারী প্রার্থীদের অনলাইনে হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা নির্বাচন কমিশনকে সাইবার বুলিং ও অনলাইনে নারীদের হয়রানির বিষয়ে একটি মনিটরিং সেল গঠন করার কথা বলেছিলাম। কিন্তু এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি।’
প্রার্থীদের জন্য নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত ব্যয়সীমা এনসিপি মেনে চলবে উল্লেখ করে দলের মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘অন্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রেও নির্বাচন কমিশনকে এটা নিশ্চিত করতে হবে। জনগণের দেয়াল ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পোস্টারের অপসংস্কৃতিতে ভরে গেছে। আশা করব নির্বাচন কমিশন যে নিয়ম দিয়েছে, তা সবাই মেনে চলবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে এনসিপির মিডিয়া সেলের সম্পাদক মুশফিক উস সালেহীন উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন স র দ দ ন প টওয় র এনস প র তফস ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
এস আলমের ১ হাজার ৯৩৬ একর জমি জব্দের আদেশ
এস আলম গ্রুপের কর্ণধার মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম), তাঁর পরিবারের সদস্য ও তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ১ হাজার ৯৩৬ দশমিক ৫০ একর জমি জব্দের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। এসব সম্পদের আনুমানিক মূল্য দেওয়া হয়েছে ১৬ হাজার ৯৪০ কোটি ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭৭৩ টাকা।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম। তিনি বলেন, দুদকের পক্ষে সহকারী পরিচালক তানসিন মুনাবিল হক জব্দের আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান এস আলম, তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট সত্তা ও সত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য অনুসন্ধান ও তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, এস আলম, তাঁর পরিবারের সদস্যরাসহ স্বার্থসংশ্লিষ্ট সত্তা ও সত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে–বেনামে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ নিয়ে তা আত্মসাৎ করেছেন। এভাবে তাঁরা নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদ অর্জন করেছেন।
দুদকের আবেদনে আরও বলা হয়েছে, অনুসন্ধানে বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা গেছে, এস আলম ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা স্থাবর সম্পদ অন্যত্র হস্তান্তর, স্থানান্তর বা বেহাত করার চেষ্টা করছেন। অনুসন্ধান নিষ্পত্তির আগে এসব সম্পদ হস্তান্তর বা স্থানান্তর হয়ে গেলে পরে টাকা উদ্ধার করা দুরূহ হবে। তাই এস আলম, তাঁর পরিবারের সদস্যরাসহ তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট সত্তা ও সত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির স্বার্থসংশ্লিষ্ট স্থাবর সম্পদ জরুরি ভিত্তিতে জব্দ করা প্রয়োজন।