যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোটের (আসিয়ান) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে গতকাল রোববার বৈঠক করেছেন। বৈঠকটি গঠনমূলক হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রাজিল। ব্রাজিলের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের বড় ধরনের শুল্ক আরোপের পর ট্রাম্প-লুলার বৈঠককে দুই দেশের সম্পর্কে সম্ভাব্য উন্নতির ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বৈঠকের পর লুলা বলেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে ‘দারুণ’ বৈঠক হয়েছে। দুই দেশের আলোচনাকারী দল শুল্ক এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে এখন থেকে কাজ শুরু করবে।

প্রসঙ্গত, ট্রাম্প ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোর মিত্র। আর বলসোনারো হচ্ছেন লুলার প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লুলা লিখেছেন, ‘ব্রাজিলের ওপর আরোপিত শুল্ক এবং কিছু কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞার সমাধান খুঁজতে আমাদের প্রতিনিধিদলগুলো অবিলম্বে বৈঠকে বসবে, এ বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি।’

ট্রাম্প প্রশাসন জুলাই মাসে ব্রাজিলের প্রায় সব পণ্যের ওপর শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করেছে। ‘বলসোনারোকে অন্যায়ভাবে হয়রানি করার’ অভিযোগে দেশটির পণ্যে শুল্ক এতটা বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প।

২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজয়ের পর অভ্যুত্থানচেষ্টার দায়ে ব্রাজিলের অতিডানপন্থী নেতা জাইর বলসোনারোকে ২৭ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

বলসোনারোর পরাজয়ের পর তাঁর সমর্থকেরা দেশটির রাজধানী ব্রাসিলিয়ার রাজনৈতিক কেন্দ্রস্থলে দাঙ্গা শুরু করেছিলেন। এটা ট্রাম্পের পরাজয়ের পর ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি তাঁর সমর্থকদের দেশটির কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল হিলে হামলা চালানোর স্মৃতির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

শুল্ক আরোপের পাশাপাশি ট্রাম্প প্রশাসন ব্রাজিলের অনেক কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছে। এর মধ্যে দেশটির সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেক্সান্দ্রে দে মোরেস অন্যতম। তিনি বলসোনারোর বিচারের কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করেছিলেন।

গতকাল কুয়ালালামপুরে বৈঠকের আগে ট্রাম্প বলেছিলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তিনি কিছু বিষয়ে সম্মতিতে পৌঁছাতে পারেন। বলসোনারোকে নিয়ে তাঁর উদ্বেগ সত্ত্বেও দুই দেশের সম্পর্ক শক্তিশালী থাকবে বলে আশা করেন তিনি। ট্রাম্পের ভাষায়, ‘আমি মনে করি, আমরা উভয় দেশের জন্য কিছু চমৎকার চুক্তি করতে পারি।’

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ককে ‘ভুল’ বলে মন্তব্য করেছিলেন লুলা। লুলার তথ্যমতে, গত ১৫ বছরে ব্রাজিলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক ঘাটতি প্রায় ৪১ হাজার কোটি ডলার হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ল ন বলস ন র দ শট র র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অবিলম্বে গণভোট দিতে হবে- খেলাফত মজলিস

খেলাফত মজলিস নেতৃবৃন্দ বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই জাতীয় সনদ ঘোষণা করলেও এখনো তার আইনি ভিত্তি তৈরি ও বাস্তবায়ন আদেশ জারি করতে পারেনি। এই জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি।

জনগণ এই সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছিল ফ্যাসিবাদীদের বিচার, প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য। তাই জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি না থাকলে নির্বাচন ও সংস্কারের কোন মূল্য নেই। 

আমরা অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও গণভোটের মাধ্যমে তার শক্তিশালী আইনি ভিত্তি দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। আমরা নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি সংসদের উচ্চ কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, ফ্যাসিবাদীদের বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমান, ফ্যাসিবাদী দল ও দোসরদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। 

খেলাফত মজলিস ঘোষিত ৬ দফা দাবি আদায়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচী হিসেবে খেলাফত মজলিস নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর শাখার উদ্যোগে ২৭ অক্টোবর-২০২৫, সোমবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব চত্বরে এক বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল চাষাঢ়া চত্বর প্রদক্ষিণ করে ডিআইটি চত্বরে এসে শেষ হয়।

খেলাফত মজলিসের নারায়ণগঞ্জ মহানগর সভাপতি হাফেজ কবির হোসেনের সভাপতিত্বে ও ফতুল্লা থানা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শরীফ মাহমুদের পরিচালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন- মহানগর সহ-সভাপতি অধ্যাপক শাহ আলম, ডাক্তার শামীম ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক ও ৪ আসনের এমপি প্রার্থী ইলিয়াস আহমদ, সহ-সাধারণ সম্পাদক মুফতী শেখ শাব্বীর আহমাদ, নুর মোহাম্মদ খান, জেলা সহ-সাধারণ সম্পাদক মুফতী আব্দুল গনী, মুহাম্মদ শরীফ মিয়াজী, ইসলামী যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক প্রভাষক মাইদুল ইসলাম, জেলা সভাপতি রিফাত আহমদ সাজিদ, ইসলামী ছাত্র মজলিসের মহানগর সভাপতি মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ, জেলা সভাপতি আনাস আহমদ, খেলাফত মজলিসের জেলা সমাজকল্যাণ সম্পাদক আব্দুল করীম মিন্টু, মহানগর প্রচার সম্পাদক মুফতী তৌফিক বিন হারিছ, প্রমুখ৷ 

 

খেলাফত মজলিস নেতৃবৃন্দ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো নাজুক। এখনো গুম, হত্যা, নির্যাতন বন্ধ হয়নি। সাম্প্রতিক হিন্দুত্ববাদী উগ্র সংগঠনের অপতৎপরতা বৃদ্ধির কারণে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের আশংকা সৃষ্টি হয়েছে। প্রশাসনকে এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সরকারকে অবশ্যই অন্যায়ের বিপক্ষে ও ন্যায়ের পক্ষে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। 

 

খেলাফত মজলিসের ৬ দফা দাবিসমূহ:

১। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও উক্ত আদেশের উপর আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা

২। আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উচ্চ কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা

৩। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সকলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা

৪। ফ্যাসিস্ট সরকারের সকল জুলুম নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা

৫। ফ্যাসিবাদী দল ও দোসরদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড স্থগিত

৬। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগে ব্যবস্থা গ্রহণ। 

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ