জাতীয় তিন নারী শুটারকে হুমকি ও যৌন হয়রানির অভিযোগে বাংলাদেশ শুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনের এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। বুধবার রাজধানীর গুলশান থানায় জিডিটি করা হয়।

জিডিতে ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জি এম হায়দার সাজ্জাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় শুটিং দলের কোচ শারমিন আক্তারের বিরুদ্ধে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ করা হয়েছে। জিডিটি করেছেন হয়রানির অভিযোগ তোলা তিন নারী শুটারের একজন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

হাফিজুর রহমান জিডি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের অনুমতি নিয়ে জিডিতে উল্লেখ করা অভিযোগ তদন্ত করে দেখবে পুলিশ।

নারী শুটার জিডিতে বলেন, তাঁরা তিনজনই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পদক পাওয়া শুটার। জি এম হায়দার সাজ্জাদ তাঁদের ওপর মানসিক নির্যাতন করেছেন। গত ২৫ অক্টোবর বিকেলে সাজ্জাদ তাঁকে অফিসে ডেকে চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে মানসিক নিপীড়ন করেন এবং অপমানজনক কথা বলেন। একজন নারী ক্রীড়াবিদ হিসেবে এটি তাঁর মানসিক কষ্টের কারণ হয়েছে। এতে তাঁর প্রশিক্ষণ ও খেলাধুলার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

জিডিতে ওই নারী শুটার আরও অভিযোগ করেন, দলের বর্তমান কোচ শারমিন আক্তার তাঁর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন এবং অপমানজনক মন্তব্য করেছেন। দুই কর্মকর্তার আচরণে তিনি আতঙ্কিত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। গত ২০ সেপ্টেম্বর তিনি ও আরেক নারী শুটারকে শুটিং ফেডারেশনের ভেতরেই ধর্ষণের হুমকি দেন সাজ্জাদ। ৯ নভেম্বর তাঁরা এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বক্তব্য দেন। এরপর সাজ্জাদ হুমকি দিয়ে তাঁকে সমঝোতা করতে বলছেন। সমঝোতা না করলে তাঁদের ক্ষতি করার হুমকি দেওয়া হয়েছে। ফলে তিনি ও তাঁর দুই সহকর্মী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার রাতে জি এম হায়দার সাজ্জাদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। আর তিন নারী শুটারের মধ্যে একজন শুটিং ফেডারেশনের সদস্য নন। তিনি চেয়েছিলেন, ঘটনার তদন্ত হোক। সে কারণে শুটিং ফেডারেশন তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

অন্যদিকে কোচ শারমিন আক্তারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। তাঁকে খুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত কর ছ ন য গ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ডেঙ্গুতে মাসের সর্বোচ্চ সংক্রমণ, ২৪ ঘণ্টায় ৭ জনের মৃত্যু

দেশে চলতি বছর ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ সংক্রমণ হয়েছিল গত অক্টোবরে। আর নভেম্বর শেষ হওয়ার তিন দিন বাকি থাকতেই আজ সেই আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭ জন আর এ সময় নতুন করে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬৭ জন।

আজ বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৫৬৭ জন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোয় ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ২১১ জন। দুই সিটির বাইরে ঢাকা বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৯২। সব মিলিয়ে এবার এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে ৯২ হাজার ৭৮৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর এখন পর্যন্ত এডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৭৭ জন।

এ মাসে ডেঙ্গু যে বেশি ছড়াবে, তা গত মাসেই আশঙ্কা করেছিলেন একাধিক গবেষক। এ মাসে ইতিমধ্যেই সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী ডিসেম্বরে ডেঙ্গু কিছু কমতে পারে, তবে তা খুব বেশি হারে কমবে না। আর ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশার উপদ্রুবও খুব বেশি কমেনি এ মাসে, জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই তাঁদের ধারণা, ডেঙ্গুর আক্রমণ কমার জন্য আগামী বছরের জানুয়ারির শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

বিশিষ্ট কীটতত্ত্ববিদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবীরুল বাশার আজ প্রথম আলোকে বলেন, এ মাসে এডিস মশার বিস্তার যতটা কমবে বলে ভাবা হয়েছিল, তা কমেনি। আর এর ফলে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। আগামী মাসেও ডেঙ্গুর সংক্রমণ যে উল্লেখযোগ্য হারে কমবে, তা মনে হয় না। ডেঙ্গুর আক্রমণ কমতে পারে আগামী জানুয়ারি মাসের শেষ দিক থেকে।

অধ্যাপক কবীরুল বাশার মনে করেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কিউলেক্স মশার উপদ্রব বাড়তে পারে। বৃষ্টি হওয়ার এক মাস পর সাধারণত এডিস মশার বিস্তার বাড়তে থাকে। চলতি মাসের শুরুর দিকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়। সে অনুযায়ী, এ দফায় এডিসের বিস্তার কমতে আগামী মাসের অন্তত সাত তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করেন জনস্বাস্থ্যবিদ মুশতাক হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, যদি এর মধ্যে আবার বৃষ্টি হয়, তবে ডেঙ্গুর প্রকোপ আবারও বাড়তে পারে।

এরই মধ্যে সাগরে একটি নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই এখন পর্যন্ত জানাচ্ছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদেরা।

২৪ ঘণ্টায় ৭ জনের মৃত্যু

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গুতে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চারজনই মারা গেছেন ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার বিভিন্ন হাসপাতালে। এর মধ্যে দক্ষিণ সিটির ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন এবং মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়। উত্তর সিটির কোভিড–১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালে মারা গেছেন একজন। বাকি তিনজনের মধ্যে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়।

২০০০ সালে ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ওই বছর ৫ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এর মধ্যে মারা যান ৯৩ জন। ঘটনাটি সাধারণ মানুষের কাছে নতুন ছিল। ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত ও মারা যান ২০২৩ সালে। সে বছর আক্রান্ত হয়েছিলেন তিন লাখের বেশি মানুষ, মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আলতাফ চৌধুরীর বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাল জেলা বিএনপি
  • ব্যাট–প্যাড কিনতে পেছাচ্ছে বিপিএল
  • বরগুনায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণর দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড
  • শ্রীপুরে কথা–কাটাকাটির জেরে ৫ সহপাঠীকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ, কিশোর পলাতক
  • দুদকের পরিধি বাড়ছে, আসছে নতুন নিয়ম
  • ডেঙ্গুতে মাসের সর্বোচ্চ সংক্রমণ, ২৪ ঘণ্টায় ৭ জনের মৃত্যু
  • শিকলে বাধা শান্তর চিকিৎসায় ইউএনওর সহায়তা
  • নারীরা চলাফেরা, আচরণের ক্ষেত্রে যে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন, তা কল্পনা করা যায় না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
  • বিশ্বকাপে নিষিদ্ধ হচ্ছেন না রোনালদো, খেলতে পারবেন পর্তুগালের প্রথম ম্যাচ থেকেই