গাজায় হামলায় নিহত ২০, বন্দির মরদেহ হস্তান্তর স্থগিত করল হামাস
Published: 29th, October 2025 GMT
দক্ষিণ রাফাহতে গোলাগুলির ঘটনার পর সেনাবাহিনীকে হামলা চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। গোলাগুলির ঘটনায় এক ইসরায়েলি সৈন্য আহত হওয়ার পর ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ২০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন। এ ঘটনার পর বন্দির মরদেহ হস্তান্তর স্থগিত করেছে হামাস।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতির পর এটিই সবচেয়ে বড় সহিংসতার ঘটনা। খবর আলজাজিরার।
হামাসের সশস্ত্র শাখা ইজ্জেদিন আল–কাসসাম ব্রিগেড ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে জানিয়েছে, তারা এক বন্দির মরদেহ হস্তান্তরের পরিকল্পনা স্থগিত করেছে।
এক বিবৃতিতে সংগঠনটি সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েলি আগ্রাসন অব্যাহত থাকলে “মরদেহ অনুসন্ধান, খনন ও উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাহত হবে, ফলে বাকি ১৩ বন্দির মরদেহ উদ্ধারে বিলম্ব ঘটবে।”
এদিকে, ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স জানিয়েছেন, উভয় পক্ষের হামলার অভিযোগ সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতি এখনো বহাল আছে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের উপ-রাষ্ট্রপতি জেডি ভ্যান্স বলেছেন, হামলা ও পারস্পরিক অভিযোগ সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতি টিকে আছে। তিনি বলেন, “ছোটখাটো সংঘর্ষ হতে পারে। কিন্তু প্রেসিডেন্টের শান্তি উদ্যোগ এই পরিস্থিতিতেও বহাল থাকবে।”
চিকিৎসা সূত্র জানায়, মঙ্গলবারের হামলায় নিহতদের মধ্যে উত্তর গাজার সাবরা এলাকায় এক আবাসিক ভবনে চারজন এবং দক্ষিণ খান ইউনূসে পাঁচজন রয়েছেন। অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।
গাজা সিটি থেকে আলজাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, একটি ক্ষেপণাস্ত্র আল-শিফা হাসপাতালের পেছনে পড়েছে।
তিনি বলেন, “গাজার আকাশজুড়ে ড্রোন উড়তে দেখা গেছে, আকাশে ব্যাপক তৎপরতা চলছে। হামলাটি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে, আমরা ঘটনাস্থল থেকে ২০ মিনিট দূরে থেকেও বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। এতে হাসপাতালের ভেতরে রোগী ও চিকিৎসাকর্মীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।”
সিভিল ডিফেন্সকর্মী ইব্রাহিম আবু রিশ ঘটনাস্থল থেকে বলেন, “এটি যুদ্ধবিরতির সরাসরি লঙ্ঘন। আমরা হতাহত পেয়েছি এবং যত বেশি সম্ভব মানুষকে উদ্ধারের চেষ্টা করছি।”
হামাস জানায়, চলমান বোমা হামলা যুদ্ধবিরতির স্পষ্ট লঙ্ঘন। তবে সংগঠনটি বলেছে, তারা এখনো চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
হামাস নেতা সুহাইল আল-হিন্দি আলজাজিরাকে বলেন, “আমরা চুক্তি মেনে চলছি। ইসরায়েল মিথ্যা অভিযোগ তোলা বন্ধ করুক।”
ঢাকা/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন এইচআরসিবিএম
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা এক গভীর সংকটে রূপ নিয়েছে বলে মনে করে হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম)। সংগঠনটির হিসাবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ৯০ জন সংখ্যালঘু নাগরিক নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকে হত্যার শিকার হয়েছেন, আবার অনেকের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ অবস্থায় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এইচআরসিবিএম।
বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে (ক্র্যাব) সংবাদ সম্মেলন করে এইচআরসিবিএম এ কথা বলেছে। পরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এইচআরসিবিএম বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের আহ্বায়ক লাকী বাছাড় এ তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লাকী বাছাড়। তাতে তিনি বলেন, ২০২৫ সাল বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সংখ্যালঘুরা হামলা, লুটপাট, মব সহিংসতার শিকার হয়েছেন। তাঁদের বাড়িঘর পোড়ানো হয়েছে, নারী নির্যাতন হয়েছে, ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হেনস্তার ঘটনা ঘটেছে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভূমি দখল হয়েছে। হত্যা, মিথ্যা মামলা, উচ্ছেদের শিকার হয়েছেন সংখ্যালঘুরা। এসব অপরাধে জড়িতদের বিচার হয়নি সেভাবে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাহীনতা উদ্বেগ তৈরি করছে।
এইচআরসিবিএমের তথ্যমতে, শুধু ডিসেম্বর মাসের প্রথম ৯ দিনে দেশে ৯ জন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ হত্যার শিকার হয়েছেন। এ ছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত দেশে ৯০ জন সংখ্যালঘু নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে বা রহস্যজনকভাবে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
সংগঠনটি জানায়, তারা গত এক বছর বিভিন্ন সহিংসতা ও নির্যাতনের ঘটনায় জরুরি মনিটরিং সেল সক্রিয় করেছে। মাঠপর্যায়ে তথ্য যাচাই ও স্বাধীন প্রতিবেদন সংগ্রহ করেছে।