চার মাসে শুল্ক–কর আদায়ে ঘাটতি ১৭ হাজার কোটি টাকা
Published: 20th, November 2025 GMT
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) শুল্ক-কর আদায়ে ঘাটতি ১৭ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে।
শুল্ক-কর আদায় প্রতিবারের মতো এবারও পিছিয়ে পড়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এনবিআরের হিসাব অনুসারে, গত জুলাই-অক্টোবর সময়ে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আদায় ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা। এ সময়ে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয়েছে ১৭ হাজার ২১৯ কোটি টাকা। এনবিআরের রাজস্ব আদায়ের হালনাগাদ চিত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
চলতি অর্থবছর এনবিআরকে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকার শুল্ক-কর আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে সাড়ে ১৫ শতাংশ। আগের বছর একই সময়ে (জুলাই-অক্টোবর) ১ লাখ ৩ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা।
আলোচ্য সময়ে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি হয়েছে আয়কর খাতে। চার মাসে ঘাটতি হয় ৯ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা। এই খাতে আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৪৭ হাজার ৪৩ কোটি টাকা। এ সময়ে আদায় হয়েছে ৩৭ হাজার ৮৪৯ কোটি টাকা।
আমদানি খাতে চার মাসে ৪১ হাজার ৫০৭ কোটি টাকার লক্ষ্যের বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩৪ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। এই খাতে ঘাটতি হয়েছে ৬ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা।
গত জুলাই-অক্টোবরে ভ্যাট বা মূসক আদায়েও লক্ষ্য পূরণ হয়নি। এই খাতের লক্ষ্য ছিল ৪৮ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। ভ্যাট আদায় হয়েছে ৪৬ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা। এ সময়ে এই খাতে ঘাটতি ১ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা।
এনবিআরের কর্মকর্তা বলছেন, ব্যবসা-বাণিজ্য শ্লথগতি থাকায় রাজস্ব আদায় তুলনামূলক কম হয়েছে। তবে বছরের শেষ দিকে রাজস্ব আদায়ে গতি বাড়বে বলে মনে করেন তাঁরা। তারা বলেন, করের আওতা বৃদ্ধি, কর পরিপালন নিশ্চিতকরণ, কর ফাঁকি প্রতিরোধ এবং ফাঁকি দেওয়া রাজস্ব পুনরুদ্ধার করার কাজ করছে এনবিআর।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এনব আর র র লক ষ য এই খ ত
এছাড়াও পড়ুন:
বিএসআরএম স্টিলের মুনাফা বেড়ে দ্বিগুণ
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিএসআরএম স্টিলের মুনাফা দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। চলতি ২০২৫–২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই–সেপ্টেম্বর) কোম্পানিটির মুনাফা গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে। কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২১ কোটি টাকায়। গত অর্থবছরের একই প্রান্তিকে যার পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের চেয়ে চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বিএসআরএম স্টিলের মুনাফা ৬৫ কোটি টাকা বা ১১৬ শতাংশ বেড়েছে। অর্থাৎ মুনাফা দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে কোম্পানিটির।
সম্প্রতি কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় গত জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়। সেই প্রতিবেদনেই কোম্পানিটির মুনাফার এই চিত্র উঠে এসেছে। কোম্পানি সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে কোম্পানিটির নতুন একটি কারখানায় বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়। ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই কারখানার বার্ষিক উৎপাদনক্ষমতা প্রায় আট লাখ টন। পুরোদমে এই কারখানায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয় বিএসআরএম স্টিলের পণ্য উৎপাদন যেমন বেড়েছে, তেমনি বিক্রিও বেড়েছে। যার সুফল কোম্পানির আয় ও মুনাফায় পড়েছে।
আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বিএসআরএম স্টিল ২ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকার ব্যবসা করেছে। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে গত বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বরের চেয়ে চলতি বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির আয় ১ হাজার ১১৪ কোটি টাকা বা ৭৩ শতাংশ বেড়েছে। তার বিপরীতে মুনাফা বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
ব্যবসা যতটা বেড়েছে, তার চেয়ে মুনাফা বেশি বেড়েছে। কারণ, কোম্পানিটির পরিচালন খরচও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। গত বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে পণ্য বিক্রি ও প্রশাসনিক খাতে কোম্পানিটির খরচ হয়েছিল ৭০ কোটি টাকার বেশি। সেখানে চলতি বছরের একই সময়ে খরচ হয়েছে প্রায় ৫১ কোটি টাকা। পরিচালন খরচ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে যাওয়ায় তাতে মুনাফাও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে।
জানতে চাইলে বিএসআরএম গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেনগুপ্ত প্রথম আলোকে বলেন, ‘চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আমাদের নতুন একটি কারখানায় বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে। তাতে উৎপাদন যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে বিক্রিও। আবার কয়েক বছর ধরে আমরা উৎপাদন ও পরিচালন খরচ কমাতে ধারাবাহিকভাবে নানা উদ্যোগ নিয়েছি। যার সুফলও এখন পাওয়া যাচ্ছে। সব মিলিয়ে বিএসআরএমের বিক্রি যেমন বেড়েছে, তেমনি মুনাফাও বেড়েছে। আশা করছি, কোম্পানির বিক্রি ও মুনাফার এই প্রবৃদ্ধি আমরা সামনের দিনগুলোতেও ধরে রাখতে পারব।’