চট্টগ্রামের দুই আসন এখনো ফাঁকা, কারা হচ্ছেন বিএনপির প্রার্থী
Published: 5th, December 2025 GMT
চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ১৪টিতে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। তবে এখন পর্যন্ত দুটি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি দলটি। এই দুটি আসন হলো বন্দর-পতেঙ্গা ও চন্দনাইশ। ফাঁকা এই দুই আসনে কারা প্রার্থী হতে পারেন, তা নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চলছে নানামুখী আলাপ-আলোচনা।
চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলা ও ৩৪টি থানা এলাকা নিয়ে সংসদীয় আসন রয়েছে ১৬টি। এর মধ্যে নগরের ১৬টি থানা এলাকায় সংসদীয় আসন চারটি। পাঁচটি আসন রয়েছে চট্টগ্রাম জেলার দক্ষিণের এলাকাগুলোয়। সাতটি রয়েছে উত্তর চট্টগ্রামে।
চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে ১০টিতে গত ৩ নভেম্বর প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার আরও চারটি আসনের জন্য দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা করেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা কামাল পাশা, চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান (পদ স্থগিত) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) আসনে নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান ও চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া) আসনে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাজমুল মোস্তফা আমিনকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে নাজমুল মোস্তফা আমিন নতুন মুখ।
প্রথম দফায় ঘোষিত ১০টি আসনে প্রার্থী ঘোষণার পর ৯টিতেই মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারীরা সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি তুলেছেন। গতকাল দ্বিতীয় দফায় ঘোষণা করা চারটি আসনের মধ্যে চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া) আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মশালমিছিল ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ হয়েছে।
চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা)
বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা না করলেও এই আসনে জনসংযোগ করছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ছেলে ও বিএনপির আন্তর্জাতিক–বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু চৌধুরী। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘এক পরিবার থেকে এক প্রার্থী’ ঘোষণা দেওয়ায় ইসরাফিল খসরুর ভাগ্যে দলীয় মনোনয়ন জুটবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে।
১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পরপর চারবার এই এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বাবার গোছানো আসনে দলীয় প্রতীক নিয়ে তাই প্রার্থী হতে ইচ্ছুক ইসরাফিল খসরু। জানতে চাইলে ইসরাফিল খসরু প্রথম আলোকে বলেন, ‘১২ বছর ধরে এলাকায় কাজ করছি। বাকিটা দলের নীতিনির্ধারকদের বিষয়।’১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পরপর চারবার এই এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বাবার গোছানো আসনে দলীয় প্রতীক নিয়ে তাই প্রার্থী হতে ইচ্ছুক ইসরাফিল খসরু। জানতে চাইলে ইসরাফিল খসরু প্রথম আলোকে বলেন, ‘১২ বছর ধরে এলাকায় কাজ করছি। বাকিটা দলের নীতিনির্ধারকদের বিষয়।’
২০০৮ সালের নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনটি গঠিত হয়েছে। এর আগে এলাকাটি অন্য আসনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। আসনটিতে বিএনপির প্রার্থী কে হচ্ছেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি বিশেষ আগ্রহ রয়েছে ব্যবসায়ীদেরও। কারণ, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর, চট্টগ্রাম কাস্টমস, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, পেট্রোলিয়াম করপোরেশনসহ আমদানি-রপ্তানিসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এলাকাটিতে অবস্থিত।
চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া আংশিক)
এই আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন, ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক মহসিন জিল্লুর করিম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মিজানুল হক চৌধুরী ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী। তাঁরা সবাই এলাকায় নিয়মিত জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের দাবি, আসনটি দলের কাউকে দেওয়া হোক। কিন্তু জোটের জন্য দলের নীতিনির্ধারকেরা আসনটি ফাঁকা রেখেছেন বলে জানা গেছে।
এলডিপির সঙ্গে বিএনপির কথাবার্তা চলছে। শেষ পর্যন্ত কী হয়, দেখা যাক। ওমর ফারুক, প্রেসিডিয়াম সদস্য, এলডিপি।দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির সঙ্গে জোট হলে চট্টগ্রাম-১৪ আসনটি এলডিপির জন্য ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.
দুটি আসন ফাঁকা রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘জোটের কারণে দলের নীতিনির্ধারকেরা একটু সময় নিচ্ছেন।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দল র ন ত ন র ধ প রথম আল ক ব এনপ র স কম ট র স কর ম দ র এলড প র ই আসন সদস য আসন র
এছাড়াও পড়ুন:
তফসিলের আগেই নির্বাচনী হাওয়া, বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা আগেভাগেই মাঠে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রাজধানীর পাশের জেলা নারায়ণগঞ্জে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো সরব হয়ে উঠেছে। জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা আগেভাগেই মাঠে নেমেছেন। তাঁরা গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, নেতা-কর্মীদের নিয়ে সভা-সমাবেশ করছেন।
সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যানার–ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে জেলা শহর ও উপজেলাগুলো। ফলে তফসিল ঘোষণার আগেই নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে শিল্প–অধ্যুষিত এ জেলায়।
নারায়ণগঞ্জ-৪ (সদর) আসনটি ফাঁকা রেখে জেলার অন্য চারটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। দলীয় প্রার্থী নিয়ে দুটি আসনে বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গেছে, যা দলীয় রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়েছে। তবে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীরা প্রচারে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরাও সব কটি আসনে নিয়মিত প্রচার চালাচ্ছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, গণসংহতি আন্দোলনসহ আরও কয়েকটি দল নির্বাচনের মাঠে তৎপরতা চালাচ্ছে। একাধিক আসনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বেশ কয়েকজন নেতা দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী বলে জানা গেছে।
নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ)
রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাজধানীর লাগোয়া আসনটিতে ১৯৯১ থেকে ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুবার, বিএনপি একবার এবং জাতীয় পার্টির প্রার্থী একবার জয়ী হয়েছেন। এবার জাতীয় পার্টি এখনো মাঠে নেই। আওয়ামী লীগ বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল। বিএনপি ও জামায়াতের মনোনীত প্রার্থীরা এলাকায় তৎপর।
বিএনপি এখানে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়াকে (দিপু ভুঁইয়া) প্রার্থী করেছে। তিনি এবার প্রথম সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী হচ্ছেন। তিনি নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি। ২০০৮ ও ২০১৮ সালে এখানে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন নির্বাহী কমিটির আরেক সদস্য কাজী মনিরুজ্জামান। তিনি এবার মনোনয়ন পাননি।
জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনে বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা আগেভাগেই মাঠে নেমেছেন। তাঁরা গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, নেতা-কর্মীদের নিয়ে সভা-সমাবেশ করছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের ব্যানার–ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে জেলা শহর ও উপজেলাগুলো।গণসংযোগ শুরুর পর থেকে মানুষের সাড়া পাচ্ছেন উল্লেখ করে মোস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে কে এমপি-মন্ত্রী হলো সেট বড় বিষয় নয়, রূপগঞ্জবাসীর জন্য উন্নয়ন ও দলের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে এলাকার সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সমাধানে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই।’
জামায়াত এখানে প্রার্থী করেছে আনোয়ার হোসেন মোল্লাকে। রূপগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের মজলিশে শুরার এই সদস্য এলাকায় গণসংযোগ, উঠান বৈঠক করছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার সাবেক আহ্বায়ক নীরব রায়হান ও যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক সাইফুল ইসলাম এখানে এনসিপির মনোনয়নপ্রত্যাশী বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
নারায়ণগঞ্জ-৪ (সদর) আসনটি ফাঁকা রেখে জেলার অন্য চারটি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। দলীয় প্রার্থী নিয়ে দুটি আসনে বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গেছে, যা দলীয় রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়িয়েছে।নারায়ণগঞ্জ-২ (আড়াইহাজার)
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ আসনটিতে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। দলের এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবিতে এক মঞ্চে সভা–সমাবেশ করছেন অপর তিন মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতার অনুসারীরা। তাঁরা হলেন সাবেক সংসদ সদস্য আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তার।
অবশ্য নজরুল ইসলাম মনে করেন, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কারও যাওয়ার সুযোগ নেই।
মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে আতাউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সুনাম ও জনপ্রিয়তা যাঁর আছে, তাঁকে প্রার্থী করা হলে
জনগণ আনন্দ উৎসব নিয়ে ভোট দিয়ে তাঁকে নির্বাচিত করবেন।
এ আসনে জামায়াত প্রার্থী করেছে জেলার কর্মপরিষদ সদস্য ইলিয়াছ মোল্লাকে। তিনি এলাকায় গণসংযোগ করছেন। কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা হাফিজুল ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মুফতি মো. হাবিব উল্লাহও মাঠে তৎপর।
নারায়ণগঞ্জ-৩ (সিদ্ধিরগঞ্জ-সোনারগাঁ)
আসনটিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম (মান্নান) মনোনয়ন পেয়েছেন। এখানে সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ ও সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির এই তিন সদস্যসহ ছয় মনোনয়নপ্রত্যাশী এক হয়ে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে কেন্দ্রে চিঠি, এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি করে আসছেন।
তবে আজহারুল ইসলামের ভাষ্য, ‘আন্দোলন–সংগ্রামে যাঁরা মাঠে ছিলেন না, তাঁদের নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যথা নেই। আমি জনগণের হৃদয়ে আছি, জনগণের এমপি হতে চাই।’
সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম বলেন, ‘দল এখনো কাউকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়নি। আমরা বিতর্কমুক্ত ও গ্রহণযোগ্য এবং মানুষের কল্যাণে কাজ করবে—এমন প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার জন্য দলের কাছে দাবি জানিয়েছি।’
জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ইকবাল হোসেন ভুঁইয়া এখানে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি প্রথমবারের মতো সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন। এনসিপি থেকে দলটির যুবসংগঠন যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তুহিন মাহমুদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলার সাবেক সদস্যসচিব জাবেদ আলমের নাম শোনা যাচ্ছে। এ ছাড়া গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়ক অঞ্জন দাস গণসংযোগ চালাচ্ছেন।
জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরাও সব কটি আসনে নিয়মিত প্রচার চালাচ্ছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, গণসংহতি আন্দোলনসহ আরও কয়েকটি দল নির্বাচনের মাঠে তৎপরতা চালাচ্ছে।নারায়ণগঞ্জ-৪ (সদর উপজেলা)
সদর উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে এ আসন গঠিত। শিল্প ও শ্রমিক–অধ্যুষিত এ আসনে বিএনপি এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি। দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ শাহ্ আলমের পাশাপাশি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ ও সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এই আসনেও দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী।
২০০৮ ও ২০১৮ সালে এখানে প্রথমে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছিলেন মোহাম্মদ শাহ্ আলম। তবে ২০১৮ সালে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মনির হোসাইন কাসেমীকে আসনটি ছেড়ে দিয়েছিল বিএনপি। এবারও বিএনপি আসনটিতে জোটের প্রার্থীকে ছাড় দিতে পারে বলে আলোচনা আছে।
বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী মোহাম্মদ শাহ্ আলম বলেন, ‘গত দুটি নির্বাচনে দলের নির্দেশে জোটের জন্য আসনটি ছেড়ে দিয়েছি। এবার দলীয় প্রার্থী চান নেতা–কর্মী ও ভোটাররা।’
জামায়াত এখানে দলের মহানগরের আমির আবদুল জব্বারকে প্রার্থী করেছে। তিনি এলাকায় প্রচার চালিয়ে আসছেন। আবদুল জব্বার বলেন, মানুষ আর ভোট ডাকাতি চায় না।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম থেকে দলের যুগ্ম মহাসচিব মনির হোসাইন কাসেমী, ইসলামী আন্দোলন থেকে ওলামা মাসায়েক আইমা পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মুফতি ইসমাঈল সিরাজী, খেলাফত মজলিস থেকে মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াছ হোসেন গণসংযোগ চালাচ্ছেন।
এ আসনে এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব আবদুল্লাহ্ আল আমিন প্রার্থী হতে চান। তিনি বলেন, চলতি মাস শেষেই দলের প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত হবে।
নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর-বন্দর)
শীতলক্ষ্যার দুই পাড় নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি এবার প্রার্থী করেছে ক্রীড়া সংগঠক ও শিল্প উদ্যোক্তা মোহাম্মদ মাসুদুজ্জামান মাসুদকে। তিনি এলাকায় গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ করে আসছেন।
মাসুদুজ্জামান বলেন, ‘সন্ত্রাস, চাঁদাবাজমুক্ত একটি আধুনিক নারায়ণগঞ্জ গড়াই আমার মূল লক্ষ্য।’
মাসুদুজ্জামান ছাড়াও এ আসনে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন, শিল্পপতি আবুল জাফর বাবুল।
এদিকে জামায়াতের মনোনয়ন পেয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মঈনুদ্দিন আহমেদ। তিনি এলাকায় গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ করছেন। খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব এ বি এম সিরাজুল মামুনকে এ আসনে প্রার্থী করেছে দলটি। জামায়াতসহ আটটি ইসলামপন্থী দল মিলে নির্বাচনী জোট হলে এ আসনে সিরাজুল মামুন প্রার্থী হতে পারেন বলে আলোচনা আছে।
সিরাজুল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইসলামিক আদর্শের ভিত্তিতে আমরা ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক, জনকল্যাণমূলক একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে নির্বাচনী মাঠে অবতীর্ণ হয়েছি।’
গণসংহতি আন্দোলন তরিকুল সুজনকে এবং ইসলামী আন্দোলন মাসুম বিল্লাহকে মনোনয়ন দিয়েছে। এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য আহমেদুর রহমান ও দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক শওকত আলী এখানে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশায় সক্রিয়।