এবং কবিরা বেরোতে গিয়ে বারবারই ঢুকে পড়ে জীবনানন্দের জঙ্গলে। দুঃস্বপ্ন নয়, মিথ্যা নয়, কোনো এক দেজা ভ্যু কাজ করে মনে। আগুন লাগে কড়াইলে, আঁচ এড়িয়ে চলতে চাই তীর্থে যদিও জানি না, জানলেও মানি না—রসাতলই তীর্থের রাজা।

নীলকণ্ঠ পাখির পিছে পিছে ছুটতে গিয়ে সামনে শুধু লাইভ বেকারির মজমা। দুপুর বিছিয়ে রেখেছে তার সুর; আমার কবিতায় এত সুরের প্রসঙ্গ আসে কেন? আজ বলছি। এক বালিকা আমাকে অরুন্ধতী রায় উপহার দিতে গিয়ে লিখেছিল, ‘প্রথাগত অনৈক্যে বাঁধি ঐক্যের সুর, সেই সুর ভেসে যাক দিগন্তেরও দূর!’ দিগন্তের দিকদারির তলে দুনিয়ায় কেবল জমির দালালি। এবং কবিরা বেরোতে গিয়ে বারবারই ঢুকে পড়ে জীবনানন্দের জঙ্গলে। দুঃস্বপ্ন নয়, মিথ্যা নয়, কোনো এক দেজা ভ্যু কাজ করে মনে। আগুন লাগে কড়াইলে, আঁচ এড়িয়ে চলতে চাই তীর্থে যদিও জানি না, জানলেও মানি না—রসাতলই তীর্থের রাজা। বাকি সব খাজা। জুতার কারখানা থেকে ফুলের ফ্র্যাগরেন্স পাওয়ার মতো সম্পন্ন নাকেদের মালিকানা বিক্রি হচ্ছে এক অলীক আস্তানায়। যত দৈব আছে, বেবাক মিলিয়ে নিতে হবে যুক্তির বাটখারায়। আরও আনন্দের রোদ ঘন বিষাদের মেঘে মিশিয়ে কুসুমের শরীরে বিরল চিত্রকাজ চলে। পাহাড় না সমুদ্র? তুলনায় ব্যর্থ, আমি কেবল মজ্জাগত। মীরহাজীরবাগে যাইনি কখনো, মীরহাজীরবাগে গেছি অনেক। মারা গেছে কিয়ারোস্তামির ক্যারেক্টার, তবু অটুট আছে হয়তো চেরির স্বাদ। মহল্লার গল্প যে সদর করত, সেই শহীদুল জহিরের জানাজায় শামিল হতে আমিও এসেছিলাম জাহাঙ্গীরনগর থেকে। কাজিনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া-ফেরত টুপিপরা কবি সমুদ্র গুপ্তকে দেখে সেদিনই জেনেছিলাম, তার নাম মূলত আবদুল মান্নান। কমরেডদের বহু ‘টেক নেম’ থাকে; ধুলোর দিনে সবাই ফেরে, দাগ লেগে থাকে কিছু অঘুমা রাতের গায়ে। সামনে যা দেখছি, সবই চর মাঝারদিয়া। কাদাগালিচা সংবর্ধনা, টমেটোর সবুজ, শর্ষের হলুদ, মানুষ আর মহিষ, শনির পর একদিন হাতে রেখে সোমবার। মৃত্যুর মুখোমুখি বসে কোন জীবনের উপন্যাস লিখে গেছেন প্যালেস্টাইনের ইয়াহইয়া সিনওয়ার! ফুলে কাঁটা লেগে থাকে কিংবা কাঁটায় ফুল। ভুল আমি সার্বভৌম ভুল। লালসাকে গলা টিপে হত্যা করতে গিয়ে বুঝে আসে হত্যাবাসনাই বড় লালসা। ভোরের বাণী বোবাধরা সারা দিনের জন্য তুলে রাখি। আকাশে নীলাভ অরণ্য অপার। হারাতে ভয় এত আমার, তবু হারিয়ে যাওয়ার ঠিকানা খুঁজে বের করি বারবার। আচ্ছা, যে ঠিকানা খুঁজে বের করা যায়, সেখানে কি হারানো যায়? দুরারোগ্য সুখে ত্যক্ত হয়ে কোহেনের গানে ভিজে সতেরো পাক অগ্নিতে স্বপ্নবিবাহের বাজনা ব্যাপক থেকে ব্যাপকতর হয়, সমুদয় জাগরণ ভেঙে যায়, ঘুম ঘন হয়। মহাশূন্য দশক থেকে কবিতা লিখছি, শূন্য থেকে শূন্য বিয়োগ করছি। আমারে নিয়ে তোমাদের আশা যেহেতু নাই, হতাশাও না থাকুক। ওল্ড স্কুল, নিউ টেস্টামেন্ট, দালির ঘড়ি থেকে বকুলের মতো ঝরুক সময়। ঝরা সময়ের গন্ধ জমিয়ে রাখি তোরঙ্গে। একটার পর একটা ওয়েব সিরিজ আসছে, দুইটার পর চারটা বার্থডে নোটিফিকেশন ভাসছে ফেসবুকে, ছয়-সাতটা কুকুরছানা মেরে ফেলছে একটা মানুষের ছানা। ‘মানবিক’, ‘পাশবিক’ শব্দের গূঢ় অর্থ নতুন করে খুঁজতে হবে অভিধানে; যদিও অভিধানের সীমা থেকে মুক্তি পেতে চাইছে নিপীড়িত শব্দেরা। দুনিয়ার শব্দ এক হও, লড়াই করো। একসঙ্গে বেশি সুন্দর দেখলে ইদানীং হাঁসফাঁস লাগে। সুন্দরের দুর্বিষহ সুশোভন চাপ থেকে রেহাই দাও, কফি ঢালো আর এক কাপ। ঢাকায় শীত আসে না, তবে হেমন্ত আসতে না আসতেই শীতের সবজিতে ভরে যায় জাদুনগরীর মার্কেট-বাজার। শেষ মেট্রো মিস করেছ? সমস্যা নাই। পুষ্পকরথ তোমাকে নিয়ে যেতে পারে উত্তরা উত্তর থেকে মতিঝিলে। বিয়ের দাওয়াতের হুল্লোড়ে আমার মন পড়ে থাকে আর্মেনিয়ান চার্চের নিরালা এপিটাফে। কে কোথায় কার জন্য অক্ষরে এঁকে গেছে স্মরণের আলপনা! কাচ্চিভাই, কাচ্চিভাবি পেরিয়ে লোকাল বাস হুট করে ছুটেছে দূরপাল্লার কোনো এক গন্তব্যে। জোহরান মামদানি জিতে গেছে নিউইয়র্কে, শৈশবে হেরে যাওয়া খেলারা ভেসে আসছে সদলবলে। গোধূলি ঘনিয়ে এলে ঘরে থাকতে পারো না তোমরা যারা, তারা সবাই মিলে জোট বাঁধো, তৈরি হও। পারভীন শাকির মরে যাওয়ার ঠিক আগে পৃথিবীতে যে নজমের জন্ম হচ্ছিল, তাকে অনুসরণ করতে করতে জন এলিয়া রোড ধরে হাঁটতে হাঁটতে গুম হওয়া গজলের গলা কেটে ক্লান্ত-বিধ্বস্ত অসুর তার তাজা ক্ষুধা-তৃষ্ণা লয়ে এই শীতসন্ধ্যায় স্যুপ খেতে বসেছে। তাকে ডিস্টার্ব কোরো না, পারলে দু-তিনটা অনথন দাও স্যুপের সঙ্গে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় সন্ত্রাসীর গুলিতে কৃষক নিহত

কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলায় রফিকুল ইসলাম রফি (৪০) নামে কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের পচাভিটা গ্রামে তাকে গুলি করা হয়। 

নিহত রফিকুল পচাভিটা গ্রামের মত আলী মোল্লার ছেলে। গুলিবিদ্ধ দুইজনকে কুষ্টিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

কুমিল্লায় ট্রলি উল্টে খালে, গোসলরত ৩ নারীর মৃত্যু

দিনাজপুরে বাসের ধাক্কায় ভ্যানের ২ যাত্রী নিহত 

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলায়মান শেখ জানান, দুর্বৃত্তরা কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। রফিকুলের বুকে গুলিবিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলে মারা যায়। আরো দুইজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।

ওসি আরো বলেন, ‘‘কে বা কারা গুলি করেছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে তা সনাক্ত করা যায়নি। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। দোষীদের দ্রুত আইনে আওতায় আনা হবে।’’

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, রফিকুল ক্ষেতে কাজ শেষে সন্ধ্যার পর স্থানীয় পচাভিটা গ্রামের দোকানে বসে চা খাচ্ছিলেন। একটি মোটরসাইকেলে তিনজন এসে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে রফিকুল ঘটনাস্থলে মারা যায়।

স্থানীয়রা সন্ত্রাসীদের ধরতে এগিয়ে গেলে তারা কয়েক রাউন্ড এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এতে স্থানীয় রবজেল ও ইউসুফ পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি অ্যাপাচি আরটিআর মোটরসাইকেলে তিনজন এসে রফিকুলকে লক্ষ্য করে এক রাউন্ড গুলি করে। রফিকুল স্থানীয় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তবে কারো সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব ছিল না বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
 

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ