ব্যাংক খাতে ঋণের সুদহার এখন প্রায় ১৫ শতাংশ। এত সুদহার দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করা ব্যবসায়ীদের পক্ষে অসম্ভব। এ ছাড়া লাভ হোক কিংবা লোকসান, ব্যবসায়ীদের জন্য অগ্রিম আয়কর বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি গ্যাস ও বিদ্যুতের সমস্যা তো আছেই। এ ছাড়া এক বছর ধরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কারণে নতুন বিনিয়োগে সাহস করছেন না কেউ।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংলাপে সরকারের এক উপদেষ্টাসহ শীর্ষ পাঁচ ব্যক্তির সামনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তারা। ‘স্থানীয় অংশীজনদের সঙ্গে বিনিয়োগ সংলাপ’ শিরোনামে এ সংলাপ যৌথভাবে আয়োজন করে বিডা ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)।

সংলাপে ব্যবসায়ীদের মধ্যে বক্তব্য দেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তপন চৌধুরী, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের এমডি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, উত্তরা গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, ইস্টকোস্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি এস এম মাহবুবুল আলম, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক উজমা চৌধুরী, অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান মাসরুর আরেফিন প্রমুখ। 

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবস য়

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামের দুই আসন এখনো ফাঁকা, কারা হচ্ছেন বিএনপির প্রার্থী

চট্টগ্রামের ১৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ১৪টিতে প্রার্থী ঘোষণা করেছে বিএনপি। তবে এখন পর্যন্ত দুটি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি দলটি। এই দুটি আসন হলো বন্দর-পতেঙ্গা ও চন্দনাইশ। ফাঁকা এই দুই আসনে কারা প্রার্থী হতে পারেন, তা নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চলছে নানামুখী আলাপ-আলোচনা।  

চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলা ও ৩৪টি থানা এলাকা নিয়ে সংসদীয় আসন রয়েছে ১৬টি। এর মধ্যে নগরের ১৬টি থানা এলাকায় সংসদীয় আসন চারটি। পাঁচটি আসন রয়েছে চট্টগ্রাম জেলার দক্ষিণের এলাকাগুলোয়। সাতটি রয়েছে উত্তর চট্টগ্রামে।

চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে ১০টিতে গত ৩ নভেম্বর প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার আরও চারটি আসনের জন্য দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা করেন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা কামাল পাশা, চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান (পদ স্থগিত) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) আসনে নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান ও চট্টগ্রাম-১৫ (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া) আসনে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাজমুল মোস্তফা আমিনকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। প্রার্থীদের মধ্যে নাজমুল মোস্তফা আমিন নতুন মুখ।

প্রথম দফায় ঘোষিত ১০টি আসনে প্রার্থী ঘোষণার পর ৯টিতেই মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদের অনুসারীরা সড়ক অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি তুলেছেন। গতকাল দ্বিতীয় দফায় ঘোষণা করা চারটি আসনের মধ্যে চট্টগ্রাম-১৫  (লোহাগাড়া-সাতকানিয়া) আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মশালমিছিল ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ হয়েছে।

চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা)

বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা না করলেও এই আসনে জনসংযোগ করছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর ছেলে ও বিএনপির আন্তর্জাতিক–বিষয়ক উপকমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু চৌধুরী। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘এক পরিবার থেকে এক প্রার্থী’ ঘোষণা দেওয়ায় ইসরাফিল খসরুর ভাগ্যে দলীয় মনোনয়ন জুটবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে।

১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পরপর চারবার এই এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বাবার গোছানো আসনে দলীয় প্রতীক নিয়ে তাই প্রার্থী হতে ইচ্ছুক ইসরাফিল খসরু। জানতে চাইলে ইসরাফিল খসরু প্রথম আলোকে বলেন, ‘১২ বছর ধরে এলাকায় কাজ করছি। বাকিটা দলের নীতিনির্ধারকদের বিষয়।’

১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পরপর চারবার এই এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বাবার গোছানো আসনে দলীয় প্রতীক নিয়ে তাই প্রার্থী হতে ইচ্ছুক ইসরাফিল খসরু। জানতে চাইলে ইসরাফিল খসরু প্রথম আলোকে বলেন, ‘১২ বছর ধরে এলাকায় কাজ করছি। বাকিটা দলের নীতিনির্ধারকদের বিষয়।’

২০০৮ সালের নির্বাচনে চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনটি গঠিত হয়েছে। এর আগে এলাকাটি অন্য আসনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। আসনটিতে বিএনপির প্রার্থী কে হচ্ছেন, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি বিশেষ আগ্রহ রয়েছে ব্যবসায়ীদেরও। কারণ, দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর, চট্টগ্রাম কাস্টমস, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, পেট্রোলিয়াম করপোরেশনসহ আমদানি-রপ্তানিসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এলাকাটিতে অবস্থিত।

চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ ও সাতকানিয়া আংশিক)

এই আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টায় রয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন, ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক বিচারপতি আবদুস সালাম মামুন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক মহসিন জিল্লুর করিম, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মিজানুল হক চৌধুরী ও চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী। তাঁরা সবাই এলাকায় নিয়মিত জনসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের দাবি, আসনটি দলের কাউকে দেওয়া হোক। কিন্তু জোটের জন্য দলের নীতিনির্ধারকেরা আসনটি ফাঁকা রেখেছেন বলে জানা গেছে।

এলডিপির সঙ্গে বিএনপির কথাবার্তা চলছে। শেষ পর্যন্ত কী হয়, দেখা যাক। ওমর ফারুক, প্রেসিডিয়াম সদস্য, এলডিপি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির সঙ্গে জোট হলে চট্টগ্রাম-১৪ আসনটি এলডিপির জন্য ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ অথবা তাঁর ছেলে ওমর ফারুক নির্বাচন করবেন। ওমর ফারুক এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এলডিপির সঙ্গে বিএনপির কথাবার্তা চলছে। শেষ পর্যন্ত কী হয়, দেখা যাক।’ এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বাবা (অলি আহমদ) আর নির্বাচন করবেন না ঠিক করেছেন, তবে এলাকার লোকজন চাইছেন তিনি নির্বাচন করুক। এ অবস্থায় কী হয়, সেটি এখনো ঠিক বলা যাচ্ছে না।’

দুটি আসন ফাঁকা রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘জোটের কারণে দলের নীতিনির্ধারকেরা একটু সময় নিচ্ছেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ