খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে বিলম্ব হতে পারে
Published: 5th, December 2025 GMT
গুরুতর অসুস্থ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার বিষয়ে কয়েক দিন ধরেই আলোচনা চলছিল। অবশেষে তাঁকে লন্ডনে নেওয়া হচ্ছে এবং সবকিছু ঠিক থাকলে আজ শুক্রবার সেই যাত্রা হতে পারে।
তবে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাতারের আমিরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ‘কারিগরি সমস্যা’ দেখা দেওয়ায় যাত্রা বিলম্বিত হতে পারে বলে জানা গেছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে প্রথম আলোকে জানান, ‘ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত। অর্থাৎ, আগে যা ছিল, সে অবস্থাতেই আছেন।’ তিনি বলেন, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে “টেকনিক্যাল সমস্যা”র কথা জানিয়েছে কাতার। তারা বিকল্প কিছু করার চিন্তা করছে। সেটা তারা আমাদের জানাবে। সে ক্ষেত্রে ভোরে যাত্রা হচ্ছে না, এটি দিনের যেকোনো সময়ে হতে পারে। তবে বিষয়টি কিছুটা অনিশ্চয়তায় পড়েছে।’
এদিকে চিকিৎসার জন্য শাশুড়িকে লন্ডনে নিতে বড় ছেলে তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ঢাকায় আসছেন। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে বাসসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার পরে জুবাইদা রহমানের ফ্লাইট লন্ডন ছেড়েছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সরাসরি লন্ডন-ঢাকা ফ্লাইটটির আজ শুক্রবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে। তিনি শাশুড়ির সঙ্গে একই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে লন্ডনে ফিরতে পারেন। সে ক্ষেত্রে খালেদা জিয়াকে নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের লন্ডন যাত্রা বিলম্বিত হতে পারে। সেটি সন্ধ্যা নাগাদ গড়াতে পারে বলে সিভিল এভিয়েশন ও খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা–সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে এগুলো নির্ভর করবে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা এবং মেডিকেল বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতামতের ওপর।
বিদেশে নেওয়ার সিদ্ধান্ত যেভাবেখালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া হবে, গতকাল বিকেলে এ সিদ্ধান্ত গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। এরপর বিএনপির নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে এই ভেবে যে তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার মতো অবস্থায় আছেন। তাঁর সংকটাপন্ন অবস্থা নিয়ে কিছুদিন ধরে সারা দেশে নানা রকম আলোচনা চলছে। বিশেষ করে খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার মতো পর্যায়ে রয়েছেন কি না বা তিনি দীর্ঘ বিমান যাত্রাপথের শারীরিক চাপ নেওয়ার মতো অবস্থায় আছেন কি না—এ প্রশ্নগুলো সব মহলে আলোচিত হচ্ছিল।
সব উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার অবসান ঘটিয়ে গতকাল বিকেলে বিএনপি নেতা ও চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, শুক্রবার ভোরে খালেদা জিয়াকে লন্ডন নেওয়া হবে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুসারে তাঁকে লন্ডনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিরাপত্তার অংশ হিসেবে হাসপাতালের কাছে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) হেলিকপ্টারের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন ও অবতরণ। গতকাল দুপুরে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র অবস থ গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
Untitled Dec 03, 2025 10:46 pm
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় সহায়তা করতে যোগ দিলেন চীন থেকে আসা চার সদস্যের আরেকটি চিকিৎসক দল। আজ বুধবার রাত নয়টার পর তাঁরা ঢাকায় অবতরণ করেন। সেখান থেকে তাঁরা সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে আসেন।
দেশের একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস হাসপাতালের চিকিৎসক এবং লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলছে। তাঁর চিকিৎসায় সহায়তা করতে ১ ডিসেম্বর চীনের চিকিৎসকদের পাঁচ সদস্যের একটি অগ্রবর্তী দল ঢাকায় আসে। আর আজ সকালে যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রিচার্ড বিয়েল ঢাকায় আসেন।
জানা গেছে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত এই চিকিৎসকেরা তাঁর শারীরিক অবস্থা দেখার পর পরামর্শ দেবেন। তাঁদের পরামর্শের ওপর নির্ভর করবে, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চলবে, না কি লন্ডনে নেওয়া হবে।
৮০ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদ্রোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে গত ২৩ নভেম্বর দ্রুত তাঁকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। ৩০ নভেম্বর ভোরের দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে এসডিইউ থেকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনো বেশ উদ্বেগজনক পর্যায়েই রয়ে গেছে। বিশেষ করে তাঁর হৃদ্যন্ত্র, লিভার, কিডনি ও ফুসফুসের জটিলতা কাটছে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, দেখা যাচ্ছে চিকিৎসায় এ সমস্যাগুলোর একটির সামান্য উন্নতি হলে অন্যটির অবনতি ঘটছে; যা কয়েক দিন ধরে নানা মাত্রায় উদ্বেগজনকভাবে ওঠানামা করছে। তবে চিকিৎসকেরা এখনো এই অর্থে আশাবাদী যে তাঁরা খালেদা জিয়াকে যে চিকিৎসা দিচ্ছেন, তিনি তা গ্রহণ করতে পারছেন। ওষুধ কাজ করছে।
চিকিৎসকেরা এখনো খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থাকে ‘গুরুতর’ হিসেবে বিবেচনা করছেন। তাঁদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, আগামী কয়েকটি দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিডনি কার্যক্ষমতায় স্থিতিশীলতা ছাড়া তাঁর সামগ্রিক শারীরিক অবস্থায় স্থায়ী উন্নতি আসা কঠিন।
যদিও কয়েক দিন ধরে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা গুজব চলছে। অনেকে তাঁর অবস্থা ‘জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে’ বলে রটাচ্ছেন।
তবে যেকোনো ধরনের গুজব ছড়ানো এবং গুজবে কান না দেওয়ার জন্য খালেদা জিয়ার পরিবার এবং দলের পক্ষ থেকে বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের অন্যতম এ জেড এম জাহিদ হোসেন।