ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগের সময় অতি জরুরি সেবা সচল রাখতে হাসপাতাল, সচিবালয়, ফায়ার সার্ভিস ও জেলা পর্যায়ের প্রশাসনিক ভবনগুলো সুরক্ষিত রাখা জরুরি। এ ধরনের দুর্যোগে মানুষের একটা নির্দিষ্ট স্থানে আশ্রয় নিতে খোলা স্থান নির্ধারণ করা এবং সিভিল ডিফেন্সকে শক্তিশালী করা প্রয়োজন। এগুলোর পাশাপাশি নিয়মিত মহড়া দিয়ে ভূমিকম্পের সময় করণীয় নিয়ে সচেতনতা তৈরির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন স্থপতি, প্রকৌশলী ও ভূমিকম্প–বিশেষজ্ঞরা।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট আয়োজিত ‘আর্থকোয়েক: রিয়েলিটি, পারসেপশন, অ্যাওয়ারনেস অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক প্রিপেয়ার্ডনেস থ্রো অ্যাকশন’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তাঁরা।

খ্যাতিমান পুর প্রকৌশলী ইমেরিটাস অধ্যাপক ড.

শামীম জেড বসুনিয়া বলেন, ‘স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে (অবকাঠামো প্রকৌশল) যাঁরা দক্ষ ও অভিজ্ঞ, তাঁরা যদি তাঁদের কাজটা ঠিকভাবে করেন, ভবন নির্মাণের সময় তদারকিও যদি ঠিকভাবে হয়, তবে আমি মনে করি ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই।’

আলোচনায় অংশ নিয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রধান স্থপতি কাজী গোলাম নাসির বলেন, ভূমিকম্পের মতো বড় দুর্যোগে গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলো—যেমন সচিবালয়, হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিসের ভবনগুলো সুরক্ষিত রাখতে হবে। এসব ভবন ভেঙে পড়লে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বলে কিছু থাকবে না।

এগুলো কতটা ভূমিকম্প সহনশীল সেটা পর্যায়ক্রমে পরীক্ষা করার পরামর্শ দিয়ে কাজী গোলাম নাসির বলেন, অনেক এলাকার সড়ক খুবই সংকীর্ণ। এগুলো সম্প্রসারণ করা উচিত, যাতে দুর্যোগ–পরবর্তী সময়ে উদ্ধারকাজ চালানো যায়।

ভূমিকম্পের দুর্যোগের সঙ্গে আরেকটি সংকট হতে পারে অগ্নিকাণ্ড। অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি কমাতে স্থপতি কাজী গোলাম নাসির গ্যাসলাইনের নিয়ন্ত্রণ–ব্যবস্থা ভবনের বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এ ছাড়া নির্মাণ উপকরণের গুণগত মান নিশ্চিত করা, ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী ভবন নির্মাণ নিশ্চিতে তদারকির ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষক প্যাট্রিক ডি রোজারিও জাপানের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, জাপানে ভূমিকম্প–পরবর্তী সুনামির সময় দেখা গেছে, সুনামিতে চারপাশের ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাদের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট সেন্টার টিকে গিয়েছিল।

প্যাট্রিক ডি রোজারিও বলেন, ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগে হাসপাতাল, সরকারি ভবনগুলো টিকে থাকতে হবে। এগুলো দুর্যোগ মোকাবিলার কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোডে হাসপাতালের জন্য আলাদা কোড দেওয়া আছে। সেগুলো নিশ্চিত হচ্ছে কি না, সেটা তদারক করতে হবে।

প্রতিটি এলাকায় জড়ো হওয়ার জন্য খোলা স্থান নির্ধারণ করে দেওয়া জরুরি জানিয়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন) কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ভূমিকম্পে আমরা যদি হতাহত কমাতে চাই তাহলে অবিলম্বে আমাদের জাতীয়ভাবে সচেতনতামূলক মহড়া চালাতে হবে।’

ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করা, প্রতিটি এলাকায় নির্দিষ্ট খোলা জায়গা নির্ধারণ করা, রাসায়নিকের গুদামগুলো চিহ্নিত করা জরুরি বলেন মনে করেন কর্নেল তাজুল ইসলাম।

উপাত্তের ঘাটতির কথা উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক বদরুদ্দোজা মিয়া একটি পূর্ণাঙ্গ ‘আর্থকোয়েক রিসার্চ ইনস্টিটিউট’ করার পরামর্শ দেন।

ঢাকায় নেই পর্যাপ্ত ফায়ার স্টেশন

ঢাকা শহরে খোলা জায়গা কোথায় পাওয়া যাবে—এমন প্রশ্ন তুলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান নগর–পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ঢাকা শহরে ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন আছে মাত্র ১৯টি। ঢাকা মহানগরে ওয়ার্ড আছে ৯২টি। প্রতিটি ওয়ার্ডে ফায়ার স্টেশন থাকা উচিত। তিনি প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ করার ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, একটা বড় ভূমিকম্প হলে যে পরিমাণ কংক্রিটের স্তূপ তৈরি হবে, সেটা সরানোর মতো জায়গা ও সরঞ্জাম কোনোটাই কোনো সংস্থার নেই।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘নভেম্বরের ২১ তারিখের ভূমিকম্পের পর আমাদের ২৭৭টি ভবনে নন-স্ট্রাকচারাল ফাটল পেয়েছি। আমরা এখন সরকারি ভবনগুলো পরীক্ষা করে দেখতে চাই।’

ইমারত বিধি হালনাগাদের কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন হায়দার বলেন, গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হলো এনফোর্সমেন্ট বা প্রয়োগ। সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

ভূমিকম্প মোকাবিলায় প্রস্তুতি ভালো নয় উল্লেখ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘আমাদের যা কার্যক্রম হয়, সব প্রকল্পভিত্তিক। প্রকল্প শেষ, কার্যক্রমও শেষ।’

বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক স্থপতি কাজী আজিজুল মাওলা বলেন, ‘আমরা যেহেতু এই দুর্যোগকে ঠেকাতে পারব না, সেহেতু এর মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে। এ অঞ্চলের ভূমিকম্পের চরিত্র বুঝে আমাদের প্রস্তুতি নির্ধারণ করতে হবে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের অধীন সিসমোলজিক্যাল রিসার্চ সেন্টার আছে, এটিকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে হবে।’

স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি আসিফুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, এলাকাভিত্তিক খোলা জায়গা দরকার। স্কুলের মাঠগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে, যেন ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগের সময় সবাই সেখানে ছুটে গিয়ে নিরাপদে দাঁড়াতে পারে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, ‘সচেতনতা আমাদের একমাত্র হাতিয়ার। নিয়মিত মহড়ার মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করা ছিল সিভিল ডিফেন্সের কাজ। প্রতিটি পাড়ায় সিভিল ডিফেন্সকে সক্রিয় করে তুলতে হবে।’

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন স্থপতি ইনস্টিটিউটের সহসভাপতি স্থপতি নওয়াজীশ মাহবুব। সভাপতিত্ব করেন স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি স্থপতি অধ্যাপক আবু সাঈদ এম আহমেদ। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক রাকিব আহসান, স্থপতি ইনস্টিটিউটের সহসভাপতি স্থপতি খান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক জগলুল ও ইনস্টিটিউটের সাধারণ সম্পাদক স্থপতি মাসুদ উর রশিদ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন স থপত ভবনগ ল আম দ র র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

জোরপূর্বক উচ্ছেদ বন্ধ করুন—বাসিন্দাদের দাবি

মিরপুর ১৪ নম্বরের হাউজিং স্টাফ কোয়ার্টারের ৫৭৬টি ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের ভবন ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে পরিবারগুলো।

সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা দাবি করেছেন, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের বাসা ছাড়ার নোটিশ অবৈধ। সরকার উচ্ছেদের মতো সিদ্ধান্ত থেকে সরে না এলে এলাকার বাসিন্দারা পরবর্তী সময়ে আরও কঠোর কর্মসূচি দেবেন।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর–রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা। মিরপুর ১৪ স্টাফ কোয়ার্টার কর্মচারী কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান স্টাফ কোয়ার্টার কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি আবু জাফর। তিনি ওই এলাকার ২০ নম্বর ভবনের ৩২ নম্বর ফ্ল্যাটের বাসিন্দা।

আবু জাফর বলেন, সর্বশেষ ২০১০ সালের ২৬ আগস্ট জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ৮১তম বোর্ড সভায় ফ্ল্যাটগুলোর পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিল আদায়ের পর তা বরাদ্দধারীদের কাছে বিক্রি বা স্থায়ী বন্দোবস্ত করার সিদ্ধান্ত হয়। ২০১২ সালের ৩০ আগস্ট গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ১০৬তম বোর্ড সভায় জমিসহ প্রতিটি ফ্ল্যাটের মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১৩ লাখ ৪৫ হাজার ৫৮৩ টাকা। গত ৫০ বছরে বিভিন্ন সময়ে এই ফ্ল্যাটগুলো তাঁদের  পূর্বপুরুষদের কাছে জমিসহ হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেনি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কোনো লিখিত নোটিশ না দিয়ে গত ৩০ নভেম্বর ৫৭৬টি ফ্ল্যাটকে পরিত্যক্ত বা বসবাসের অযোগ্য ঘোষণা করে সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। এর দুদিনের মাথায় গতকাল বুধবার জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের লোকজন এলাকায় গিয়ে পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে চায়। পরে বাসিন্দাদের অনুরোধে সেটা আর করেননি। বিষয়টি অমানবিক।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, কোনো লিখিত নোটিশ না দিয়ে গত ৩০ নভেম্বর ৫৭৬টি ফ্ল্যাটকে পরিত্যক্ত বা বসবাসের অযোগ্য ঘোষণা করে সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। এর দুদিনের মাথায় গতকাল বুধবার জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের লোকজন এলাকায় গিয়ে পানি, গ্যাস ও বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে চায়। পরে বাসিন্দাদের অনুরোধে সেটা আর করেননি। বিষয়টি অমানবিক।

স্টাফ কোয়ার্টার কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের বিজ্ঞপ্তিতে ভবনগুলো বসবাসের অনুপযোগী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু একই সঙ্গে নির্মিত ১৫টি ভবন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও একটি ভবন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে বিক্রি করা হয়। ওই ভবনগুলোতে এখনো মানুষ বসবাস করছে। একই সময়ে নির্মিত কিছু ভবন বসবাসের অযোগ্য হলে বাকিগুলোতে কীভাবে মানুষ বসবাস করছে বলে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

এই অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘পূর্ত মন্ত্রণালয় তাদের বোর্ড সভায় একাধিকবার এই কোয়ার্টারগুলো আমাদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আমরা সেই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন চাই। যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেই অনুযায়ী দাম পরিশোধ করতে আমরা প্রস্তুত আছি। কিন্তু যেভাবে বাসা ছাড়তে বলা হয়েছে এবং দুদিনের মধ্যে গ্যাস ও বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছে, এটা অমানবিক।’

পূর্ত মন্ত্রণালয় তাদের বোর্ড সভায় একাধিকবার এই কোয়ার্টারগুলো আমাদের দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আমরা সেই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন চাই। যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেই অনুযায়ী দাম পরিশোধ করতে আমরা প্রস্তুত আছি। কিন্তু যেভাবে বাসা ছাড়তে বলা হয়েছে এবং দুদিনের মধ্যে গ্যাস ও বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে চেয়েছে, এটা অমানবিক।আবুল কাশেম, স্টাফ কোয়ার্টার কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদকমিরপুর স্টাফ কোয়ার্টারে উচ্ছেদের প্রতিবাদ

জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের টাঙানো বিজ্ঞপ্তিটি প্রথম আলোর কাছে এসেছে। গত ৩০ নভেম্বর এই বিজ্ঞপ্তিটি দেশের দুটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায়ও প্রচার করে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, মিরপুর ১৪ নম্বর সেকশনে চারতলা বিশিষ্ট ২১টি ভবনকে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে পরিত্যক্ত বা বসবাসের অযোগ্য ঘোষণা করেছে। যেহেতু ভবনগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও বসবাসের জন্য নিরাপদ নয়, তাই বর্তমানে ভবনে বসবাসকারীদের দ্রুত অন্যত্র স্থানান্তরিত হওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। অন্যথায় বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়া ওই এলাকার বাসিন্দারা বলেন, তাঁরা যে ভবনগুলোতে বসবাস করছেন, সেই ভবনগুলোর পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগের যাবতীয় কাগজপত্র তাঁদের নামে আছে। এ ছাড়া জন্মসূত্রে গত ৫০ বছর তাঁরা এই এলাকায় বসবাস করছেন। এখন উচ্ছেদ করা হলে অসহায় হয়ে রাস্তায় নামবে অনেক পরিবার।

হাউজিং স্টাফ কোয়ার্টার এলাকার ৫ নম্বর ভবনের ৩২ নম্বর ফ্ল্যাটের বাসিন্দা মেহেদী হাসান বলেন, ‘ভবনগুলোতে এমন অনেক বাসিন্দা আছেন, যাঁরা সত্যি অসহায়। যাওয়ার কোনো জায়গা নেই। সবচেয়ে বড় কথা হলো, আমাদের জন্ম, জাতীয় পরিচয়পত্র সবকিছু এখানে। এখন উচ্ছেদ করা হলে আমরা কোথায় যাব? আমাদের সঙ্গে আচরণ করা হচ্ছে ভাড়াটিয়ার মতো। অথচ ৫০ বছর ধরে আমরা এসব ভবনে বসবাস করছি। পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগের যাবতীয় কাগজ আমাদের নামে করা। কোনো ভাড়াটিয়ার নামে কি বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগের কাগজ হয়?’

সংবাদ সম্মেলনে ‘পরিত্যক্ত দেখিয়ে উচ্ছেদ নয়, সত্যিকারের মূল্যায়ন চাই’; ‘নিরাপদ সংস্কার চাই, জোরপূর্বক উচ্ছেদ নয়’; ‘শান্তিপূর্ণ দাবি আদায়ে প্রশাসনের সাহায্য চাই’; ‘বাসিন্দাদের অধিকার মানুন, উচ্ছেদ বন্ধ করুন’ প্রভৃতি স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন আয়োজকেরা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্টাফ কোয়ার্টার কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন, সন্তান কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক ফারুক হোসেন, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ সামিউলের বাবা মো. সাকিবুর রহমানসহ ৫৭৬ পরিবারের প্রতিনিধিরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মঙ্গলবার খুলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সোমবার থেকে নেওয়া যাবে পরীক্ষা
  • জোরপূর্বক উচ্ছেদ বন্ধ করুন—বাসিন্দাদের দাবি
  • নোয়াখালী কলেজের ৮ ভবনের ৬টিই ঝুঁকিপূর্ণ, ভূমিকম্পে বিপর্যয়ের শঙ্ক