শাকসু নির্বাচনে ভিপি ও এজিএসে চারজন করে, জিএসে ৭ প্রার্থী
Published: 12th, December 2025 GMT
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (শাকসু) নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। এবার শাকসুতে ৯৭ জন প্রার্থী বিভিন্ন পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা অনুযায়ী, শাকসু নির্বাচনে সহসভাপতি (ভিপি) পদে চারজন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে সাতজন ও সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২০ জানুয়ারি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হাসান (শিশির), পেট্রোলিয়াম ও খনিজ প্রকৌশল বিভাগের মুহয়ী শারদ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুমিনুর রশীদ (শুভ) ও কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী মোস্তাকিম বিল্লাহ।
জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পুর কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী মুজাহিদুল ইসলাম, সমাজবিজ্ঞানের ফয়সাল হোসেন, রসায়ন বিভাগের মারুফ বিল্লাহ, সমাজকর্মের জুনায়েদ আহমেদ, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, শিল্প ও উৎপাদন প্রকৌশল বিভাগের পলাশ বখতিয়ার ও পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের জুনায়েদ হাসান।
এজিএস পদে আছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল মাহমুদ, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতাহারুল ইসলাম রাহিন, একই বিভাগের হাফিজুর ইসলাম এবং জৈব প্রযুক্তি ও জিন প্রকৌশল বিভাগের জহিরুল ইসলাম।
এ ছাড়া ক্রীড়া সম্পাদক পদে দুজন, সহ-ক্রীড়া সম্পাদক পদে চারজন, সাহিত্য ও বার্ষিকী সম্পাদক পদে দুজন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে তিনজন, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে দুজন, ধর্ম ও সম্প্রীতি সম্পাদক পদে তিনজন, সামজসেবা সম্পাদক পদে তিনজন, ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক পদে (শুধু ছাত্রীদের জন্য) চারজন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক পদে চারজন, শিক্ষা-গবেষণা-ক্যারিয়ার উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক পদে পাঁচজন, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে পাঁচজন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে চারজন, পরিবহন সম্পাদক পদে চারজন, ক্যাফেটেরিয়া ও ক্যানটিনবিষয়ক সম্পাদক চারজন, আইন ও মানবাধিকার–বিষয়ক সম্পাদক পাঁচজন এবং পাঁচটি সদস্যপদে মোট ২৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
শাকসুর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সংসদে মোট ২৩টি পদ রয়েছে। অপর দিকে হল সংসদে পদ রয়েছে ৯টি। তিনটি ছাত্রী হল সংসদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হচ্ছেন ২১ প্রার্থী। অপর দিকে তিনটি ছাত্র হল সংসদে ৩ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হচ্ছেন।
ছাত্রী হলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ২১ প্রার্থী
আয়েশা সিদ্দীকা হল সংসদে (প্রথম ছাত্রী হল) ভিপি-জিএস-এজিএসসহ আটটি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হচ্ছেন। এই হলে শুধু সমাজসেবা পদে দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
প্রায় একই চিত্র ছাত্রীদের বেগম সিরাজুনেচ্ছা চৌধুরী হল সংসদে (দ্বিতীয় ছাত্রী হল)। ভিপি ছাড়া অন্য আটটি পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী। এই হলে শুধু ভিপি পদে তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অপর দিকে ফাতেমা তুজ জোহরা হল সংসদে (তৃতীয় ছাত্রী হল) ভিপি পদে তিন ও জিএস পদে দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অন্য তিনটি সম্পাদকীয় পদ ও দুটি সদস্যপদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী। একটি সদস্যপদে কোনো প্রার্থীই নেই।
আবাসিক ছাত্র হল সংসদ
শাহপরাণ হল সংসদে ভিপিতে তিনজন, জিএসে দুজন, এজিএসে দুজন, সমাজসেবাতে দুজন ও তিনটি সদস্যপদে ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন৷ ক্রীড়া সম্পাদক এবং সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী।
বিজয়-২৪ হল সংসদে ভিপি, জিএস, এজিএস, ক্রীড়া সম্পাদক, সাহিত্য সাংস্কৃতিক পদে দুজন করে, সমাজসেবায় তিনজন ও তিনটি সদস্যপদে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সৈয়দ মুজতবা আলী হলে ভিপিতে দুজন, জিএস-এজিএসে তিনজন করে, ক্রীড়া সম্পাদকে দুজন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে দুজন এবং তিনটি সদস্যপদে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ ছাড়া সমাজসেবায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় একজন বিজয়ী।
শাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবুল মুকিত মোহাম্মদ মোকাদ্দেছ জানান, ‘প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে লটারির মাধ্যমে ব্যালট বরাদ্দ দেওয়া হবে৷ এ কারণে হয়তো দু-এক দিন সময় লাগতে পারে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সদস যপদ জন প র প রক শ ইসল ম করছ ন ত নজন চ রজন
এছাড়াও পড়ুন:
উন্নয়নে তথ্যের ফারাক রাখার সুযোগ নেই
চট্টগ্রাম দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী ও গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী। এই শহরের জনসংখ্যা কত, তা একটি সাধারণ প্রশ্ন হলেও রাষ্ট্রের দুটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থার তথ্যে প্রায় দ্বিগুণ পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জনশুমারি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রতিবেদনে তথ্যের বড় তারতম্য দেখা যাচ্ছে।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জনশুমারি অনুযায়ী, সংখ্যাটি যেখানে ৩২ লাখের কিছু বেশি, সেখানে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) অনুমান করছে ৬০ থেকে ৭০ লাখ। একটি নগরের জনসংখ্যা কত, তার পরিসংখ্যানে বিশাল এই ফারাক প্রমাণ করে আমরা উন্নয়নের ভিত্তিভূমিকে কতটা অনুমাননির্ভর করে তুলেছি। চসিক ৭০ লাখ বাসিন্দার কথা বলছে, তার মধ্যে ১৫ লাখকে ‘ভাসমান’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মাত্র ১৯ লাখ ভোটার থাকা সত্ত্বেও ৭০ লাখের দাবি প্রমাণ করে, চসিকের হিসাব জরিপভিত্তিক নয়, বরং এটি অনুমাননির্ভর।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কোনো অঞ্চলের উন্নয়ন প্রকল্প, বাজেট বরাদ্দ, অবকাঠামোর আকার নির্ধারণ এবং সেবাদানের সক্ষমতা—সবকিছুর মূল চাবিকাঠি হলো জনসংখ্যার নির্ভুল হিসাব। কিন্তু চট্টগ্রাম নগরে এই মৌলিক তথ্যেরই চরম ঘাটতি রয়েছে। এই তথ্যের দ্বৈততা ও অনিশ্চয়তা কিছু গুরুতর সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যদি জনসংখ্যা ৩২ লাখ হয়, আর ৭০ লাখের ভিত্তিতে অবকাঠামো ও সেবা প্রকল্প নেওয়া হয়, তবে সরকারি সম্পদের বড় ধরনের অপচয় হয়। আবার যদি প্রকৃত জনসংখ্যা ৬০ লাখ হয়, কিন্তু বাজেট বরাদ্দ হয় ৩২ লাখের ভিত্তিতে, তবে জনগণ প্রত্যাশিত নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হয়।
সঠিক সংখ্যা জানা না থাকলে পানির সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, রাস্তাঘাট নির্মাণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থার মতো মৌলিক নাগরিক সুবিধাগুলোর পরিকল্পনা ভুলভাবে নির্ধারিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ৩২ লাখের জন্য নির্মিত পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা ৬০ লাখ মানুষের চাপ নিতে পারবে না। যখন দুটি সরকারি সংস্থার তথ্যে এত বড় ফারাক থাকে, তখন উন্নয়ন বা সেবার ব্যর্থতার দায়ভার কার ওপর পড়বে, তা নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। বিবিএসের জরিপ যে কমিটি অনুমোদন করে, তার প্রধান স্বয়ং সিটি মেয়র, ফলে এই বৈপরীত্য সত্যিই দুঃখজনক।
জনশুমারি এবং সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক প্রতিবেদন—উভয় তথ্য বিশ্লেষণ করে একটি গ্রহণযোগ্য ও বিজ্ঞানসম্মত ফলাফল প্রণয়ন করতে হবে। এর জন্য সরকার এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বিবিএস ও চসিকের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি যৌথ টাস্কফোর্স গঠন করতে পারে। চট্টগ্রামের টেকসই ও সুষম উন্নয়নের স্বার্থে নগরটির প্রকৃত জনসংখ্যা কত, সেই তথ্যের জট দ্রুত নিরসন করা জরুরি।