পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন আহম্মেদ, তাঁর বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ ও তাঁদের স্ত্রীদের বিরুদ্ধে আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে রাখার অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় পটুয়াখালীর সহকারী পরিচালক তাপস বিশ্বাস বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা করেন।

মহিউদ্দিন আহম্মেদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, তিনি বৈধভাবে ৫৫ কোটি ২০ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৪ টাকা আয় করেছেন। এর মধ্যে পারিবারিক ও অন্যান্য খাতে ব্যয় হয়েছে ২৪ কোটি ৮২ লাখ ৬২ হাজার ৬৩৭ টাকা। ব্যয় বাদ দিলে তাঁর কাছে ৩৪ কোটি ৩৭ লাখ ৬১ হাজার ১৪৭ টাকার সম্পদ থাকার কথা। কিন্তু অনুসন্ধানে মহিউদ্দিন আহম্মেদ ও তাঁর স্ত্রী মারজিয়া আখতার সুমার ভোগদখলে ৩৯ কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার ৩৮৩ টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে, যা বৈধ আয়ের তুলনায় ৮ কোটি ৭১ লাখ ৫৪ হাজার ২৩৬ টাকা বেশি। অনুসন্ধানে এ অতিরিক্ত সম্পদের কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, মেয়রের স্ত্রী মারজিয়া আখতারের ভোগদখলে স্বামীর আয়বহির্ভূত ২ কোটি ১৩ লাখ ৩০ হাজার ৪৬০ টাকার সম্পদ রয়েছে। এসব সম্পদের কোনো বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। স্বামীর অবৈধ সম্পদ নিজের ভোগদখলে রাখার অভিযোগে তাঁকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

সাবেক মেয়রের বড় ভাই আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় দুদক বলেছে, তিনি বৈধভাবে ৫৭ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার ৭৫০ টাকা আয় করেছেন। পারিবারিক ও অন্যান্য খাতে ব্যয় হয়েছে ২৩ কোটি ৬৩ লাখ ৪৮ হাজার ৯৫ টাকা। ব্যয় বাদ দিলে তাঁর কাছে ৩৩ কোটি ৬১ লাখ ৯৮ হাজার ৭৯৮ টাকার সম্পদ থাকার কথা। কিন্তু অনুসন্ধানে আবুল কালাম আজাদ ও তাঁর স্ত্রী আকলিমা বেগম রুবির ভোগদখলে ৬০ কোটি ৫৩ লাখ ৭১ হাজার ৪০৩ টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে। এটি বৈধ আয়ের তুলনায় ২৬ কোটি ৯১ লাখ ৭২ হাজার ৬০৫ টাকা বেশি। এ অতিরিক্ত সম্পদের কোনো বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি।

দুদক আরও জানিয়েছে, গৃহিণী আকলিমা বেগমের ভোগদখলে ১ কোটি ৯০ লাখ ১৮ হাজার ২৩৭ টাকার সম্পদ পাওয়া গেছে, যার বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। স্বামীর অবৈধ সম্পদ দখলে রাখার অভিযোগে তাঁকেও মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

দুটি মামলার বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক তাপস বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে আয়ের বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের সত্যতা পেয়ে মামলা করা হয়েছে। পরবর্তী তদন্তে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ভ গদখল ব ধ উৎস

এছাড়াও পড়ুন:

স্ত্রীসহ বিপ্লব কুমার সরকারের বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান থাকায় ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার ও তাঁর স্ত্রী হোসনেয়ারা বেগমের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।

একই সঙ্গে বিপ্লব কুমারের ভাই প্রণব কুমার সরকার ও হোসনেয়ারা বেগমের বোন শাহানারা বেগমের বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের অবকাশকালীন বিচারক মো আবদুল্লাহ আল মামুন মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম জানান, দুদকের পক্ষে সহকারী পরিচালক মো. রাসেল রনি নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করেন।

নিষেধাজ্ঞার আবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার ও অন্যান্যের বিরুদ্ধে সরকারি চাকরিজীবী হয়ে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তাঁরা আয়ের উৎস আড়াল করে নিজ নামে ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে মোট ৩৪১টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে মোট ৩০ কোটি ৭২ লাখ টাকা জমা ও ৩০ কোটি ১৩ লাখ টাকা উত্তোলন করে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ করেছেন। নামে-বেনামে সম্পত্তি ক্রয়সহ জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, বিপ্লব কুমার সরকার ও অভিযোগসংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তিরা দেশত্যাগ করার চেষ্টা করছেন। তাই সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাঁদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া জরুরি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টেলিটকের সিনিয়র ম্যানেজার আসাদুল্লাহর বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা
  • স্ত্রীসহ বিপ্লব কুমার সরকারের বিদেশ যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা