চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: দলে আছেন নর্কিয়া, এবার খেলতে পারবেন তো
Published: 13th, January 2025 GMT
২০১৯ বিশ্বকাপের পর ২০২৩—টানা দুই আসরেই দক্ষিণ আফ্রিকা দলে জায়গা হয়েছিল আনরিখ নর্কিয়ার। কিন্তু দুবারই টুর্নামেন্ট শুরুর আগে চোটে ছিটকে যেতে হয়েছিল তাঁকে।
এবার ৫০ ওভার ক্রিকেটের আরেকটি আইসিসি টুর্নামেন্টে ডাক পেয়েছেন নর্কিয়া। ৩১ বছর বয়সী এই ফাস্ট বোলারকে নিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল ঘোষণা করেছে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা (সিএসএ)।
নর্কিয়ার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে জায়গা পেয়েছেন লুঙ্গি এনগিডিও। ২৮ বছর বয়সী এই পেসারও চোট কাটিয়ে দলে ফিরেছেন। টুর্নামেন্টে প্রোটিয়াদের নেতৃত্ব দেবেন টেম্বা বাভুমা।
নর্কিয়া ২০১৯ বিশ্বকাপের দল থেকে ছিটকে পড়েছিলেন আঙুলের চোটে, ২০২৩ বিশ্বকাপের দল থেকে পিঠের চোটে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার পর চোটের কারণে সেই যে ছিটকে পড়েন, এরপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন ২০২৪ সালের মে মাসে।
তবে জুনে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলার পর আবার চোটে পড়েন। সম্প্রতি ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজেও খেলতে পারেননি পায়ের চোটে। এমনকি গত সপ্তাহে শুরু হওয়া এসএ২০–এর প্রথম ম্যাচও মিস করেছেন।
আরও পড়ুনচ্যাম্পিয়নস ট্রফির বাংলাদেশ দলে লিটন নেই১২ জানুয়ারি ২০২৫তবে নর্কিয়া এই মুহূর্তে খেলার মতো ফিট বলে তাঁকে ফেব্রুয়ারিতে শুরু চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে রেখেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ রব ওয়াল্টার। চলমান এসএ২০–তে আর কোনো চোটে না পড়লে তৃতীয়বারের চেষ্টায় ৫০ ওভারের আইসিসি টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ হবে ২২ ম্যাচে ৩৬ উইকেট নেওয়া এই ফাস্ট বোলারের।
নর্কিয়ার মতো চোট কাটিয়ে দলে ফিরেছেন এনগিডিও। ৬২ ওয়ানডেতে ৯৬ উইকেট শিকার করা এই পেসার সর্বশেষ খেলেছেন গত বছরের অক্টোবরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। এরপর চোটের কারণে পাকিস্তান সিরিজ মিস করেন।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম ম্যাচ ২১ ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তানের বিপক্ষে। গ্রুপে অন্য দুই প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। আট দলের টুর্নামেন্টের প্রতি গ্রুপের সেরা দুটি করে দল সেমিফাইনালে খেলবে।
আরও পড়ুনচ্যাম্পিয়নস ট্রফি: কামিন্স-হ্যাজলউডকে নিয়েই অস্ট্রেলিয়া দল৫ ঘণ্টা আগেদক্ষিণ আফ্রিকা স্কোয়াড:টেম্বা বাভুমা (অধিনায়ক), টনি ডি জর্জি, মার্কো ইয়ানসেন, হাইনরিখ ক্লাসেন, কেশব মহারাজ, এইডেন মার্করাম, ডেভিড মিলার, উইয়ান মুল্ডার, লুঙ্গি এনগিডি, আনরিখ নর্কিয়া, কাগিসো রাবাদা, রায়ান রিকেলটন, তাব্রেইজ শামসি, ট্রিস্টান স্টাবস ও রাসি ফন ডার ডুসেন।.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশের কিস্তির প্রস্তাব উঠছে আইএমএফ পর্ষদে
আগামী ২৩ জুন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পর্ষদের সভায় বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব উঠছে। সভায় অনুমোদন হলে একসঙ্গে দুই কিস্তির ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার পাবে বাংলাদেশ। আইএমএফ শুক্রবার কার্যসূচিতে নির্বাহী পর্ষদের সভার এ তারিখ নির্ধারণের তথ্য প্রকাশ করেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আইএমএফ পর্ষদের বৈঠকে চলমান ঋণ কর্মসূচির পর্যালোচনা প্রতিবেদন উপস্থাপনের কথা রয়েছে। এ প্রতিবেদন পর্ষদ অনুমোদন করলে বাংলাদেশ একসঙ্গে পাবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ। ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে।
বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা দিতে আইএমএফ ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করে। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার কারণে ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণসহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ও ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার।
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও শর্ত পরিপালন নিয়ে বিশেষত টাকা–ডলার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। গত ফেব্রুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত এপ্রিলে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল শর্ত পালনের অগ্রগতি পর্যালোচনায় ঢাকায় আসে। তবে সমঝোতা না হওয়ায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এরপর ওয়াশিংটনে গত ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হয়।
সবশেষে গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতা হয় এবং বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ ওয়াশিংটন থেকে এক বিবৃতিতে জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং পর্ষদ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ৭৬ কোটি ডলার বাড়তি ঋণ চেয়েছে। বাড়তি ঋণ যোগ হলে মোট দাঁড়াবে ৫৪০ কোটি ডলার। বিবৃতিতে বিনিময় হার, রাজস্ব আদায়, ব্যাংক খাতসহ সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলা হয়।