কামিন্স ও হ্যাজলউডকে নিয়েই অজিদের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল
Published: 13th, January 2025 GMT
পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। শঙ্কা ছিল তাদের নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ও আরেক তারকা পেসার জশ হ্যাজলউডকে নিয়ে। তবে সেই ঘনঘটাকে উড়িয়ে দিয়ে দুই পেসারই আছেন অজি দলে। কামিন্সকে অধিনায়ক করেই পাকিস্তানে অনুষ্ঠিতব্য চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে অস্ট্রেলিয়া। চমক বলতে দলে থিতু হতে না পারা দুই অলরাউন্ডার অ্যারন হার্ডি এবং ম্যাথু শর্ট।
অস্ট্রেলিয়া দলে কামিন্স এবং হ্যাজলউড থাকবেন কিনা তা নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে ছিল রাজ্যের আগ্রহ। কারণ, দুজনকে ঘিরেই যে ছিল অনিশ্চয়তা। অজি কাপ্তান এই মুহূর্তে পিতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকলেও তার গোড়ালিতে হালকা চোট আছে। অন্যদিকে হ্যাজলউড ভুগছেন পেশির সমস্যায়। তাই দুজনই আসন্ন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে থাকছেন দলের বাইরে।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগেই হ্যাজলউড সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে কামিন্সকে নিয়ে এখনও আছে দুর্ভাবনা। তার চোটপ্রাপ্ত গোড়ালির অবস্থা বুঝতে স্ক্যান করিয়েছেন। স্ক্যানের ফল এখনও আসেনি।
আরো পড়ুন:
আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি-২০২৫
আফগানিস্তানের দল ঘোষণা, ফিরলেন ইব্রাহিম
কর্নওয়াল-টপলিকে ছাড়া চিটাগংয়ের বিপক্ষে বোলিংয়ে সিলেট
আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কোনো কারণ দেখানো ছাড়াই পরিবর্তন আনা যাবে স্কোয়াডে। তবে এখনও অধিনায়ককে নিয়ে আশা আছে নির্বাচকদের।
অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার শর্ট কদিন আগেই বিগ ব্যাশে ৫৪ বলে খেলেছেন ১০৯ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস। স্কোয়াডে একমাত্র বিশেষজ্ঞ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। প্রয়োজন পড়লে হাত ঘোরাবেন শর্ট ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। দলে ঠাঁই পাননি স্পিনিং অলরাউন্ডার কুপার কনোলি ও তরুণ আগ্রাসী ব্যাটসম্যান জেইক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক।
অন্যদিকে চোট আছে পেস বোলিং অলরাউন্ডার হার্ডিরও। বিগ ব্যাশে খেললেও আপাতত বোলিং করতে পারছেন না চোটের কারণে। তবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগে তিনি বোলিংয়ে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে। চোটের কারণে ক্যামেরন গ্রিনের না থাকা নিশ্চিত ছিল আগেই। সেখানেই মূলত সুযোগটি মিলেছে হার্ডির। সঙ্গে মিচেল মার্শ ও মার্কাস স্টয়েনিস তো আছেনই।
মূল তিন পেসার কামিন্স, হ্যাজেলউড ও স্টার্কের সঙ্গে বিকল্প পেসার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন নাথান এলিস। শন অ্যাবট ও জেভিয়ার বার্টলেটকে পেছনে ফেলে তিনি পাকিস্তানগামী প্লেনের টিকেট পেয়েছেন।
দুইবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির লড়াই শুরু হচ্ছে ২২ ফেব্রুয়ারি চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি তাদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি গ্রুপপর্বের সবশেষ ম্যাচে তারা মোকাবিলা করবে আফগানিস্তানকে। এর আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কায় একটি ওয়ানডে খেলবেন তারা।
অস্ট্রেলিয়া স্কোয়াড:
প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), অ্যালেক্স ক্যারি, নাথান এলিস, অ্যারন হার্ডি, জশ হ্যাজলউড, ট্র্যাভিস হেড, জশ ইংলিস, মার্নাস ল্যাবুশেন, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ম্যাথু শর্ট, স্টিভেন স্মিথ, মিচেল স্টার্ক, মার্কাস স্টয়েনিস ও অ্যাডাম জাম্পা।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গংগাচড়ায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ, আতঙ্ক কাটেনি এখনও
রংপুরের গংগাচড়ায় ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ঘিরে সহিংসতার শিকার হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়ি মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। তবে ঘটনার তিন দিন পরেও এলাকায় ফেরেনি অনেক পরিবার। আতঙ্কে এখনো আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে অনেকে।
গত ২৭ জুলাই রাতে ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার আগে এলাকায় মাইকিং করে লোকজন জড়ো করা হয়।
পুলিশ, প্রশাসন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলছেন, যারা হামলা করেছেন, তাদের মধ্যে অনেকে ছিলেন ‘বহিরাগত’। পাশের নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলা থেকে লোকজন এসে হামলা চালিয়ে চলে যায়। হামলার সময় ২২টি ঘরবাড়ি তছনছ ও লুটপাট করা হয়।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় অস্থায়ী সেনা ক্যাম্প বসানো হয়েছে, বাড়ানো হয়েছে পুলিশ টহল। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ঢেউটিন, কাঠ, চাল-ডাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছে এবং ঘরবাড়ি মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। তবু আতঙ্কিত পরিবারগুলো।
ক্ষতিগ্রস্তদের একজন অশ্বিনী চন্দ্র মোহান্ত বলেন, “সেদিনের ঘটনা ছিল এক ভয়াবহ। আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ম অবমাননাকারী কিশোরকে থানা হেফাজতে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও ঘরবাড়ি রক্ষা হয়নি। স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি এবং কিছু মুরুব্বি আমাদেরকে অভয় দিয়েছিলেন, কিন্তু রক্ষা হয়নি।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা নিজেরাই অভিযুক্ত কিশোরকে থানায় সোপর্দ করেছি। তারপরও মিছিল নিয়ে এসে দুই দফায় আমাদের ২০ থেকে ২৫টি ঘরবাড়ি তছনছ করে দিয়ে লুটপাট করেছে তারা। এদের মধ্যে অধিকাংশ লোকেই অপরিচিত।”
আরেক ভুক্তভোগী দেবেন্দ্র চন্দ্র বর্মন জানান, “প্রথমে অল্পসংখ্যক কম বয়সী কিছু ছেলে আসে। পরে হাজারো লোকজন এসে আমাদের বাড়িঘরে তাণ্ডব চালায়। অনেকেই এখনো আত্মীয়দের বাড়িতে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”
রবীন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী রুহিলা রানী বলেন, “ছোট ছেলেটা যদি ভুল করে থাকে, আমরা তাকে থানায় দিয়েছি। কিন্তু তারপরও এমন ধ্বংসযজ্ঞ কেন? আমাদের গরু, সোনা-টাকা সব লুটে নিয়েছে। শুধু চাল-ডাল আর টিনে কি জীবন চলে?”
গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আনিসুর রহমান লাকুসহ একটি প্রতিনিধি দল। তারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি ও লুঙ্গি বিতরণ করেন এবং পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
গংগাচড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, “ঘটনার খবর পেয়ে কিশোরটিকে গ্রেপ্তার করে থানায় আনা হয় এবং পরে আদালতের মাধ্যমে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারপরও পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক নিরাপত্তায় নিয়োজিত।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহামুদ হাসান মৃধা বলেন, “অপরাধীদের ধরতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হচ্ছে সহায়তা। পুলিশ ও সেনাবাহিনী পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে।”
উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্যমতে, হামলায় ১৫টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাতে ২২টি পরিবার বসবাস করতেন। ঘর মেরামতের পর কিছু পরিবার ফিরলেও অভিযুক্ত কিশোর ও তার চাচার পরিবারের কেউ এখনো ফিরে আসেনি।
ঢাকা/আমিরুল/ইভা