নানা অনিয়ম এবং রোগীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগে বাগেরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসময় সেখানে বিভিন্ন অনিয়মের সত্যতা পাওয়ার কথা জানান দুদক বাগেরহাট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে দুদকের একটি দল হাসপাতালে অভিযান চালায়। এসময় দুদকের কর্মকর্তারা প্রথমে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার সমাদ্দারের সঙ্গে অভিযোগ নিয়ে কথা বলেন। এরপর তারা তত্ত্বাবধায়ককে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন।

পেটের সমস্যায় হাসপাতালে আসা মো.

মোজাফফর হোসেন মোজাম বলেন, “চিকিৎসক দেখাতে এসেছি। অনেকগুলো পরীক্ষা দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের কিছু পরীক্ষা করাতে পারলেও বেশিরভাগই বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে করতে হয়েছে। হাসপাতালের টয়লেট ও খাবারসহ নানা সমস্যার পাশাপাশি নার্স ও চিকিৎসকদের ব্যবহারে আমরা চরম বিরক্ত। দুদকের অভিযান দেখে আমরা খুশি।”

আরো পড়ুন:

ফরিদপুরে হামলায় ৩ ডিবি পুলিশ আহত

ফরিদপুরে হাসপাতালে হেনস্তায় রোগীর মৃত্যু, স্বজনদেরও মারধর

মিন্টু নামে অপর রোগী বলেন, “হাসপাতালে তেমন কোনো সেবা পাই না। দুর্নীতির সীমা নেই। রোগীদের খাবারো ঠিকমতো দেওয়া হয় না। দুদক অভিযান চালিয়েছে, এখন যদি কিছুটা ভালো হয় নার্স ও চিকিৎসকরা।”

দুদকের বাগেরহাট জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইদুর রহমান বলেন, “হাসপাতালে বিভিন্ন অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিশেষ করে সরকারি সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও বেসরকারি ক্লিনিকে রোগীদের পাঠানোর প্রমাণ মিলেছে। এ বিষয়ে কিছু নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। নার্স ও চিকিৎসকদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগও সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “রোগীদের খাবারের বিষয়ে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। রান্নাঘর পরিদর্শনে দেখা গেছে- যিনি রান্নার দায়িত্বে আছেন, তিনি সরাসরি রান্না করেন না। খাবারের পরিমাণেও অনিয়ম পাওয়া গেছে। উদাহরণ হিসেবে, রোগীদের জন্য এক পিস মাংসের ওজন হওয়া উচিত ৯৬-৯৭ গ্রাম, অথচ দুই পিস মাংস মিলে হয়েছে ৯২ গ্রাম। এটি থেকে পরিষ্কার, কী ধরনের অনিয়ম চলছে।”

সাইদুর রহমান বলেন, “আমাদের টিম সকাল থেকেই গোপনে কাজ করেছে। চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং খাবারের মানোন্নয়নসহ বেশ কিছু সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। এসব বিষয়ে আবারো ফলোআপ করা হবে।”

বাগেরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক অসীম কুমার সমাদ্দার বলেন, “চিকিৎসক ও নার্স সংকটসহ নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে ৩৪টি চিকিৎসক পদ শূন্য রয়েছে। প্রয়োজন ২০০ জন নার্স, কিন্তু রয়েছেন মাত্র ৭০ জন। জনবল সংকট দূর করা গেলে দুদকের সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।”

ঢাকাশহিদুল/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ক ৎসক

এছাড়াও পড়ুন:

জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন 

নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের আহ্বায়ক কমিটির নেতাদের বিরুদ্ধে একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক ডা. শাহীন মিয়া আহ্বায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন করেন।

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব আলম মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক জুয়েল আরমান, ফজলু মেম্বার, মনির মল্লিক, শাহাদাত হোসেন, ওবায়দুর রহমান, শাহ আল বেপারী, সেলিম হোসেন দিপু।

সংবাদ সম্মেলনে শাহীন মিয়া বলেন, কোন চাঁদাবাজ, দখলবাজ ও স্বৈরাচারের দোসর এদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র যেকোনো অঙ্গ সংগঠনের পদে থাকতে পারে না। নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হিসেবে আমার সংগঠনে যারা চাঁদাবাজ, দখলবাজ স্বৈরাচারের দোসর আমি তাদেরকে বহিষ্কার করেছি। 

আওয়ামীলীগের সাথে শাহীনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আনাদের ব্যাপারে পাল্টা তিনি বলেন, রূপগঞ্জ থানার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলামকে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের দোসর, দলীয় নেতাকর্মীদের নির্যাতন ও সাংগঠনিক দূর্বলতার কারণে তাকে ৩০ নভেম্বর ২০২৩ সালে সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। 

এছাড়াও বিএনপির অসহযোগ আন্দোলনে নজরুলের কোন প্রকার সম্পৃক্ততা ছিল না। সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম হত্যা মামলার আসামি রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিনের যোগসাজসে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের একাধিক মৌজার আবাদী জমিতে বালি ভরাট করে সাধারণ কৃষকের দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করেছিল। 

এছাড়াও অসহায় ও সাধারন মানুষের বসতবাড়ি সহ জবরদখল করে নেয় তারা। নজরুল দোসরদের আস্থাভাজন হওয়ার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের উপর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় নির্যাতন করেছিল। এভাবে বিগত ১৭ বছরে স্বৈরাচার সরকারের আস্থাভাজন হয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন এই নজরুল। সে হলো মৌসুমী পাখি। 

তিনি বলেন, ১৭ টি বছর জুলুম নির্যাতন সহ্য করে এই নারায়ণগঞ্জে কৃষক দলকে হাতের মুঠোয় রেখেছি আজ সেই কৃষক দলের ভাবমূতি ক্ষুন্ন করতে এই নজরুল স্বৈরাচারের সাথে হাত মিলিয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনের মানহানি করেছে।

আমি এরই মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তার বিরুদ্ধে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। বিষয়টি আমি আমার হাইকমান্ডকে অবগত করেছি।

তিনি আরও বলেন, রূপগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সার্জন মোমেনকে চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও দলীয় শৃংখল বঙ্গের দায়ে ১০ই এপ্রিল সভাপতি পদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। সে বিগত সতেরো বছর নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে নিজের স্বার্থ হাসিল করেছে। ৫ ই আগস্টের পর ৪০ বিঘা জমির উপর মাছের প্রজেক্ট দখল করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন মোমেন। 

স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সময় সে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেছেন তার নিজের জন্য। এখনো সে এলাকায় সাধারণ মানুষকে মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করছে এর যথেষ্ট প্রমাণ আমার কাছে এসেছে এবং অনেক সাধারণ মানুষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। যে সমস্ত মানুষ কোন দল করে না দল বুঝেনা। এ সমস্ত অভিযোগের কারণে তাকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গতকাল নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে নজরুলসহ কৃষকদলের বেশ কয়েকজন নেতা সংবাদ সম্মেলন করেন। এসময় শাহীনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের লোকজনকে টাকার বিনিময়ে পুনর্বাসনসহ বেশ কিছু অভিযোগ  আনেন তারা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফ্যাসিস্টদের দোসররা বিভিন্ন ইস্যূতে পানি ঘোলা করতে চায়: মাও. জব্বার
  • ফ্যাসিস্টদের দোসররা বিভিন্ন ইসূতে পানি ঘোলা করতে চায়: মাও. জব্বার
  • চকলেটের লোভ দেখিয়ে শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ, বৃদ্ধ গ্রেপ্তার
  • গাইবান্ধায় বাবা-মাকে মারধর করে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণ, অভিযুক্ত আটক
  • মাও. রইস এর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শহরে বিক্ষোভ
  • জেলা কৃষকদলের নেতাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন 
  • আড়াইহাজারে পাওয়ারলুম শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ
  • চট্টগ্রামে ব্যাটরিচালিত রিকশা শ্রমিকদের সমাবেশ পণ্ড, আটক ৩
  • ৭ দফা দাবিতে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে ফটক সভা
  • চিকিৎসক মাত্র ৩ জন, অন্তঃসত্ত্বাদের সেবায় নার্স, দাঁতের চিকিৎসায় টেকনোলজিস্ট