Samakal:
2025-06-16@08:57:44 GMT

বিসিবির সংস্কার কমিটি স্থগিত

Published: 26th, January 2025 GMT

বিসিবির সংস্কার কমিটি স্থগিত

ঢাকার ক্রিকেট ক্লাবের চাওয়া ছিল গঠনতন্ত্র সংস্কার কমিটির আহ্বায়ক নাজমুল আবেদীন ফাহিমের পদত্যাগ। ক্লাবের দাবি মেনে তাঁকে আর পদত্যাগ করতে হচ্ছে না সংস্কার কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করায়। গতকাল পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেদিক থেকে দেখলে ক্লাব কর্মকর্তারা নিজেদের বিজয়ী দাবি করতেই পারেন। গঠনতন্ত্র সংস্কার কমিটির কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় ঢাকা প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ মাঠে গড়াতেও বাধা থাকছে না। বিসিবি পরিচালক মাহাবুবুল আনাম জানান, ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিশ (সিসিডিএম) শিগগির ক্লাবগুলোর সঙ্গে কথা বলে লিগের খেলা শুরু করবে। নৈতিকভাবে নিজেদের জয় হওয়ায় ক্লাবগুলোরও লিগ খেলতে আপত্তি নেই বলে জানা গেছে।

আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থাকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে ঢাকার ক্লাব ক্যাটেগরিতে পরিচালকের সংখ্যা ১২ থেকে কমিয়ে চারে নামানোর সুপারিশ করেছিল নাজমুল আবেদীন ফাহিমের কমিটি। বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ৭৬টি ক্লাব একাট্টা হয়ে লিগ বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়। ঢাকা প্রথম বিভাগ লিগও বয়কট করে ২০টি ক্লাব। ক্লাব প্রতিনিধিরা সভাপতি ফারুক আহমেদকে স্মারকলিপিসহকারে আলটিমেটাম দেন কয়েক দিন আগে। এক সপ্তাহ সময় নিয়ে সমাধানের পথ খোঁজার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সভাপতি ফারুক। 

সে প্রেক্ষাপটে গতকাল বোর্ড সভায় গঠনতন্ত্র সংস্কার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এ ব্যাপারে বিসিবি সভাপতি মাহাবুবুল আনাম বলেন, ‘কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে পরিবর্তন, পরিবর্ধন করে কমিটি কার্যকর করা হবে। তারা সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেবেন।’ বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ ছাড়া বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওয়ার্কিং ও নিরাপত্তা কমিটি বাদে বাকি সব স্ট্যান্ডিং কমিটি বণ্টন করা হয়েছে পরিচালকদের মধ্যে।

ক্রিকেট অপারেশন্সই পেলেন ফাহিম

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে মনোনীত পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিমের চাওয়া ছিল ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদকে নিজের পছন্দের কথা জানিয়েও ছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর চাওয়া পূরণ হচ্ছিল না বোর্ড সভাপতি নিজের হাতে রেখেছিলেন বিভাগটি। এ নিয়ে সভাপতি ফারুক ও ফাহিমের বিবাদ প্রকাশ্যে রূপ নেয়। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় পর্যন্ত গড়ায় বিষয়টি। বিসিবির একজন কর্মকর্তা জানান, বিশেষ নির্দেশনায় ফাহিমকে শেষ পর্যন্ত ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান করা হয়। নারী বিভাগেরও চেয়ারম্যান তিনি। ফলে জাতীয় দল-সংক্রান্ত সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ফাহিমের। বাকি স্ট্যান্ডিং কমিটি ভাগাভাগিতে মাহাবুবুল আনাম গ্র্যান্ডসের পাশাপাশি টেন্ডার অ্যান্ড পারচেজ ও হাই পারফরম্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন। 

ক্রিকেটের অবকাঠামোগত উন্নয়নে এ তিনটি বিভাগই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ পরিচালকের হাতেই পড়েছে কার্যকর দুটি বিভাগ। ইফতেখার রহমান মিঠুকে আম্পায়ার্স কমিটির পাশাপাশি মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আকরাম খানকে ফ্যাসিলিটি ম্যানেজমেন্ট, টুর্নামেন্ট কমিটি ও ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড বিভাগের চেয়ারম্যান। ফাহিম সিনহাকে ফিন্যান্স, লজিস্টিক অ্যান্ড প্রটোকল, গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। শৃঙ্খলা কমিটি ও এইজ গ্রুপ টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরী। মঞ্জুরুল আলম মেডিকেল এবং ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যান। মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে সিসিডিএমের পাশাপাশি অডিট কমিটির চেয়ারম্যান করা  হয়েছে। কাজী ইনামকে বাংলাদেশ টাইগার্সেই রাখা হয়েছে। সভাপতি ফারুক নিজের হাতে রেখেছেন মার্কেটিং কমিটি।

বিপিএলের সমাধান ৪৮ ঘণ্টায়

পরিচালক মাহাবুবুল আনাম জানান, বিপিএলের সম্মানী নিয়ে এক-দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি যে গড়িমসি করছে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর সমাধান করা হবে। ক্রিকেটারদের বকেয়া পরিশোধে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। ভালো খবরের সঙ্গে একটি খারাপ খবরও আছে। অঙ্কুরেই শেষ নারী বিপিএল। মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান মিঠু বলেন, ‘তাড়াহুড়ো না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ এ ছাড়া চারজন ট্রেনিং কিউরেটর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নারী আম্পায়ার ও ম্যাচ অফিসিয়াল বেতনভুক্ত করা হয়েছে। আম্পায়ার্স বিভাগে বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে গ্রেডিং অনুযায়ী।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স স ক র কম ট র কম ট র ট কম ট

এছাড়াও পড়ুন:

পশ্চিমবঙ্গের চার শ্রমিককে বিদেশি বলে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা ভারতের

আসাম রাজ্যের পর গোটা ভারত থেকেই বাংলাদেশি বলে ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো (পুশইন) হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তা–ই নয়, প্রমাণের অভাবে আবার তাঁদের অনেককে ফিরিয়েও আনতে হচ্ছে বলে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত অঞ্চল থেকে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গেরই সংবাদমাধ্যম।

দক্ষিণ ও মধ্য বাংলার দুই জেলা বর্ধমান ও মুর্শিদাবাদের চার পরিযায়ী শ্রমিক মহারাষ্ট্রে কাজ করতে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে মহারাষ্ট্র পুলিশ তাঁদের ভারতের সীমান্ত নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে তুলে দেয়। এরপর বিএসএফ তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়। এ চারজনই আবার মুসলমান।

মুম্বাইয়ে কাজ করতে যাওয়া মুর্শিদাবাদ ও বর্ধমানের এই চার পরিযায়ী শ্রমিককে মহারাষ্ট্র পুলিশ বাংলাদেশি তকমা লাগিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দেয়। কোনো রকম যাচাই না করেই তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজ্য পুলিশের উদ্যোগে গতকাল রোববার বিকেলে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) কাছ থেকে ওই তিন নাগরিককে ফেরত নিয়ে বিএসএফ তাঁদের কোচবিহার জেলার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে বলে জানা গেছে।

চারজনের মধ্যে তিনজনই মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা হলেন হরিহরপাড়ার তরতিপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন মণ্ডল, ভগবানগোলার মহিষাস্থলি গ্রামপঞ্চায়েতের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা মেহবুব শেখ ও বেলডাঙার কাজিশাহার বাসিন্দা মিনারুল শেখ। অন্যজন পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার কুলুট গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফা কামাল। তাঁরা প্রত্যেকেই পরিযায়ী শ্রমিক। মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে তাঁরা রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। হেফাজতে নেওয়ার পাঁচ দিন পর তাঁদের উদ্ধার করা হলো বলে জানানো হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের সংবাদপত্র ‘পুবের কলম’ আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তাঁদের কাছে বৈধ নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে দুই প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকের সঙ্গে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

পশ্চিমবঙ্গের সংবাদপত্র ‘পুবের কলম’ আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তাঁদের কাছে বৈধ নথিপত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁদের বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করে দুই প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকের সঙ্গে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। দুই দিন ধরে তাঁরা কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ থেকে কিছুটা দূরে জিরো পয়েন্টে ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় মুঠোফোন থেকে ভিডিও বার্তায় ওই চার শ্রমিক তাঁদের দুর্দশার কথা জানান। তারপরেই তাঁদের ফেরানোর তৎপরতা শুরু করেন পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যসভার সংসদ সদস্য সামিরুল ইসলামসহ অন্য জনপ্রতিনিধিরা। পুলিশও বিষয়টি বিএসএএফকে জানায়।

হরিহরপাড়ার বাসিন্দা শামীম রহমান গণমাধ্যমে বলেন, ‘স্থানীয় তৃণমূলের রাজনৈতিক নেতাদের বিষয়টি জানানো হয়। তারপর তাঁদের ফেরানোর তৎপরতা শুরু হয়। তাঁরা উদ্ধার হয়ে ঘরে ফিরছেন ভেবে ভালো লাগছে।’

সূত্রের খবর, বাংলাদেশি সন্দেহে চারজনকে আটক করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে ১০ জুন বিএসএফের হাতে তুলে দেয় মহারাষ্ট্র পুলিশ। তাঁদের মুম্বাই থেকে আগরতলা ও পরে কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে পাঠানো হয়। ওই শ্রমিকদের টাকা, মুঠোফোনও কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হরিহরপাড়ার তরতিপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন দুই বছর ধরে মুম্বাইয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। গতকাল সকালে তাঁর স্ত্রী পিংকি বিবি হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখের সঙ্গে দেখা করেন। বিধায়কের মাধ্যমে বৈধ নথি সংসদ সদস্য সামিরুল ইসলাম ও প্রশাসনের কর্তাদের কাছে পাঠানো হয়। তারপরই তাঁদের ঘরে ফেরানোর তৎপরতা শুরু হয়।

হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখ বলেন, নাজিমুদ্দিন এ দেশেরই নাগরিক। তাঁর বৈধ নথি ও নাগরিকত্বের পরিচয়পত্র রয়েছে।

বিধায়ক নিয়ামত শেখ আরও বলেন, ‘তাঁর মতো আরও তিনজনকে বাংলাদেশি তকমা লাগিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় কেন্দ্রের বিএসএফ। গতকাল বিকেলে তাঁরা বিএসএফের হেফাজতে আসেন। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি তাঁরা ঘরে ফিরবেন।’

এ বিষয়ে মুর্শিদাবাদ পুলিশের তরফে গতকাল জানানো হয়, আটক ব্যক্তিদের কাগজপত্র রোববার বিএসএফের হাতে তুলে দেয় রাজ্য পুলিশ। এরপরে বিএসএফ যাবতীয় কাগজপত্র রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে যাচাইয়ের পরে তা বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিবি) হাতে তুলে দেয়।

এরপর বিএসএফ সবাইকে ফেরানোর ব্যবস্থা করে এবং কোচবিহার পুলিশের হাতে তুলে দেয়। মুর্শিদাবাদ ও বর্তমানের জেলা পুলিশের একটি দল ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনতে ইতিমধ্যে কোচবিহারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। আজ সোমবার তাঁদের নিজে নিজে জেলায় ফেরানো হবে বলে জানা গেছে।

চারজনের মধ্যে তিনজনই মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা হলেন হরিহরপাড়ার তরতিপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন মণ্ডল, ভগবানগোলার মহিষাস্থলি গ্রামপঞ্চায়েতের হোসেনপুর গ্রামের বাসিন্দা মেহবুব শেখ ও বেলডাঙার কাজিশাহার বাসিন্দা মিনারুল শেখ। অন্যজন পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর থানার কুলুট গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাফা কামাল।

বাঙালি বলে হেনস্তা পশ্চিমবঙ্গে

তবে শুধু দরিদ্র পরিযায়ী শ্রমিকই নন, পশ্চিমবঙ্গে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত অনেকেই সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন, তাঁদের অন্যভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে।

দিল্লির এক অধ্যাপিকা গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, গত কয়েক মাসে চারবার দক্ষিণ কলকাতার প্রধান পাসপোর্ট অফিসে গিয়েও তিনি তাঁর ২০০৭ সালের পুরোনো পাসপোর্ট নবায়ন করতে পারেননি।

এই অধ্যাপিকা বলেন, ‘আমাকে পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, এখানে প্রচুর বাংলাদেশি ঢুকেছেন বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। সে কারণে আমাদের যাঁদের প্রায় ২০ বছর ধরে বৈধ ভারতীয় পাসপোর্ট রয়েছে, তাঁদেরও সহজে পাসপোর্ট নবায়ন করা হচ্ছে না।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ