ঢাকার ক্রিকেট ক্লাবের চাওয়া ছিল গঠনতন্ত্র সংস্কার কমিটির আহ্বায়ক নাজমুল আবেদীন ফাহিমের পদত্যাগ। ক্লাবের দাবি মেনে তাঁকে আর পদত্যাগ করতে হচ্ছে না সংস্কার কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করায়। গতকাল পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেদিক থেকে দেখলে ক্লাব কর্মকর্তারা নিজেদের বিজয়ী দাবি করতেই পারেন। গঠনতন্ত্র সংস্কার কমিটির কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় ঢাকা প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ মাঠে গড়াতেও বাধা থাকছে না। বিসিবি পরিচালক মাহাবুবুল আনাম জানান, ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিশ (সিসিডিএম) শিগগির ক্লাবগুলোর সঙ্গে কথা বলে লিগের খেলা শুরু করবে। নৈতিকভাবে নিজেদের জয় হওয়ায় ক্লাবগুলোরও লিগ খেলতে আপত্তি নেই বলে জানা গেছে।
আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থাকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে ঢাকার ক্লাব ক্যাটেগরিতে পরিচালকের সংখ্যা ১২ থেকে কমিয়ে চারে নামানোর সুপারিশ করেছিল নাজমুল আবেদীন ফাহিমের কমিটি। বিষয়টি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় ৭৬টি ক্লাব একাট্টা হয়ে লিগ বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয়। ঢাকা প্রথম বিভাগ লিগও বয়কট করে ২০টি ক্লাব। ক্লাব প্রতিনিধিরা সভাপতি ফারুক আহমেদকে স্মারকলিপিসহকারে আলটিমেটাম দেন কয়েক দিন আগে। এক সপ্তাহ সময় নিয়ে সমাধানের পথ খোঁজার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সভাপতি ফারুক।
সে প্রেক্ষাপটে গতকাল বোর্ড সভায় গঠনতন্ত্র সংস্কার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এ ব্যাপারে বিসিবি সভাপতি মাহাবুবুল আনাম বলেন, ‘কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে পরিবর্তন, পরিবর্ধন করে কমিটি কার্যকর করা হবে। তারা সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেবেন।’ বিসিবি পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ ছাড়া বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওয়ার্কিং ও নিরাপত্তা কমিটি বাদে বাকি সব স্ট্যান্ডিং কমিটি বণ্টন করা হয়েছে পরিচালকদের মধ্যে।
ক্রিকেট অপারেশন্সই পেলেন ফাহিম
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে মনোনীত পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিমের চাওয়া ছিল ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদকে নিজের পছন্দের কথা জানিয়েও ছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর চাওয়া পূরণ হচ্ছিল না বোর্ড সভাপতি নিজের হাতে রেখেছিলেন বিভাগটি। এ নিয়ে সভাপতি ফারুক ও ফাহিমের বিবাদ প্রকাশ্যে রূপ নেয়। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় পর্যন্ত গড়ায় বিষয়টি। বিসিবির একজন কর্মকর্তা জানান, বিশেষ নির্দেশনায় ফাহিমকে শেষ পর্যন্ত ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান করা হয়। নারী বিভাগেরও চেয়ারম্যান তিনি। ফলে জাতীয় দল-সংক্রান্ত সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ফাহিমের। বাকি স্ট্যান্ডিং কমিটি ভাগাভাগিতে মাহাবুবুল আনাম গ্র্যান্ডসের পাশাপাশি টেন্ডার অ্যান্ড পারচেজ ও হাই পারফরম্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন।
ক্রিকেটের অবকাঠামোগত উন্নয়নে এ তিনটি বিভাগই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের সবচেয়ে অভিজ্ঞ পরিচালকের হাতেই পড়েছে কার্যকর দুটি বিভাগ। ইফতেখার রহমান মিঠুকে আম্পায়ার্স কমিটির পাশাপাশি মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আকরাম খানকে ফ্যাসিলিটি ম্যানেজমেন্ট, টুর্নামেন্ট কমিটি ও ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড বিভাগের চেয়ারম্যান। ফাহিম সিনহাকে ফিন্যান্স, লজিস্টিক অ্যান্ড প্রটোকল, গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। শৃঙ্খলা কমিটি ও এইজ গ্রুপ টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান সাইফুল আলম স্বপন চৌধুরী। মঞ্জুরুল আলম মেডিকেল এবং ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যান। মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে সিসিডিএমের পাশাপাশি অডিট কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে। কাজী ইনামকে বাংলাদেশ টাইগার্সেই রাখা হয়েছে। সভাপতি ফারুক নিজের হাতে রেখেছেন মার্কেটিং কমিটি।
বিপিএলের সমাধান ৪৮ ঘণ্টায়
পরিচালক মাহাবুবুল আনাম জানান, বিপিএলের সম্মানী নিয়ে এক-দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি যে গড়িমসি করছে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর সমাধান করা হবে। ক্রিকেটারদের বকেয়া পরিশোধে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। ভালো খবরের সঙ্গে একটি খারাপ খবরও আছে। অঙ্কুরেই শেষ নারী বিপিএল। মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান মিঠু বলেন, ‘তাড়াহুড়ো না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ এ ছাড়া চারজন ট্রেনিং কিউরেটর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নারী আম্পায়ার ও ম্যাচ অফিসিয়াল বেতনভুক্ত করা হয়েছে। আম্পায়ার্স বিভাগে বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে গ্রেডিং অনুযায়ী।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স স ক র কম ট র কম ট র ট কম ট
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বারের নির্বাচন চেয়ে আইনজীবী অধিকার পরিষদের চিঠি
ঢাকা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন চেয়ে চিঠি দিয়েছে আইনজীবী অধিকার পরিষদ ঢাকা বার ইউনিট।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলামের বরাবর এ চিঠি দেওয়া হয়। এসময় ঢাকার বার ইউনিটের আহবায়ক আইনজীবী মো. মমিনুল ইসলাম ও সদস্য সচিব আইনজীবী হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
চিঠির বিষয়ে আইনজীবী অধিকার পরিষদ বলছে, গত ৫ আগস্টে ফ্যাসিস্টদের বিদায়ের পর তাদের সমর্থিত আইনজীবীরা পালিয়ে যাওয়ায় এক ক্রান্তিলগ্নে অ্যাডহক কমিটি দায়িত্ব গ্রহণ করে। যদিও ঢাকা আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্রে এ ধরনের অ্যাডহক কমিটির বিধান নেই। তবুও ঢাকা বারের আইনজীবীরা বৃহত্তর স্বার্থে এ অ্যাডহক কমিটির কার্যক্রমের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করে। কমিটির দায়িত্ব ছিল গঠনতন্ত্র মোতাবেক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। পরবর্তীতে এক সাধারণ সভায় এ অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ গত ২৬ জানুয়ারি তিন মাস বাড়ানো হয়। নিয়ম অনুযায়ী এ কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার এক মাস আগে নির্বাচন কমিশন গঠন ও তফসিল গঠন করার কথা। তবে ২৮ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন গঠন ও তফসিল ঘোষণার শেষ দিন থাকলেও এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ঢাকা আইনজীবী সমিতির ৩২ হাজারের অধিক আইনজীবীর ভোটাধিকার প্রশ্নে কোনো ধরনের অগঠনতান্ত্রিক পদক্ষেপ বাংলাদেশ আইনজীবী অধিকার পরিষদ সমর্থন করবে না। ফ্যাসিবাদ বিরোধী সংগঠন হিসেবে আইনজীবীদের ভোটাধিকার প্রশ্নে আপোষহীন থাকবে। ঢাকা আইনজীবী সমিতির গঠনতন্ত্র মোতাবেক অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন গঠনে অ্যাডহক কমিটিকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানায় সংগঠনটি।
এ বিষয়ে ঢাকা বার ইউনিটের সদস্য সচিব আইনজীবী হাবিবুর রহমান বলেন, “নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা এখন চিঠি দিয়েছি। এ বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সাড়া না পেলে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। প্রয়োজনে আমরা আইনজীবী অধিকার পরিষদ কঠোর আন্দোলন করবো।”
ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, “অফিস থেকে জানানো হয়েছে, আমার বরাবর একটা চিঠি এসেছে। তবে এখনো চিঠি পড়া হয়নি। সাধারণ আইনজীবীরা সিদ্ধান্ত নিয়েই আমাদের দায়িত্ব দিয়েছে। সেই সময় শেষ হয়নি। সাধারণ আইনজীবীরা বসে সিদ্ধান্ত নেবে।”
ঢাকা/মামুন/ফিরোজ