নর্থ সাউথের ৫ ট্রাস্টিসহ ৯ জনের জামিন
Published: 30th, January 2025 GMT
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের জমি কেনা বাবদ অতিরিক্ত ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের পাঁচ ট্রাস্টিসহ নয় জন আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত -৪ এর বিচারক রবিউল আলম তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
যারা জামিন পেয়েছেন তারা হলেন- নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান ও আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো.
আসামিপক্ষের আইনজীবী আলহাজ মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, “মামলাটি বিশেষ জজ আদালত-১ এ চার্জ শুনানির জন্য ছিলো। মামলাটি বদলি হয়ে বিশেষ জজ আদালত -৪ এ পাঠানো হয়। চার্জ শুনানির পর্যায়ে রয়েছে মামলাটি। নতুন কোর্টে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত মঞ্জুন করেন। আমরা চার্জ শুনানি পেছানোর আবেদন করি। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ১২ মে শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন।”
গত ১২ মে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জমি কেনা বাবদ অতিরিক্ত ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।
মামলার এজাহারে বলা হয়, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে পাশ কাটিয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের কয়েকজন সদস্যের অনুমোদন বা সম্মতির মাধ্যমে ক্যাম্পাস উন্নয়নের নামে নামে ৯ হাজার ৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমাল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা বেশি দেখিয়ে তা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে তারা প্রথমে বিক্রেতাকে টাকা দেন। পরে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন। পরে নিজেরা এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।
মামলাটি তদন্ত করে ওই বছরের ২০ অক্টোবর ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, বোর্ডের চার সদস্য এম এ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান এবং আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো. হিলালীকে আসামি করা হয়।
তদন্তে আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, পরিচালক আনোয়ার বেগম ও সৈয়দ এ কে কামরুজ্জামানের নাম তদন্তে আসে।
ঢাকা/মামুন/ইভা
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
তাজউদ্দীন আহমদ দলমতের ঊর্ধ্বে একজন রাষ্ট্রনায়ক: শারমিন আহমদ
স্বাধীনতাযুদ্ধকে যখন শুধু আওয়ামী লীগিকরণ করা হচ্ছিল, তখন তাজউদ্দীন আহমদ সেটার বিরোধিতা করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন তাঁর কন্যা শারমিন আহমদ। তিনি বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ শুধু আওয়ামী লীগের নয়। উনি পুরো জাতির। তাজউদ্দীন আহমদ দলমতের ঊর্ধ্বে একজন রাষ্ট্রনায়ক।
আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘তাজউদ্দীন আহমদ স্মারক বক্তৃতা-২০২৫’ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শারমিন আহমদ। সেখানেই তিনি এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি নিয়ে কথা বলেন শারমিন আহমদ। তিনটি শর্তের ওপর ভিত্তি করে এই চুক্তি হয় বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, সে সময় তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ইন্দিরা গান্ধীকে বলেছিলেন, স্বীকৃতি বাদে বন্ধুত্ব হয় না। সেই স্বীকৃতি হতে হবে সমতার ভিত্তিতে। সে সময় তাজউদ্দীন আহমদ ভারতীয় সেনাবহিনীর একক কমান্ডে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, ‘না, এটি যৌথ কমান্ডের ভিত্তিতে হবে। এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ।’
আরও পড়ুনজন্মদিনে ডায়েরিতে যা লিখেছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ২৩ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনতাজউদ্দীন আহমদ দেশের স্বাধীনতার প্রধান পুরুষ২৮ জুলাই ২০২৫শারমিন আহমদ বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ প্রতিরোধ না করলে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের চুক্তিপত্রে লেখা থাকত ভারতের কাছে পাকিস্তান বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার যখনই মনে করবে, তখনই ভারতীয় বাহিনীকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে, এটিই ছিল তৃতীয় শর্ত বলে জানান শারমিন আহমদ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ওই শর্তের ভিত্তিতেই ভারতীয় বাহিনীকে প্রত্যাবর্তনের জন্য বলেন।
আরও পড়ুনতাজউদ্দীন আহমদ: রোজনামচার মানুষটিকে বোঝা২৩ জুলাই ২০২৫অনুষ্ঠানে হতাশা প্রকাশ করে শারমিন আহমদ বলেন, এসব ইতিহাস পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এসব ইতিহাস সংরক্ষণ করা হয়নি বলেই ভারতীয়রা এ দেশ স্বাধীন করেছে, এমন বয়ান তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, এটা খুব লজ্জার ব্যাপার। এই তথ্যগুলো নিয়ে ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করতে হবে। কেননা, গৌরবমণ্ডিত ইতিহাস সংরক্ষণ না করা হলে জাতি আরও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। স্মারক বক্তা ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। তাঁর বর্ক্তৃতার শিরোণাম ছিল ‘তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরি : ঐতিহাসিকতা ও রাজনৈতিকতা।’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান।