৮ স্থলবন্দর বন্ধ করতে চান নৌ উপদেষ্টা
Published: 6th, February 2025 GMT
আয় না থাকায় বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার আটটি স্থলবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরের কার শেডসহ বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন উপদেষ্টা। এদিকে বন্দরের কার শেড পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে শ্রমিক দলের বিক্ষোভের মুখে পড়েন নৌ পরিবহন উপদেষ্টা। বন্দরের সিসিটি ও এনসিটি ইয়ার্ডকে বেসরকারিকরণ না করার বিষয়ে তাঁর সঙ্গে বসতে চেয়েছিলেন শ্রমিক দলের নেতারা। পরে তিনি গাড়ি থেকে নেমে শ্রমিক নেতাদের কথা শোনেন।
নৌ পরিবহন উপদেষ্টা সাখাওয়াত হোসেন বলেন,‘আমি আটটি স্থল বন্দরকে শনাক্ত করেছি, যার একপাশে কোনো আমদানি নেই। ১০ বছর হয়ে গেছে, কিন্তু এক পয়সারও আমদানি নেই। আমরা রাজস্ব থেকে সেখানে খরচ করছি। এগুলো যাতে কিছু করা যায় বা বন্ধ করার কী প্রক্রিয়া হবে সেটা ফিরে গিয়ে শুরু করব।’ বন্দরগুলোতে কী লাভ হচ্ছে সেটা খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে একটি স্থলবন্দর করার কথা জানিয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘টেকনাফে আমাদের একটি বন্দর আছে মিয়ানমারের সাথে। ওখানে কিছু আমদানি হয়। সে জায়গাটি একটু দেখব। একইসঙ্গে ঘুমধুম নামে একটি জায়গা আছে। সেখানে আরাকান ও রাখাইনের সঙ্গে আমাদের ল্যান্ড কানেকশন। ভবিষ্যতের দিকে নজর রেখে দেখব যে, সেখানে একটি স্থলবন্দর করা যায় কিনা। আগামীতে মিয়ানমারের মধ্যে যা হোক না কেন, রাখাইন রাজ্যের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ছিল এবং থাকবে। যেহেতু রোহিঙ্গারা সেখানে থাকে। যদি দরকার হয় সেখানে একটি পোর্ট করব। টেকনাফ পোর্টটি আমরা স্থলবন্দর বললেও সেটা কিন্তু সেটা না। এটা হয়তো নৌবন্দরে পরিণত হবে।’
চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম কার্যক্রম দ্রুত করার জন্য কিছু আইনি পরিবর্তন আনা হচ্ছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন,‘কাস্টমসের নিলামের অগ্রগতি যথেষ্ট ভালো। বেশকিছু নিলাম তারা করেছে। কিছু প্রক্রিয়াধীন আছে। গতবার এসে যেগুলো সরাতে বলেছিলাম। আগামী রোববারের মধ্যে তারা সেগুলো সব সরিয়ে ফেলবেন। বেশকিছু আইনি পরিবর্তন আনতে হচ্ছে যাতে এসব জঞ্জাল বছরের পর বছর বন্দরে পড়ে না থাকে।’
শ্রমিক দলের বিক্ষোভের মুখে উপদেষ্টা: এদিকে সকালে চট্টগ্রাম বন্দরের কার শেড পরিদর্শন শেষে ফেরার পথে শ্রমিক দলের বিক্ষোভের মুখে পড়েন নৌ পরিবহন উপদেষ্টা। চট্টগ্রাম বন্দর জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়ক ইব্রাহিম খোকন সাংবাদিকদের বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি ও এনসিটি ইয়ার্ড দুটি তৈরি করা ইয়ার্ড। এ দুটি দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর আরও লাভজনক প্রতিষ্ঠান হতে পারে। পাশাপাশি বন্দরের নিজস্ব পরিচালনায় এ দুটি ইয়ার্ড থাকলে প্রায় চার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তাই আমরা এ দুটি ইয়ার্ডকে বেসরকারিকরণ না করার জন্য উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলাম। বন্দর চেয়ারম্যান বরাবর ৪ ফেব্রুয়ারি চিঠিও দিয়েছি। কিন্তু বন্দর কর্তৃপক্ষের কিছু কর্মকর্তার অসহযোগিতার কারণে আমরা আজ বাধ্য হয়ে বিক্ষোভ করছি।’
নৌপরিবহন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি যেহেতু নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি শ্রম মন্ত্রণালয়ও দেখি, সেহেতু তাদের কথাগুলো আমি শুনেছি। আমি তাদের সঙ্গে আরও গুরুত্ব দিয়ে কথা বলার জন্য চট্টগ্রাম আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। তাদের বলেছি, পরের বার আসলে আমি শুধু তাদের সঙ্গেই বসব।’
এ সময় চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়াল এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান ও সচিব ওমর ফারুক উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াসিম আকরামকে টপকে রেকর্ড স্টার্কের, ‘শেকড়’ গেড়েছেন রুট
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ৪৭ ওভারে ১৯৬/৪ (রুট ৬৮*, ক্রলি ৭৬, ব্রুক ৩১, স্টোকস ১৪* ; স্টার্ক ৩/৩৬, নেসের ১/৩৭, বোল্যান্ড ০/৩৭, ডগেট ০/৪৯)—দ্বিতীয় সেশন শেষে।
ব্রিসবেনে দিবা–রাত্রির টেস্টে আজ প্রথম দিনে প্রথম সেশনের শুরুতে ইংল্যান্ডকে একটু নড়বড়ে লেগেছে। ২.৩ ওভারে ৫ রানের মধ্যে দুটি উইকেট হারিয়েছিল তারা। জো রুট ও জ্যাক ক্রলি মিলে বিপর্যয় সামাল দিয়ে প্রথম সেশন পার করেন।
ওয়ানডে মেজাজে ৯৩ বলে ৭৬ রান করা ক্রলি দ্বিতীয় সেশনে আউট হলেও গ্যাবার বাইশ গজে রুটের ব্যাটে ‘শেকড়’ গজিয়েছে। ইনিংসে শুরুতে একটু নড়বড়ে লাগলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে জমাট ব্যাটিং করছেন রুট। দ্বিতীয় সেশনে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে নিজের ১০ম ফিফটি তুলে নেন।
প্রথম সেশন শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর ছিল ২৪ ওভারে ২ উইকেটে ৯৮। দ্বিতীয় সেশনে ২৩ ওভার ব্যাট করে ক্রলি ও হ্যারি ব্রুকের উইকেট হারিয়ে আরও ৯৮ রান যোগ করেছে ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় সেশন শেষে ইংল্যান্ডের স্কোর ৪৭ ওভারে ৪ উইকেটে ১৯৬ রান।
চতুর্থ উইকেটে ৬৯ বলে ৫৪ রানের জুটি গড়েন রুট ও ব্রুক। ৩৩ বলে ৩১ রান করা ব্রুক মিচেল স্টার্কের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। এই উইকেটটি নেওয়ায় টেস্টে বাঁহাতি পেসারদের মধ্যে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হলেন স্টার্ক। পাকিস্তান কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরামের ৪১৪ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড পেছনে ফেলে নতুন রেকর্ড গড়লেন অস্ট্রেলিয়ার বাঁহাতি পেসার—৪১৫ উইকেট।
১০৪ টেস্টে ১৮১ ইনিংসে বোলিং করে ৪১৪ উইকেট নিয়েছিলেন ওয়াসিম আকরাম। স্টার্ক ক্যারিয়ারের ১০২তম টেস্টে ১৯৫তম ইনিংসে উইকেটসংখ্যায় তাঁকে পেছনে ফেললেন।
দ্বিতীয় সেশনের খেলায় চতুর্থ ওভারের পঞ্চম বলে আউট হন ক্রলি। প্রায় তিন বছর পর টেস্ট খেলতে নামা অস্ট্রেলিয়ান পেসার মাইকেল নেসেরের বলে উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্যারিকে ক্যাচ দেন ক্রলি। ১০৮৯ দিনের মধ্যে টেস্টে এটাই প্রথম উইকেট নেসেরের।
ক্রলি যেভাবে ব্যাট করছিলেন, ক্রিজে এসে ব্রুকের শুরুটাও ঠিক সেভাবেই। অস্ট্রেলিয়ান পেসার ব্রেন্ডন ডগেটকে দুই চারে ৭ বলে তুলে ফেলেন ১১ রান। স্কুপ, পুল কিংবা টেনে মারতে দ্বিধা করেননি। ক্রিজে যতক্ষণ ছিলেন, প্রায় এই মেজাজেই ব্যাট করেন ব্রুক। মারার বল পেলে ছাড়েননি।
র্যাম্প শটও খেলেন ব্রুক। তবে ক্রিজে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি