রংপুরের পীরগঞ্জে মরিচখেত থেকে এক নারীর মাথাবিহীন ও রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চতরা ইউনিয়ন পরিষদের বড় বদনাপাড়া গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

উদ্ধারের পর ওই নারীর পরিচয় জানা যায়নি। এ সময় তাঁর পরনে লাল রঙের জামা ও পায়জামা ছিল। তাঁর বয়স ৩০ বলে ধারণা করছে পুলিশ।

পীরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম জানান, ওই নারীর গলা থেকে মাথার পুরো অংশ কেটে নেওয়া হয়েছে। আশপাশে কোথাও তাঁর মাথাটি পাওয়া যায়নি। রক্তাক্ত অবস্থায় লাশটি মরিচখেতে পড়েছিল। মাথাটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তবে লাশটির শরীরের অন্য কোথাও প্রাথমিকভাবে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের লাশটি জন্য রংপুর পাঠানো হচ্ছে। অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহটির পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

এ ঘটনার পরপর আজ দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার আসিফা আফরোজ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আজ ‘মানুষ জমাতে চাওয়া’ কবি হেলাল হাফিজের মৃত্যুবার্ষিকী

মাত্র তিনটি কবিতার বই লিখে যিনি বাঙালির হৃদয়ে তুমুল আলোড়ন তুলে দিতে পেরেছেন তিনি হেলাল হাফিজ। আজ এই কবির মৃত্যুদিন। ২০২৪ সালের ১৩ ডিসেম্বরে মারা যান হেলাল হাফিজ। ৭৬ বছর বয়সেও কবি ছিলেন নিঃসঙ্গ। একটি হোস্টেলে থাকতেন তিনি। 

জীবনের শেষ দিকে এসে অনুভব করেছিলেন, ‘‘কেউ পাশে থাকা অনেক দরকার’’। প্রেসক্লাবেই কেটে গেছে কবির জীবনের সোনালি সময়। একটি সাক্ষাৎকারে কবি বলেছিলেন, ‘‘সারা দিন প্রেসক্লাবে কতজন দেখা করতে আসে, এভাবে দিন কেটে যায়। প্রেসক্লাব আমার সেকেন্ড হোম নেই আর, ফার্স্ট হোম’’। দিন শেষ হলে রাতে হোটেলে ফিরতেন হেলাল হাফিজ। আর তখনই নাকি একজন সঙ্গীর অভাব খুব বোধ করতেন।  

আরো পড়ুন:

সিকদার আমিনুল হকের কবিতায় প্রেম ও নারী

রেজাউদ্দিন স্টালিনের কবিতা: দশক ছাড়িয়ে সমগ্রতার ঘণ্টাধ্বনি

কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। এর ১৭ বছর আগে তার কবিতা ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় ১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থানের সময় হেলাল হাফিজের লেখা ওই কবিতার প্রথম দুইটি লাইন ‘‘এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়; এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’’ রাজনৈতিক স্লোগানে পরিণত হয়। এখনো পর্যন্ত এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশিবার ব্যবহৃত রাজনৈতিক স্লোগান।
হেলাল হাফিজ একা জীবন কাটাতে গিয়ে এবং জীবিকা জোগাতে জুয়াতে মনোযোগ দিয়েছিলেন। তার জুয়ার ভাগ্য ছিলো সুপ্রসন্ন।  অনেক দিন পর্যন্ত এই জুয়াই ছিল হেলাল হাফিজের উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম। শহুরে জীবনে হেলাল হাফিজ এক সময় ‘জেগেলো’র জীবনও যাপন করেছেন। তাও নাকি কবিতার কারণেই। সমাজের ধনী নারীরা টাকার বিনিময়ে কবিকে ভাড়া নিতে পারতেন। এ সব বিষয়ে হেলাল হাফিজ ছিলেন বরাবর অকপট। 

তিনি এও বলেছিলেন যে, ‘‘ এই যে বোহেমিয়ান জীবন- আমার ক্ষেত্রে যা হয়েছে সেটা বাধ্যতামূলক। এইভাবে জীবনযাপনে আমি বাধ্য, আর কোনো উপায় ছিলো না আমার’’।

হেলাল হাফিজের জীবনে অনেক নারী এসেছেন। তাদের কেউ কেউ কবিতায় স্থান করে নিয়েছেন। কিন্তু হেলাল হাফিজ আমৃত্যু মার্তৃস্নেহের পিপাসায় কাতর ছিলেন। শৈশবে মাকে হারিয়েছিলেন, মায়ের স্মৃতিও মনে ছিলো না হেলাল হাফিজের।  এই ছিলো তার একমাত্র অপ্রাপ্তি। জীবনে টাকা পয়সা জমানোর ইচ্ছা কোনোদিনই ছিলো না তার, কিন্তু মানুষ জমাতে চেয়েছিলেন কবি। 

হেলাল হাফিজের কবি হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিলো মাতৃহীনতার বেদনা। সেই বেদনার প্রকাশই কবিকে বাংলা সাহিত্যের জগতে সমাদৃত করেছে। কবির কবিতায় অনেকে খুঁজে নিয়েছেন একান্ত আশ্রয়। 

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ