রংপুরের পীরগঞ্জে মরিচখেত থেকে এক নারীর মাথাবিহীন ও রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চতরা ইউনিয়ন পরিষদের বড় বদনাপাড়া গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

উদ্ধারের পর ওই নারীর পরিচয় জানা যায়নি। এ সময় তাঁর পরনে লাল রঙের জামা ও পায়জামা ছিল। তাঁর বয়স ৩০ বলে ধারণা করছে পুলিশ।

পীরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম জানান, ওই নারীর গলা থেকে মাথার পুরো অংশ কেটে নেওয়া হয়েছে। আশপাশে কোথাও তাঁর মাথাটি পাওয়া যায়নি। রক্তাক্ত অবস্থায় লাশটি মরিচখেতে পড়েছিল। মাথাটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তবে লাশটির শরীরের অন্য কোথাও প্রাথমিকভাবে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের লাশটি জন্য রংপুর পাঠানো হচ্ছে। অজ্ঞাতপরিচয় মরদেহটির পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

এ ঘটনার পরপর আজ দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার আসিফা আফরোজ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আমির বনাম সভাপতি: কক্সবাজার-৪ আসনে ‘হাইভোল্টেজ’ লড়াই 

কক্সবাজার-৪ (উখিয়া–টেকনাফ) আসনকে ঘিরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উত্তাপ এখন তুঙ্গে। মিয়ানমার সীমান্তঘেঁষা ও সাগর উপকূলের এ গুরুত্বপূর্ণ আসনে এবার মুখোমুখি হচ্ছেন দেশের দুই প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের স্থানীয় শীর্ষ দুই নেতা। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির এবং বিএনপির জেলা সভাপতি। ফলে নির্বাচনকে ঘিরে তৈরি হয়েছে ‘হাইভোল্টেজ’ পরিস্থিতি।

এ আসনে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক পালাবদলের অনন্য ইতিহাস রয়েছে। অতীতে যে দলের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন, কেন্দ্রীয় ক্ষমতাও গেছে তাদের হাতেই। উখিয়া–টেকনাফের এই সংবেদনশীল আসনে ১৯৭৯ সাল থেকে বিএনপির হয়ে নির্বাচন করছেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী। এবারও তিনি দলটির ঘোষিত সম্ভাব্য প্রার্থী। তবে তার মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে মাঠে সোচ্চার রয়েছেন জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহর নেতৃত্বাধীন আরেকটি অংশ।

অন্যদিকে, জামায়াত এবার আরো শক্ত অবস্থানে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামছে। দলটির জেলা আমির নূর আহমদ আনোয়ারীকে এ আসনে প্রার্থী করা হচ্ছে। তিনি টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চারবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। স্থানীয়ভাবে তার জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক প্রভাবের কারণে জামায়াত এবার আসনটি দখলে নেওয়ার ব্যাপারে বেশ আত্মবিশ্বাসী।

স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনের বিশ্লেষকদের মতে, রোহিঙ্গা ইস্যু, সীমান্ত নিরাপত্তা, মানবপাচার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ এসব প্রশ্নে ভোটারদের অবস্থান এবারের নির্বাচনে বড় ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের রায়ই লড়াইয়ের ফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে।

এরইমধ্যে মাঠ পর্যায়ে বিএনপি ও জামায়াতের সমর্থকরা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে সরব হয়ে উঠেছেন। দুই দলের নেতারাই নিজেদের বিজয় নিয়ে আশাবাদী।

বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘‘চারটি আসনের মধ্যে তিনটিতে দলীয় প্রার্থী নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রার্থীসহ নেতা-কর্মীরা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। আশা করি, অতীতের মতো এবারও ভোটাররা বিএনপিকেই বেছে নেবেন।’’

জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির নূর আহমদ আনোয়ারী বলেন, ‘‘নতুন বাংলাদেশ গড়তে আমাদের মূল অঙ্গীকার হবে গণমানুষের প্রত্যাশা পূরণ, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন এবং জবাবদিহিমূলক নেতৃত্ব নিশ্চিত করা। আমি নির্বাচনে জয়ী হয়ে এলাকার নিরাপত্তা জোরদার, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি এবং মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার সুযোগ চাই।’’

সব মিলিয়ে কক্সবাজার-৪ আসনে এবার দুই শীর্ষ নেতার মুখোমুখি লড়াইকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছে নজিরবিহীন উত্তাপ। নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই তীব্র হচ্ছে উখিয়া–টেকনাফের রাজনৈতিক হালচাল।

কক্সবাজার-৪ (উখিয়া–টেকনাফ) আসনে মোট ১১১টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। ভোটার রয়েছেন ৩৭ লাখ ৩ হাজার ১৩০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৯ লাখ ১২ হাজার ১০ জন, নারী ভোটার ১৮ লাখ ১৯ হাজার ১৫ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ৫ জন।

ঢাকা/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ